চিতাশালে দাঁত ভাঙা সেলিম ও হাসানের নেতৃত্বে প্রকাশ্যে চলছে জুয়ার,নীরব পুলিশ

দৈনিক তালাশ.কমঃসদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়ন এর চিতাশাল এলাকায় চলছে অবাধে জমজমাট জুয়ার আসর। কথিত যুবলীগ নেতা দাঁত ভাঙা সেলিম ও চায়ের দোকানদার হাসানের নেতৃত্বে অনৈতিকতার জুয়া বোর্ড পরিচালনা করছে এলাকার একটি শক্তিশালী সিণ্ডিকেট। এখানে সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে জুয়াড়িরা খেলায় দিন-রাত বুদ হওয়ায় প্রতিদিন হাত বদল হচ্ছে লাখ লাখ টাকা। জুয়ার আসরে খেলার পাশাপাশি আশেপাশে চলছে ভয়ানক মাদক সেবন।

দেলপাড়া চিতাশালের ঢালে হাসানের চায়ের দোকান ও পাশের একটি পরিত্যক্ত জায়গায় দীর্ঘ দিন থেকে দিন-রাত রমরমা জুয়া ও মাদকের আসর চললেও এটি বন্ধে কারও কোনো ভূমিকা লক্ষ করা যায়নি। তবে অভিযোগ রয়েছে, একটা মহলকে ম্যানেজ করেই চালাচ্ছে এ অনৈতিক কর্মকাণ্ড। স্থানীয় সূত্র জানায়, চিতাশাল ঢালে দাঁত ভাঙা সেলিমের গ্রীলের দোকানের উল্টো পাশে দীর্ঘদিন যাবত হাসান একটি চায়ের দোকান করেন। তারপর থেকেই ওই দোকানে লুডু খেলার নামে চলে আসছে অবাধ জুয়া আসর।
কখনো কখনো ক্রিকেট ম্যাচ ও মোবাইলের বিভিন্ন খেলা দিয়েও চলছে জুয়ার আসর। শুধু তা-ই নয়, প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে তার চায়ের দোকানের পাশে একটি পরিত্যক্ত খালি জায়গায় গড়ে তুলেছেন বিশাল জুয়া ও মাদকের আসর। দলীয় কোন পদপদবী না থাকলেও যুবলীগ নামধারী নেতা দাঁত ভাঙা সেলিমের নেতৃত্বে চা হাসানের পরিচালনায় কয়েক বছর ধরে প্রকাশ্যই চলছে মাদক ও জুয়ার বোর্ড। এলাকার উঠতি যুবক, আলোচিত জুয়াড়িরা এখানে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে আসা জুয়াড়িরা এখানে লাখ লাখ টাকার হাত বদল করছে এবং প্রতিদিন এ চক্রের ফাঁদে পড়ে অনেকেই টাকা খুইয়ে হচ্ছেন নিঃস্ব। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকা সংঘবদ্ধ চক্র ও কয়েকজন পুলিশের সোর্স মিলে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চালাচ্ছে নিষিদ্ধ জুয়ার আসর।
এ জুয়াকে কেন্দ্র করে স্পটে নেশা গ্রহণ সমান তালে চলায় জুয়া ও মাদকের মোহে পড়ে অনেকে বসছেন পথে। চলমান জুয়া ও মাদকের আসর নিয়ে এ এলাকার অভিভাবক ও তাদের পরিবার উদ্ধিগ্ন হয়ে পড়েছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, জুয়া আসরকে ঘিরে বিভিন্ন মাদকের সহজ প্রাপ্যতা হওয়ায় দিন দিন এলাকার উঠতি যুবক ও ছাত্র সমাজ মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। কোনো অবস্থাতেই তাদের সন্তানদের এই মরণ নেশার থেকে দূরে রাখতে পারছে না। অনেক সময় অধিকাংশ পরিবারে বিরাজ করছে অশান্তি। পরিবার থেকে অর্থ না পাওয়ায় জুয়া বোর্ডের দিকে ঝুঁকছে আর জুয়াড়িদের নির্বিঘ্নে খেলায় সহযোগিতা করতে বোর্ড পরিচালনাকারী চক্র এদেরকে ব্যবহার করছে। বিভিন্ন খাবার,মাদক সরবরাহ, জুয়াড়িদের নির্দিষ্ট আসরে পৌঁচ্ছে দেওয়া,পাহারাদার হিসাবে দিন-রাত বসিয়ে রাখা হচ্ছে।
যুবকদের দিন শেষে হাতে কিছু টাকা ধরিয়ে দিচ্ছে। আর এই টাকা দিয়েই অনেকে নেশা করছে। মাঝে মাঝে এলাকায় কিছু ছোট-বড় চুরির ঘটনাও ঘটছে, বর্তমানে জুয়া আসরের সাথে মাদকের ভয়াবহতাও বৃদ্ধি পেয়েছে অতিরিক্ত হাড়ে। জুয়া ও মাদকের আসরকে ঘিরে এলাকার অভিভাবক তাদের সন্তান ও পরিবেশ নিয়ে বেশ চিন্তিত। সব কিছু জানা সত্ত্বেও অহেতুক বিপদে পড়ার ঝামেলা এড়াতে নীরবতা পালন করে চলেছে তারা। নাম প্রকাশ্যে অনইচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, বছরের পর বছর এভাবে প্রকাশ্যে লাখ লাখ টাকার জুয়ার বোর্ড কিভাবে পরিচালনা করে তারা। থানা পুলিশ কি করে? আর এই বিষয়টি সবাই কমবেশি অবগত রয়েছে।
রাজনৈতিক ব্যক্তি ও জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, পুলিশ সবাই অবগত থাকার পরেও কিভাবে এই ধরনের অপরাধ করতে পারে আমার মাথায় আসে না। কারণ প্রতিনিয়ত এখান থেকে মাসোহারা নেন অনেকেই। তার কারণেই কি তাদের অপরাধ থামানো অসম্ভব হয়ে গেছে। তিনি আরো জানান,আমাদের চিতাশাল এলাকাবাসীকে ভয়ানক মাদক ও জুয়ার হাত থেকে মুক্তি দিতে,যারা এইসব অপরাধের নেতৃত্ব ও পরিচালনা করে তাদেরকে অচিরেই গ্রেপ্তারের দাবী জানান। পাশাপাশি চিতাশাল এলাকার অপরাধ নির্মূলে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মহোদয়ের হস্তক্ষেপ কমনা করেন।এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি নুরে আযম জানান, বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। খোঁজ নিয়ে জুয়া ও মাদকের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জুয়া ও মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশ সব সময় বেশি সোচ্চার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *