নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে আঞ্চলিক মহাসড়ক বন্ধ করে নেতাকর্মীদের নিয়ে আড়াইহাজার পৌরসভা নির্বাচন আওয়ামী লীগের প্রার্থী সুন্দর আলী পথসভা করেছে। শনিবার বিকেলে উপজেলার পায়রা চত্বরে জনগণ বা যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হতে পারে- এমন কোনো সড়কে পথসভা না করার নির্দেশনা রয়েছে নির্বাচনী আচরণবিধিমালায়। কিন্তু আজ শনিবার বিকাল ৩টার দিকে আড়াইহাজার পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল সহকারে সুন্দর আলীর সমর্থিত নেতাকর্মীরা আসতে থাকে। এতে ভুলতা বিশনন্দী ও নরসিংদী মদনগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক বন্ধ হয়ে যায়। পরে পায়রা চত্বরে দাঁড়িয়ে নির্বাচনী পথসভার আয়োজন করেন তিনি। এতে প্রায় তিন ঘণ্টা বন্ধ থাকে যানবাহন ও পথচারীদের চলাচল।
সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কের মুখেই আয়োজন করা হয় পথসভার। সেখানে প্রার্থী আওয়ামী লীগ প্রার্থী সুন্দর আলী দাঁড়িয়ে বক্তৃতা করেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান নেওয়ায় সড়কের ফুটপাতও পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। বিকল্প রাস্তা না পেয়ে পথচারীরা বাধ্য হয়ে নেতাকর্মীদের ভিড়ের মধ্যে ঠেলেঠুলে কোনোরকমে রাস্তা পার হচ্ছিলেন।
অনেক কষ্টে সড়কটি পার হচ্ছিলেন আফসানা বেগম নামের এক নারী। নিজেকে বগাদী এলাকার বাসিন্দা হিসেবে পরিচয় দিয়ে এ প্রতিবেদককে বলেন, এটাই তার বাসায় যাওয়ার একমাত্র রাস্তা। সকালেও রাস্তা পরিষ্কার দেখে বের হয়েছিলেন। এর মধ্যে বাসায় ফেরার পথে দেখেন এ অবস্থা। বাসায় যেতে ভিড় ঠেলে যাওয়া ছাড়া তার কোনো গতি ছিল না।
সড়ক বন্ধ করে পথসভার বিষয়ে জানতে সুন্দর আলীর সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। তিনি বলেন, ‘আমি কোনো সড়কে পথসভা করিনি। পথসভা হইছে সড়কের পাশে। আর আমি কোথাও গেলে এত মানুষজন আসে, তাতে আমার তো কিছু করার নাই। আমি বাসা থেকে একটা গাড়ি নিয়া বার হই, কিন্তু তারপরও মানুষে ভরে যায়।’
পথসভার জন্য রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায় ভোগান্তি পোহাতে হয় পথচারীদের। বিআরটিসি বাসসহ বিবিন্ন যাত্রীবাহী যান আটকা পড়ে।
এর আগে নির্বাচনের প্রচার শুরুর আগেই সুন্দর আলীর বিপক্ষে আচরণবিধি ভাঙার অভিযোগ এনেছিল নির্বাচন কমিশন। প্রতীক বরাদ্দের আগেই উঠোন বৈঠক করে নৌকা মার্কায় ভোট চান তিনি।
নির্বাচনী আচরণবিধিমালা অনুযায়ী, কোনো পথসভা বা ঘরোয়া সভা করতে হলে কমপক্ষে ২৪ ঘণ্টা আগে সভার জায়গা ও সময় সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে, যেন ওই স্থানে চলাচল ও আইনশৃঙ্খলার জন্য পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারে। তবে জনগণ চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হতে পারে, এমন কোনো সড়কে পথসভা করতে পারবেন না। ওই সব জায়গায় মিছিল বা শোভাযাত্রার ওপরও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার রবিউল আলম বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। আমরা খোঁজ নিয়ে দেখছি। প্রমাণ পাওয়া গেলে নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
দৈনিক তালাশ ডটকম : সড়কে চলাচলের বিঘ্ন ঘটিয়ে পথসভার বিষয়ে জানতে চাইলে আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমদাদুল ইসলাম তৈয়ব বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। তারা যতটুকু সম্ভব বলেকয়ে রাস্তা ফাঁকা রাখার চেষ্টা করেছে। কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে আমাদের সঙ্গে কোনো ম্যাজিস্ট্রেট ছিল না, তাই আমরা কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারিনি।’
১২ জুন নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে। নির্বাচনে মেয়র পদে ৫, সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ১৭ এবং সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ২৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ২৬ মে প্রতীক বরাদ্দের পর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারণায় নেমেছেন প্রার্থীরা।