আড়াইহাজারের ১২ যুবক মিয়ানমারের কারাগারে ১ জনের মৃত্যু

দৈনিক তালাশ.কমঃমালয়েশিয়া নেওয়ার কথা বলে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের ১২ যুবককে মিয়ানমারের জেলখানায় বন্দি করে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে এক দালাল চক্রের বিরুদ্ধে। এদের মধ্যে জহিরুল ইসলাম নামে এক যুবক মৃত্যুবরণ করেছেন।বন্দিদের মুক্ত করার জন্য পরিবারের কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করছে ওই দালাল চক্রটি।এ বিষয়ে মঙ্গলবার (১১ জুলাই) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীর পরিবার।

পরিবারের সদস্যরা জানান,আড়াইহাজার মানিকপুর গ্রামের নাদিম মিয়া,চৈতনকান্দা গ্রামের বাসিন্দা রতন মিয়া, একই গ্রামের আহসান উল্লাহ,উলুকান্দি গ্রামের মনির হোসেন,বিশনন্দী গ্রামের সজীব মিয়া ও কবির হোসেন, শরিফপুর গ্রামের জুয়েল মিয়া,কড়ইতলা গ্রামের বিল্লাল হোসেন,বিশনন্দী পশ্চিমপাড়া গ্রামের সজীব হোসেন, চৈতনকান্দা গ্রামের সাফায়েত হোসেন ও সফিকুল ইসলাম এবং রফিকুল ইসলাম।

ভুক্তভোগীদের পরিবারের দাবি,দীর্ঘদিন ধরেই আড়াইহাজার উপজেলায় শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে এক আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্র ও তাদের স্থানীয় এজেন্টরা।আর মানবপাচারকারী এই চক্রের ভয়ঙ্কর ফাঁদে পা দিয়ে সর্বশান্ত হচ্ছেন গ্রামের অনেক যুবক। অনেকে আবারও প্রাণ হারাচ্ছেন।

ওই দালাল চক্রটি ফুসলিয়ে মালয়েশিয়া নেওয়ার কথা বলে আড়াইহাজার থেকে অনেক তরুণ ও যুবকদের মায়ানমারে নিয়ে বন্দি করে রাখে। মুক্তিপণ না দিলে সেই তরুণদের ভাগ্যে ঘটছে নির্মম পরিণতি।

এরই মধ্যে আড়াইহাজারের কড়ইতলা, রামচন্দদী, মানিকপুর, চৈতনকান্দা,দয়াকান্দা,টেটিয়া ও শম্ভুপুরা থেকে অনেক যুবককে এভাবে পাচার করা হয়েছে। মালয়েশিয়ার জিম্মি দশায় থাকা অবস্থায় দালালচক্রের নির্যাতনে নিহত হন জহিরুল ইসলাম নামের এক যুবক।

এসব ঘটনায় আড়াইহাজার থানা পুলিশ আবুল হোসেন নামের দালাল চক্রের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করে।

মিয়ানমারে আটক বিল্লাল হোসেনের মা সেলিনা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান,আমার ছেলেকে মিয়ানমারের জেলখানায় আটকে রেখে অনেক নির্যাতন করা হচ্ছে এবং আমাকে ফোন করে মুক্তিপণের জন্য মোটা অংকের টাকা দাবি করছে ওই দালাল চক্র। আমি টাকা দিতে পারিনি বলে আমার ছেলেকে মুক্ত করে আনতে পারছি না।আমি আমার ছেলের মুক্তি চাই।

অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা ওকাপ নামের এক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান,আমরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিখোঁজ ও জিম্মি ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি করেছি।

তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে ওকাপ-এর পক্ষ থেকে যা যা করা দরকার আমরা করব।

আড়াইহাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইশতিয়াক আহাম্মেদ জানান,আমি জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সঙ্গে আলাপ করে তাঁর পরামর্শ মোতাবেক এবং প্রয়োজনে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

এ বিষয়ে আড়াইহাজার থানার অফিসার্স ইনচার্জ ইমদাদুল ইসলাম তৈয়ব আমার নারায়ণগঞ্জকে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।ওসি জানান, মানবপাচার করার অভিযোগে গতমাসে আবুল হোসেন নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করে মামলা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে মামলাটি সিআইডি তদন্ত করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *