দৈনিক তালাশ.কমঃউজ্জ্বল কুমার সরকার নওগাঁঃনওগাঁর মহাদেবপুরে জামা জমি জের নিয়ে পারিবারিক বিরোধের জেরে ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে অষ্টম শ্রেণীতে পড়ুয়া ছাত্র মিনহাজ (১৩) কে প্রধান আসামী ও তার কলেজ পড়ুয়া ভাই মোরসালিন (১৭) কে দ্বিতীয় আসামী এবং দুই শিক্ষার্থীর বাবাকে ৩নং আসামী করে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে নওগাঁ কোর্টের নোটিশ জারী কারক মোঃ আবু সাঈদ ও তার স্ত্রী কম্পিউটার অপারেটর শারমিন সুলতানার বিরুদ্ধে। এঘটনায় ঐ দু’জন শিক্ষার্থীর বাবা মোঃ মতিউর রহমান প্রধান বিচারপতি ও জেলা দায়েরা জজ বরাবর বুধবার লিখিত অভিযোগ করেছেন। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার বিজ্ঞ আদালতে দুই শিক্ষার্থী জামিন আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত মিনহাজ এর কলেজ পড়ুয়া বড় ভাইকে জামিন দিলেও অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া ১৩ বছর বয়সী ছাত্র মিনহাজ এর জামিন না মঞ্জুর করেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নওগাঁ কোর্টে নোটিশ জারী কারক হিসেবে কর্মরত মোঃ আবু সাঈদ ও কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কর্মরত তার স্ত্রী শারমিন সুলতানা সম্পর্কে আমার ভাতিজা ও ভাতিজা বউ । তারা স্বামী-স্ত্রী নওগাঁ কোর্টে চাকুরী করার সুবাদে ক্ষমতার অপ-ব্যবহার ও দাপট দেখিয়ে আমাকে সহ আমার স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া দুই ছেলেকে হত্যার হুমকি সহ ভঁয়ভিতি দেখিয়ে ও একের পর এক মিথ্যা মামলা দায়ের করে হুমকির মুখে রেখে জোর পূর্বক আমাদের জায়গাঁ-জমি দখল করে আসিতেছে। এমনকি নোটিশ জারী কারক আবু সাঈদ তার ভাই, বোন ও মাকে বাদী করে গত ৪ বছরে অগ্নি সংযোগ, স্বর্ণলংকার লুটপাট, নারী নির্যাতন, চাঁদাবাজী, চুরি সহ নানা মিথ্যা অভিযোগ তুলে নওগাঁ আদালত ও মহাদেবপুর থানায় মোট ৬ টি মামলা দায়ের করে হয়রানী করছে। আমি সিএনজি চালানোর পাশাপাশি গ্রামে বাড়ির পাশে ছোট দোকান ও কৃষি কাজ করে পরিবার নিয়ে জীবন-যাপন করি সর্বশেষ গত ১৪ ফেব্রুয়ারি আমি আমার কলেজ পড়ুয়া বড় ছেলে মোঃ মোরসালিন এবং আমার ৮ম শ্রেণীতে পড়ুয়া ছোট ছেলে মিনহাজ কে সাথে নিয়ে জমিতে আইল দেওয়ার কাজ করা কালে আবু সাঈদ তার স্ত্রী, ভাই, শ্যালক সহ পরিবারের লোকজন নিয়ে হঠাৎ করেই জমিতে এসে আমাদের এলোপাথারী ভাবে মারপিট শুরু করেন। মারপিটে দুই শিক্ষার্থী সহ তাদের বাবা ৩ জন আহত হলে এসময় হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যেতেও বাধা দেন বলেও উল্লেখ করা হয় অভিযোগে। আরো উল্লেখ করা হয়, ঘটনার খবর পেয়ে নওহাটামোড় ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছালে আবু সাঈদ তার লোকজন নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। এসময় পুলিশের সহযোগীতায় স্থানিয়রা আহত দুই শিক্ষাথী ও তাদের বাবাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, আমার ছেলের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ৪ দিন নওগাঁ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলো। এঘটনায় আবু সাঈদ তার মা সকিনাকে বাদী করে ফের চাঁদাবাজী, শ্লীলতাহানী, চুরি সহ আরো ধারা যুক্তকরে আবারো মিথ্যা মামলা দায়ের করেন।
এব্যাপারে অভিযোগকারী মতিউর রহমান বলেন, আবু সাঈদ ও তার স্ত্রী বিচারিক আদালতে কর্মরত থাকায় তারা ক্ষমতার অপ-ব্যবহার করে একের পর এক মামলা দিয়ে হয়রানী করে যাচ্ছে। তারা আমার স্কুল পড়ুয়া নাবালক ছেলে ও কলেজ পড়ুয়া ছেলেদের নামে মিথ্যা মামলা করেছে বলে এলাকাবাসী গণ-স্বাক্ষর করে দিয়েছেন, যা আমি মাননীয় প্রধান বিচারপতি বরাবর পাঠিয়ে দিয়েছি। আমি তদন্ত পূর্বক ন্যায় বিচার চাই।
এব্যাপারে আবু সাঈদ এর বক্তব্য নেওয়ার জন্য চেষ্টা করা হলেও সে গ্রামে না থাকায় (তার ভাইয়ের দেওয়া মতে মুঠোফোন নাম্বারে ফোন দিলেও অপর কেউ মুঠোফোন রিসিভ করায়) আবু সাঈদ এর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে ১৪ ফেব্রুয়ারী তারিখের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, জায়গাঁ-জমি নিয়ে বিরোধের জেরধরে দুই শিক্ষার্থীকে মারপিট করা হলেও পরে আমরা শুনছি যে ঐ ঘটনায় নাকি মারপিটের শিকার দুই শিক্ষার্থীকেই আসামী করে চাঁদাবাজীর মামলা করা হয়েছে যা সঠিক নয় বলেও জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।