দৈনিক তালাশ.কমঃ ছাতকের গোবিন্দগঞ্জ থেকে বিপদজ্জনক বর্জ্য অপসারণের নির্দেশ চেয়ে সংশ্লিষ্ট ৪ সচিব সহ ৯ জনের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে মামলা দয়ের করা হয়েছে। বাংলাদেশ পরিবেশ সুরক্ষা আইন ১৯৯৫ এর অধিনে বাংলাদেশ কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০২১ এর সুষ্ঠ বাস্তবায়নে বিধিবদ্ধ দায়িত্ব পালনে ক্রমাগত ব্যর্থতার অভিযোগ এনে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিস ব্লাস্ট কর্তৃক এ মামলা দয়ের করেন গোবিন্দগঞ্জের বাসিন্দা, গোবিন্দগঞ্জ ডেভেলপমেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান আইয়ুব করম আলী। ১৩ আগষ্ট উচ্চ আদালতের বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের ও বিচারপতি শওকত আলী চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চে এ মামলা দায়ের করেন তিনি। অভিযোগে বলা হয়, উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের সুহিতপুর, গোবিন্দগঞ্জ পয়েন্ট সংলগ্ন রেলগেট, গোবিন্দগঞ্জ নতুন বাজার, ছাতক পৌরসভা ও জাউয়াবাজার প্রবেশ পথে স্তুপাকারে ফেলে রাখা হয়েছে পচনশীল ও অপচনশীল বর্জ্য। দীঘদিন ধরে এসব এলাকায় অবাধে বর্জ্য পদার্থ ফেলে রাখায় বর্জ্য থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। বাতাসে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ায় এখানে বিপর্যস্থ হচ্ছে জনজীবন। এসব এলাকার রেল লাইনের দু’পাশে এবং সড়ক ও জনপথের উভয় পাশে অপরিকল্পিতভাবে ফেলে রাখা হচ্ছে কঠিন ও পচনশীল বর্জ্য। ফলে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী এবং পথচারীরা স্বাভাবিক চলাফেরায় বিব্রতবোধ করছেন। পাশাপাশি ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, টাইফয়েড, শ্বাস কষ্ট, শিক্ষার্থীর স্বাস্থ্য ঝুকি সহ বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ ছড়িয়ে পড়ার আশংকা রয়েছে। এসব বিপদজ্জনক বর্জ্য অপসারন চেয়ে এবং বাংলাদেশ পরিবেশ সুরক্ষা আইন ১৯৯৫ এর অধিনে বাংলাদেশ কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০২১ এর সুষ্ঠ বাস্তবায়নে বিধিবদ্ধ দায়িত্ব পালনে ক্রমাগত ব্যর্থতার দায়ে মন্ত্রী পরিষদ সচিব, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রনালয়ের সচিব, সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে এ মামলা দায়ের করা হয়। এ ব্যাপারে সোমবার সকালে গোবিন্দগঞ্জের বুড়াইরগাঁও গ্রামের নিজ বাড়িতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে মামলার বাদী আইয়ুব করম আলী মামলা দায়েরের কথা স্বীকার করে জানান, সরকারের উন্নয়ন এবং নগরায়ন শহর থেকে শহরতলী ও গ্রামাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ছে। নগরায়ন প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে সৃষ্ট বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার মধ্যে অন্যতম বর্জ্য। অপরিকল্পিভাবে যত্র-তত্র বর্জ্য ফেলে রাখায় পরিবেশ দুষিত সহ জনজীবন বিপর্যস্থ হচ্ছে। দেশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার প্রচলিত আইন থাকা সত্ত্বেও তা বাস্তবায়িত হচ্ছে না। এ ছাড়া জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও জনকল্যাণের জন্য হানিকর যেকোন কাজ জেলা পরিষদ আইন ২০০০ এর তফশীল ৩ অনুযায়ী একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ে এখনই সঠিক পদক্ষেপ না নেয়া হলে ভবিষ্যতে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ উভয়ের উপরই বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হবে। তাই জনস্বার্থে তিনি এ মামলা দায়ের করেছেন। ব্রিফিংকালে ব্রীজ একাডেমির পরিচালক হুসনা আলী, অধ্যক্ষ মোস্তাক আহমদ, গোবিন্দগঞ্জ ডেভেলপমেন্ট গ্রুপের কোষাধ্যক্ষ খালেদুজ্জামান, সদস্য দিলোয়ার হোসেন চয়ন, জাহিদ হাসান ডালিম,শ্যামল আহমদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।