ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পরও নয় মাস,এখন পর্যন্ত কোন চারশিট দিল না,এস আই

দৈনিক তালাশ.কমঃইয়াছিন আলী ইমন কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ

কুড়িগ্রাম সদরের ভেলাখোপা এলাকায় আলোচিত মাইশা হত্যার,ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পরও নয় মাস হলো,এখন পর্যন্ত কোন চারশিট দিল না এস আই।মাইশার মা-বাবা বলেন,আমার মেয়ের কি বিচার পাব না।মাইশার মা বলেন,আমার বাবা একজন বির মুক্তিযোদ্ধা,কত কষ্ট করে এই দেশ স্বাধীন করছে।মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে হয়েও কি আমি এই দেশে আমার মেয়ের বিচার পাব না।মাইশার মা-বাবা বলেন আমরা কয়েক দিন পর পর এস আই কে ফোন দেই,এস আই বলেন কযেক দিনের মধ্যে কাগজ আদালতে জমা দিব।এই রকম করে বলতে বলতে নয় প্রায় এক বছর হয়ে গেল।এক বছরেও মাইশাকে ভুলতে পারেনি তার এলাকাবাসী,মাইশার এলাকাবাসী বলেন এই দেশে কি ন্যায় বিচার পাবে না মানুষ,গরিব বলে কি মানুষ বিচার পাবে না। আমরা রূপনগর থানায় মামলা করছি,০৫-১২-২০২২ তারিখে।ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দিছে ১৮-০১-২০২৩ তারিখে,কিন্তু পুলিশ এখন পর্যন্ত কোন চারশিট দিল না।এই বিষয় নিয়ে রূপনগর থানার অফিসার ইনচার্জ নয়ন দাস বলেন,আমি সব কাগজ রেড়ি করছি,কিন্তুু সিনিয়র স্যাররা আমাকে বলছে এখন আদালতে দিয়া যাবে না,স্যাররা যদি আমাকে এই ভাবে বলেন,তাহলে আমি তো দিতে পারব না।আর একটা কথা আমি রুপনগর থানা থেকে বদলি হইছি।আঙুল অপারেশনে শিশুর মৃত্যু, গোসলের সময় দেখা গেল তলপেটে পুরো ২০ টা সেলাই করা।

কুড়িগ্রামের ৫ বছরের ছোট্ট শিশু মাইশা। মাইশার বয়স যখন ৯ মাস তখন চুলার আগুনে পুড়ে যায় তার ডান হাতের আঙুল। ওই সময় রংপুরে চিকিৎসা করে হাতের ক্ষত ভালো হলেও কুঁকড়ে যায় মাইশার ডান হাতের তিন আঙুল।কিছু দিন আগে রাজধানী ঢাকার মিরপুরে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের ডাক্তার মো. আহসান হাবীবের শরণাপন্ন হন মাইশার বাবা মোজাফফর আলী। তিনি জানতে পারেন ভালো চিকিৎসা নিলেই মেয়ের হাত ভালো হবে। চিকিৎসকও বলেছেন, ‘অপারেশন করলে স্বাভাবিক হবে।চিকিৎসকের কথা অনুযায়ী গত বুধবার (৩০ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর মিরপুরের রূপনগরে আলম মেমোরিয়াল হাসপাতালে হাতের অপারেশন হয় মাইশার। অস্ত্রোপচারের ঘরে ঘণ্টা দেড়েক রাখার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ‘ মাইশার অবস্থা অনেক খারাপ। তাকে আইসিইউ সাপোর্ট দেয়ার জন্য গ্লোবাল স্পেশালাইজড হাসপাতালে নিতে হবে,আমাদের হাসপাতালে আইসিইড নেই,আবারও চিকিৎসকের কথা অনুযায়ী হতবিহ্বল বাবা-মা ছোট্ট মেয়েটিকে নিয়ে চলে যান মিরপুর-১ মাজার রোডের সেই হাসপাতালে। সেখানে নেয়ার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায় মারা গেছে মাইশা।কিন্তুু কিভাবে মারা গেছে তাদের মেয়ে, বিষয়টি বুঝে ওঠার আগেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অপারেশনের জন্য নেয়া টাকা ফিরিয়ে দেয় মাইশার বাবা-মাকে। লাশ বাড়িতে আনতে ঠিক করে দেয় অ্যাম্বুলেন্সও।হাসপাতালে মাইশার মা কান্না কাটি করলে,ওরা বলে এই খানে কান্না কাটি করলে কিন্তুু বাচ্চাকে আর পাবেন না আপনারা,আরও অনেক হুমকি দেয় আমাদের। বাড়ি ফিরে যখন ছোট্ট মাইশাকে দাফনের জন্য গোসল করানো হবে, তখন গোসল করানো নারীরা দেখতে পান মাইশার নাভির নিচে পেটজুড়ে কেটে সেলাই করা। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় নানা গুঞ্জন।এসময় স্বজনরা পুলিশে খবর দেন। কিন্তু স্থানীয় পুলিশ ঢাকায় অপারেশন হওয়ায় সংশ্লিষ্ট থানায় মামলার পরামর্শ দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে নিরুপায় স্বজনরা শিশুটিকে বাড়ির আঙিনায় দাফন করেন।
কুড়িগ্রাম পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ভেলাকোপা ব্যাপারী পাড়ার মোজাফফর আলী ও বেলি আক্তার দম্পতির মেয়ে মারুফা জাহান মাইশা। নানা ওসমান গণি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) ভুক্তভোগীর বাড়িতে গিয়ে এসব তথ্য জানা গেছে।
এই বিষয়ে মাইশার বাবা বলেন, ‘মেয়ের হাতের আঙুল ঠিক করার জন্য ঢাকার মিরপুরে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের ডা. আহসান হাবীবের কাছে যাই। তিনি সবকিছু দেখে বলেন, বুধবার (৩০ নভেম্বর) সকালে অপারেশন করা হবে। রূপনগরে আলম মেমোরিয়াল মেডিক্যালে তার শেয়ার আছে জানিয়ে বলেন, সেখানে অপারেশন করালে খরচ কম লাগবে। বুধবার সেখানে হাতের অপারেশন করার সময় মেয়ে মারা যায়। পরে তারা আমাদের টাকা ফেরত দিয়ে ধমকিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। বাড়িতে এসে মেয়েকে গোসল করার সময় স্থানীয় মহিলারা দেখেন, মেয়ের তলপেটের পুরো অংশ সেলাই করা।দিনমজুর মোজাফফর বলেন, ‘আমরা এটা দেখে নিরুপায় হয়ে পড়ি। আমরা গরিব মানুষ। কিছু বুঝি না। হাত অপারেশন করাতে গিয়ে তারা কেন আমার মেয়ের পেট কাটলো তা জানি না। আমাদের কোনও কাগজপত্রও দেওয়া হয়নি,কাগজ চাওযায় আমাকে অনেক জনে হুমকি দেয়।মাইশাকে গোসল করানো মফিজা খাতুন বলেন, ‘মেয়ের হাতের আঙুল কাটা ছিল। পরে গোসলের সময় দেখতে পাই ওর নিচ পেটের পুরো অংশ কেটে সেলাই করা। পরে সবাইকে জানাই।মাইশার মা বেলি বলেন, ‘আমি কী ভুল করলাম! কেন মেয়েকে নিয়ে গেলাম। ওরা ডাক্তার না, কসাই। আমার মেয়ের পেট কাটলো কেন? ওরা আমার মেয়েকে মেরে ফেলছে। আমি এর বিচার চাই। আমি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর বিচার চাই।পরিবারের পক্ষ থেকে ডা. আহসান হাবীবের একটি ভিজিটিং কার্ড দেয়। ওই কার্ডের নম্বর ধরে কল করা হলে অপর প্রান্তের ব্যক্তি নিজেকে ডা. আহসান হাবীব বলে দাবি করেন। মাইশার অপারেশন ও মৃত্যুর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি অপারেশন করিনি। আমার শেয়ার থাকা আলম মেমোরিয়াল হাসপাতালে অপারেশন অ্যারেঞ্জ করে দিয়েছিলাম। সেখানে ঢাকা মেডিক্যালের প্লাস্টিক সার্জারির চিকিৎসক (সহকারী অধ্যাপক) ডা. শরিফুল ইসলাম অপারেশন করেন। কিন্তু দুর্ঘটনাবশত শিশুটি মারা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *