বন্দরে এতিমদের জন্য ভবন নির্মাণ কাজের উদ্বোধনকালে এমপি:সেলিম ওসমান

দৈনিক তালাশ.কমঃনারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমানের ঘোষিত ফার্মের গরু বিক্রির টাকায় নবীগঞ্জ ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসায় এতিমদের জন্য ৬তলা ফাউন্ডেশনে ৩তলা ভবনের নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্থর উদ্বোধন করা হয়েছে। বুধবার (২৬ জুলাই) বেলা ১১টায় বন্দর নবীগঞ্জ ঈদগাহ মাঠে এমপি সেলিম ওসমানের ব্যক্তিগত অর্থায়নে নবীগঞ্জ ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসায় এতিমখানার জন্য নতুন ভবন নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তরের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমপি সেলিম ওসমান বলেন, এটা মাদ্রাসা ভবন নয়। এটা এতিমখানার জন্য করা হয়েছে। যাদের মা বাবা কেউ নেই এমন মানুষের এগিয়ে যেতে কারো না কারো সহযোগীতার প্রয়োজন হয়। সেই সকল মানুষদের ভবিষ্যত গড়ে দেওয়ার লক্ষ্যেই আমার এই উদ্যোগ। এ বছর আমি সাড়ে ৪ কোটি টাকার গরু বিক্রি করেছি। ভবন নির্মাণের জন্য ইঞ্জিনিয়ার ২ কোটি ৫০ লাখ টাকার বাজেট দিয়েছেন। বাকি ২ কোটি টাকাও আমি এখানেই ব্যয় করবো। এর মধ্যে আমি ১ কোটি টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করে দিবো। যাতে করে এই ডিপোজিটের আয় দিয়ে এতিমখানাটি পরিচালনা করা যেতে পারে। আমি সকলের সহযোগীতা চাই। আগামী ৪ বছরে ৬০জন এতিমকে সমাজের উচু স্তরে দেখতে চাই। এটা নিয়ে কেউ রাজনীতি করবেননা।

বিএনপির নেতৃবৃন্দদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমি কোন দল বুঝিনা। আমি সবাইকে নিয়ে কাজ করি। ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য কাজ করি। এখানে কোন রাজনীতি নেই। কেউ রাজনীতি করতে হলে, মানবন্ধন করতে হলে আন্দোলন করতে হলে ঢাকায় গিয়ে করবেন। সমাবেশ করতে হলে তিন আগেই ঢাকায় চলে যান। প্রয়োজনে আন্ডারগ্রাউন্ড হয়ে যান। তবুও কেউ আমাকে ফোন দিবেন না ভাই পুলিশ আমাদের ধরতে আসছে। পুলিশ তো ধরবেই। আমার বাবা দাদাও রাজনীতি করেছে তারাও বছরের বেশির ভাগ সময় আন্ডার গ্রাউন্ডেই ছিলো।
হাজীগঞ্জ-নবীগঞ্জ ফেরী ঘাটের ফেরীর ইজাদারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনি মানুষকে সেবা দেওয়ার জন্য টেন্ডার নিয়েছেন। মানুষকে সেবা না দিতে পারলে ঘাট ছেড়ে দেন। মানুষকে কষ্ট দিবেন না। ঘাটে ২টা ফেরী সব সময় চলার কথা। কিন্তু আপনারা ১টা ফেরী চালান আর দুই পাড়ের মানুষকে কষ্ট দেন। কেন ১ টা ফেরী চালান মনে করেছেন আমি বুঝিনা? ১টা ফেরীর তেলের খরচ বাচান। আপনি ২টা ফেরী চালানোর চুক্তিতেই টেন্ডার নিয়েছেন অতএব আপনাকে দুইটা ফেরীই চালাতে হবে। জনগনকে ঠিকমত সেবা না দিতে পারলে ঘাট ছেড়ে দিবেন।
বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার উদ্দেশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমি বন্দরে আসি যাই কোনদিন আমি অন্য এমপিদের মত নিরাপত্তা চাইনা। আমার গাড়ির আগে পিছে আমি পুলিশের গাড়ি রাখি না। আজকে এখানে একটি মহৎ কাজের উদ্বোধন হবে। প্রায় ৫ হাজার মানুষ হয়েছে এখানে নিরাপত্তা দেওয়া পুলিশের দায়িত্ব। আজকে ওনি আমাকে ফোন করে বলেন ওনার একটি মিটিংয়ে যেতে হবে। ক্রাইম সভার মিটিং। ওনার পরিবর্তে আরেকজন এসে মঞ্চে চেয়ার দখল করে বসে আছেন। অথচ নবীগঞ্জ ঘাট থেকে আমার নেতাকর্মীরা আমাকে নিয়ে এসেছে। সেখানে আমি একটি পুলিশের সদস্যও দেখি নাই। আমি ওসির কাছে প্রশ্ন রেখে গেলাম এতো বড় আয়োজন ফেলে ওই মিটিংয়ে না গেলে কি হতো? সারা বাংলাদেশের ক্রাইম কি আপনি একাই শেষ করে দিয়েছেন নাকি আজকে।
আগামী সংসদ নির্বাচনে নিজের প্রার্থী হওয়া নিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচন এখনো অনেক দেরী। নির্বাচন করা আমি সেলিম ওসমানের জন্য বড় ব্যাপার না। যতদিন আমার দম চলবে আমি জনগনের গোলামী করে যেতে চাই। ভাল কাজ করতে পারলে আপনারাই আমাকে নির্বাচন করতে বলবেন। আপনার মতমত নিয়েই আমি নির্বাচন করবো। বড় বড় কথা নয়। বড় বড় কাজ করতে হবে। ছোট ছোট কাজ গুলোই এক সময় বড় হয়ে উঠে। তাই আমি নির্বাচন নিয়ে এখনোই ভাবছিনা। এই বন্দর কে আমি সাজাতে চাই। এই বন্দরের শান্তিরচরে নীটপল্লী হবে। লাঙ্গলবন্দে মেগাপ্রকল্প হবে। এই বন্দর উপজেলা হবে সারা বাংলাদেশের মধ্যে সব থেকে বেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী উপজেলা। তবে আমাদের এই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে হলে আগামী আবারো বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আবারো ক্ষমতায় আনতে হবে।
নবীগঞ্জ ইসলামিয়া আলিয়া মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি আফজাল হোসেনের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বন্দর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম. এ রশিদ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বন্দর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা কুদরত-এ-খোদা বন্দর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল, বন্দর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান সানা উল্লাহ সানু, বন্দর থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক কাজিম উদ্দিন প্রধান, ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল কায়সার আশা প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *