দৈনিক তালাশ.কমঃ গত ২৬/০৬/২০২৩ তারিখ রাত অনুমান ০৯.৪৫ ঘটিকার সময় সাভার মডেল থানাধীন সাদাপুর গ্রাম থেকে স্থানীয় লোকজন জানায় যে,সাভার মডেল থানাধীন সাদাপুর ভাঙ্গা ব্রীজের পাশে জণৈক আক্কাস আলীর বাড়ীতে একজন পুরুষ লোকের গলা কাটা লাশ পড়ে আছে। বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করিলে অফিসার ইনচার্জ সাভার মডেল থানা,এসআই (নিরস্ত্র) মোঃ মোখলেছুর রহমান সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা করেন। ঘটনাস্থলে পৌছে দেখতে পান যে, একজন পুরুষ ব্যক্তির গলা কাটা ও মাথায় আঘাত প্রাপ্ত লাশ পড়ে আছে।কিছু সময় পড়ে তাহার স্ত্রী ইতি বেগম রানী (৩৫), পিতা-মৃত আজমত আলী মিয়া, সাং-কান্দিলা, ইউনিয়ন-শিবপুর, থানা-টাঙ্গাইল সদর, জেলা-টাঙ্গাইল, বর্তমান ঠিকানা-সাদাপুর সাকিনস্থ জনৈক আক্কাস আলীর বাড়ী, থানা-সাভার, জেলা-ঢাকা জানায় যে, ইহা তাহার স্বামীর লাশ তাহার স্বামী নুর ইসলাম বেপারী (৫৫), পিতা-নেহাজ উদ্দিন বেপারী, স্থায়ী সাং-কুঠিরচর, ইউপি-সোয়াপুর, থানা-ধামরাই, জেলা-ঢাকা, বর্তমান ঠিকানা-জনৈক আক্কাস আলীর বাড়ি, সাদাপুর, থানা-সাভার, জেলা-ঢাকা এর লাশ। মৃত নুর ইসলাম বেপারী এর স্ত্রী জানান যে, তিনি সাভার মডেল থানাধীন হেমায়েতপুরস্থ সেন্ট্রাল হাসপাতালে আয়ার কাজ করেন এবং ইং-২৬/০৬/২০২৩ তারিখ সকাল অনুমান ০৮.০০ ঘটিকার সময় সাভার মডেল থানাধীন হেমায়েতপুরস্থ সেন্ট্রাল হাসপাতালে যান এবং উক্ত হাসপাতালে আয়ার কাজ শেষে ইং-২৬/০৬/২০২৩ তারিখ রাত্র অনুমান ০৯.৩০ ঘটিকার সময় বাসায় এসে তাহার স্বামীর রক্তাক্ত লাশ দেখিতে পাইয়া ডাক-চিৎকার করিয়া আশ-পাশের লোকজনদের ডাকিয়া আনেন। উক্ত ঘটনায় এসআই (নিরস্ত্র) মোঃ মোখলেছুর রহমান লাশের সুরতহাল রির্পোট প্রস্তুত করিয়া লাশের ময়না তদন্তের জন্য লাশ ঢাকাস্থ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেন এবং ঘটনাস্থলে থাকা রক্ত ও রক্তমিশ্রিত পানিসহ পানির ড্রাম জব্দ করেন। পরবর্তীতে মৃতের ১ম স্ত্রীর বড় ছেলে আলিম বেপারী (৩০), পিতা-মৃত নুর ইসলাম বেপারী, মাতা-শরীফুন, স্থায়ী সাং-কুটিরচর, ইউপি-সোয়াপুর, থানা-ধামরাই, জেলা-ঢাকা,বর্তমান ঠিকানা-কুরগাও বালুরমাঠ, ব্র্যাক অফিসের পাশে, থানা-আশুলিয়া, জেলা-ঢাকা বাদী হইয়া সাভার মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করিলে সাভার মডেল থানার মামলা নং-৯০, তাং-২৭/০৬/২০২৩, ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড রুজু করিয়া এসআই (নিরস্ত্র) মোঃ মোখলেছুর রহমানকে তদন্তভার অর্পন করা হয়। ঢাকা জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার মহোদয়ের দিকনির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক্রাইম, অপস্ ও ট্রাফ্রিক (উত্তর), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, (সাভার সার্কেল) এবং অফিসার ইনচার্জ, সাভার মডেল থানার নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই (নিরস্ত্র) মোঃ মোখলেছুর রহমান ঘটনায় জড়িত সন্ধিগ্ধ মৃতের স্ত্রী ইতি বেগম রানী ও তাহার পরকিয়া প্রেমিক মোঃ আব্বাস (৫০), পিতা-মৃত রহমত আলী, সাং-সাদাপুর পুরানবাড়ী, থানা-সাভার, জেলা-ঢাকা ঘটনার সহিত জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার পূর্বক ইং-২৮/০৬/২০২৩ তারিখ রাত অনুমান ০২.০৫ ঘটিকায় গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসেন। উক্ত আসামীদ্বয়কে ব্যাপক ও নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদে তাহারা খুনের ঘটনায় সরাসরি জড়িত আছে মর্মে জানায়। গত ইং-২৮/০৬/২০২৩ তারিখ আসামী ইতি রানী বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে, অপর আসামী আব্বাস আলীকে রিমান্ড চেয়ে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরন করিলে বিজ্ঞ আদালত ০৩ দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।তাহাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর ঘটনার ব্যাপারে স্বীকার করে এবং তাহার দেখানো মতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা বটি দা ও তালা জব্দ করা হয়। ইং-০২/০৭/২০২৩ তারিখ আসামী আব্বাস আলী বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি করেন। তদন্তকালে জানা যায় যে, আসামীদ্বয় এক থেকে দেড় বছর পূর্ব হইতে পরকিয়া প্রেম করিয়া আসিতেছে। একাধিকবার বিভিন্ন স্থানে তাহাদের মধ্যে শারীরিক সর্ম্পক স্থাপন হইয়াছে। মৃত নুর ইসলাম বেপারী (৫৫) শারীরিকভাবে অসুস্থ্য ছিলেন। তিনি তাহার স্ত্রীর পরকিয়া প্রেম সম্পর্কের কথা জানতে পেরে স্ত্রীকে বাধা নিষেধ প্রদান করেন এবং স্থানীয় লোকজনদের জানান।ফলে বর্নিত আসামীদ্বয় ডিজিস্ট নুর ইসলাম এর উপর ক্ষিপ্ত হয় এবং পরকিয়া সম্পর্ক চালিয়ে যেতে থাকে।এরই ধারাবাহিকতায় উক্ত আসামীদ্বয় ক্ষিপ্ত হইয়া পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ইং-২৬/০৬/২০২৩ তারিখ রাত অনুমান ০৯.০০ ঘটিকায় ঘটনাস্থল সময় সাভার মডেল থানাধীন সাদাপুর ভাংগা ব্রীজ এর পাশে জনৈক আক্কাস আলীর বাউন্ডারী করা বাড়ীর সামনে নুর ইসলাম বেপারী (৫৫) কে পাইয়া প্রথমে তালা দিয়া মাথায় আঘাত করে এবং পরবর্তীতে আসামীদ্বয় একে অপরের সহযোগিতায় নুর ইসলাম এর দেহ টেনে হিচড়ে ঘরের ভিতর নিয়া মেঝেতে শোয়াইয়া ঘরে থাকা বটি দিয়ে মাথা ও মুখমন্ডলে এলোপাথারি আঘাত করে এবং গলা জবাই করে মৃত্যু নিশ্চিত করে।আসামী আব্বাস আলী দ্রুত ঘটনাস্থল হইতে পালিয়ে যায় এবং ডিজিস্ট এর স্ত্রী ইতি বেগম রানী ডাক-চিৎকার করিয়া স্থানীয় লোকজনদের জানান যে,তিনি কর্মস্থল হইতে আসিয়া তাহার স্বামীর মৃত দেহ রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাহার স্বামীকে খুন করিয়া পালিয়ে যায় মর্মে জানায়।তদন্তকালে আরো জানা যায় যে, মৃত নুর ইসলাম বেপারীর স্ত্রী তাকে বিভিন্ন সময় রাতে ঘুমের ট্যাবলেট খাওয়াইয়া পরকিয়া প্রেমিক আব্বাস এর সহিত অনৈতিক কাজে লিপ্ত হইতো।এই বিষয়টি জানার পর বাধা দেওয়ায় তাকে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়।