দৈনিক তালাশ.কমঃ বন্দর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কাউন্সিল আর মাত্র তিন দিন বাকি। সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আগামী ১৭ জুন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এ কাউন্সিল। আর এই কাউন্সিলকে ঘিরে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মাঝে উৎসাহ উদ্দিপনার যেন কমতি নেই। উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের মধ্যে বন্দর ইউনিয়নটি আওয়ামীলীগের একটি দূর্বল দূর্গ হিসেবে নানা মহলে গুঞ্জন রয়েছে। কেননা বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকা কালীন কখনো আওয়ামীলীগের প্রার্থী এই ইউনিয়নে নির্বাচনে জয় লাভ করতে পারে নাই। তার একটাই কারন এই ইউনিয়নটিতে দীর্ঘদিন ধরে জাতীয়পার্টির নেতা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জয় লাভ করে আসছে। এছাড়াও বন্দর ইউনিয়নে বিএনপি ও জামায়াত ইসলামের ঘাঁটি হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে । এ ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের সক্রীয় নেই বললেই চলে। এবার আসন্ন আওয়ামী লীগের কাউন্সিলকে ঘিরে এবার বন্দর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের শক্ত অবস্থান তৈরী করতে শীর্ষ নেতাকর্মীরা এ ইউনিয়নে হেভিওয়েট প্রার্থী নির্বাচনে একাধিকবার মিটিং করেছে। এ ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের গুরুত্বপূর্ণ দুটি পদে একাধিক প্রার্থী থাকায় অবশেষে গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আগামী ১৭ জুন নির্বাচনের মাধ্যমে নেতা নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। ইতিমধ্যে প্রার্থীদের ব্যালট নাম্বারও প্রকাশ হয়ে গেছে। তাই প্রার্থীরা তাদের অবস্থান শক্ত করতে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন।
এদের মধ্যে বন্দর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে প্রার্থীতা ঘোষনা করেছেন বর্তমান সেক্রেটারী জাকির হোসেন পনির যার ব্যালট নং ১ ও অপরদিকে একই পদে প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী ২নং ব্যালটধারী ব্যবসায়ী নুরুজ্জামান,সাধারন সম্পাদক পদে ১০নং ব্যালটে রয়েছে বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এ্যাড.জাহাঙ্গীর আলম ও একই পদে প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী ১১নং ব্যালটে রয়েছেন বন্দর থানা যুবলীগের দপ্তর বিষয়ক সম্পাদক এ্যাড. তাজুল ইসলাম এবং একই পদে ১২নং ব্যালটে রয়েছেন মোঃ বাদল মিয়া।
জানা গেছে,বন্দর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি প্রার্থী নুরুজ্জামান বিগত সময়ে জামায়াতের রাজনিতীতে সক্রিয় ছিল। বন্দর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কোন হেভিওয়েট নেতা থাকার কারনে জামায়াতের আর্শিবাদ পুষ্ট নূরজ্জামান কালো টাকার জোরে আওয়ামীলীগের সভাপতি পদটি বাগিয়ে নেওয়ার পাঁয়তারা করে আসছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ জানিয়েছে নূরজ্জামান কালো টাকার প্রভাব দেখিয়ে বন্দর উপজেলা ও জেলার অসাধু কিছু নেতাকে ম্যানেজ করে সভাপতি পদটি বাগিয়ে নেওয়ার জন্য আপ্রান চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
অপরদিকে জাকির হোসেন পনির এ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে প্রায় দেড় যুগ পার করেছে। এখন তিনি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি প্রার্থী। আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক শক্তি ফিরিয়ে আসার জন্য তিনি তৃনমূল নেতাকর্মীদের নিয়ে মাঠ গুছাতে ব্যাস্ত সময় কাটাচ্ছে। বর্তমানে তিনি দলের জন্য কাজ করতে উঠে পড়ে লেগেছেন। তবে তিনি দলের দূর্দিনের কান্ডারী। বিএনপি-জামাত শাসনামলে তিনি নির্যাতিত হয়েছেন। এখন তিনি বন্দর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রার্থী হয়েছেন। তার ব্যালট নং ১।
অন্যদিকে বন্দর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের প্রয়াত সভাপতি শহিদুল্লাহ (ভাইস) এর ছেলে এ্যাড. জাহাঙ্গীর আলম বন্দর ইউনিয়নে সাধারন সম্পাদক পদে প্রার্থী হওয়ার ঘোষনা দিয়েছেন। তার ব্যালট নং ১০। তিনি আওয়ামীলীগ পরিবারের সন্তান। দীর্ঘদিন বন্দর থানা ছাত্রলীগের পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। পরবর্তিতে নাঃগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এবং বর্তমানে বন্দর উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যকরী সদস্য পদে দায়িত্ব পালন করছেন। বন্দর ইউনিয়নে সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের কর্মীদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরনসহ করোনা সংক্রমনেও ঘরবন্ধী মানুষের পাশে দাড়িয়েছেন। বর্তমানে তিনি সেক্রেটারী প্রার্থী হয়ে দলকে সুসংগঠিত করতে চান।
এদিকে বন্দর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে ১১নং ব্যালটে প্রার্থী হওয়ার ঘোষনা দিয়েছেন বন্দর থানা যুবলীগের দপ্তর বিষয়ক সম্পাদক এ্যাড.তাজুল ইসলাম। তিনি ছাত্রজীবন থেকেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারন করে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। এছাড়াও তিনি সাম্প্রতিক সময়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতিতে সহসভাপতি ছিলেন। আইনজীবী পেশায় তিনি বেশ সুনাম অর্জন করেছেন। সাধারন মানুষের কল্যানে তিনি কাজ করছেন। পাশাপাশি তিনি নারায়ণগঞ্জ জজকোর্টে এপিপির দায়িত্ব পালনও করেন। আওয়ামী লীগের প্রতিটি দলীয় কর্মসূচিতে তিনি ওতপ্রোতভাবে অংশগ্রহন করেন। বর্তমানে তিনি বন্দর ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারন সম্পাদক প্রার্থী।
অপরদিকে বন্দর ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারন সম্পাদক প্রার্থী মোঃ বাদল জানান,আমি বন্দর ইউনিয়ন ৫নং ওয়ার্ডস্থ বেছেরগাও এলাকার সন্তান। আমার পিতা ফজল করিম বন্দর ইউনিয়ন আ’লীগের সিনিয়র সহসভাপতি হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছেন। এই ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল্যাহ চাচার বিয়োগের পর আমার পিতা ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পান। আমি এবং আমার পরিবার ছোটকাল থেকেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারন করে আ’লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত আছি। আমি দীর্ঘদিন যাবৎ বন্দর ইউনিয়ন আ’লীগের সদস্য হিসেবে দলীয় প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে অংশ গ্রহন করেছি। প্রবাসে থাকাবস্থায় আমি বঙ্গবন্ধু পরিষদের নির্বাহী সদস্য হিসেবে বহু কল্যানমুলক কাজ করেছি। এছাড়াও সামাজিক সংগঠন বিআইএমটি এসোসিয়েশনের সহসভাপতি ও বাংলাদেশ রিলিভ ফান্ডের সহসভাপতি হিসেবে প্রবাসে থেকে সাধারন মানুষের কল্যানে কাজ করেছি। সামনে বন্দর ইউনিয়ন আ’লীগের সম্মেলনে আমি সাধারন সম্পাদক প্রার্থী। আমি সকলের দোয়া কামনা করছি।