দৈনিক সোজা সাপটা পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক আবু সাউদ মাসুদকে স্থায়ী জামিন দিয়েছেন ঢাকা সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালত

দৈনিক তালাশ ডটকম :নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের পিএস’র দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় সিনিয়র সাংবাদিক, দৈনিক সোজা সাপটা পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক আবু সাউদ মাসুদকে স্থায়ী জামিন দিয়েছেন ঢাকা সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালত।
বুধবার (২৪ মে) দুপুরে শুনানী শেষে ঢাকা সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক এ জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
সাংবাদিক মাসুদের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন ঢাকা বার (আইনজীবী সমিতি)’র সভাপতি এড. মাহবুব হোসেন, এড. সোমা সাহা, এড. ফরিদ আহম্মেদ বাংলাদেশ ন্যাশনাল জার্নালিস্ট এন্ড হিউম্যান রাইটস কাউন্সিল এর পক্ষে দ’জন আইনজীবী ছিলেন।বিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন ঢাকা সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের সরকারী কৌশলী (পিপি)।
উল্লেখ্য, শামীম ওসমানকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করায় গত বছরের গত ৮ ডিসেম্বর রাতে সাংবাদিক আবু সাউদ মাসুদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫, ২৯ ও ৩১ ধারায় মামলা করে এমপি শামীম ওসমানের পিএস হাফিজুর রহমান। উচ্চ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার পূর্ব পর্যন্ত তার জামিন মঞ্জুর করা হয়।
পরবর্তীতে গত ১০মে মামলার চার্জশীট জমা দিলে আবু সাউদ মাসুদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেন আমলী আদালত নারায়ণগঞ্জ ‘ক অঞ্চল’র বিচারক মোনালিসা। গ্রেফতারী পরোয়ানার প্রেক্ষিতে আজ বুধবার সাংবাদিক মাসুদের স্থায়ী জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন ঢাকা সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালত।
দৈনিক সোজা সাপটা’ পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক আবু সাউদ মাসুদ নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কার্যকরী কমিটির নির্বাচিত সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। একইসাথে, গত ২০ বছর যাবৎ দৈনিক মানবজমিন, দৈনিক আমার দেশ, দৈনিক আমাদের সময় ও দৈনিক রূপালীসহ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় অত্যন্ত সুনামের সহিত কাজ করেছেন আবু সাউদ মাসুদ।
গ্রেফতারী পরোয়ানার বিষয়ে তখন আবু সাউদ মাসুদ বলেছিলেন, ‘আমি কোনও অন্যায় বা মিথ্যা তথ্য প্রকাশ করিনি। আমার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা ও ওয়ারেন্ট হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিলো, বিতর্কিত এই আইনে কোনো সাংবাদিদের রিরুদ্ধে মামলা বা হয়রানী করা হবে না।
কিন্তু সরকার তাদের সেই কথা রাখতে পারে নাই। বিভিন্ন সময়ে আমরা দেখছি সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করার জন্য এই আইনের অপব্যবহার করা হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় আমার বিরুদ্ধে মামলা এবং ওয়ারেন্ট জারি হয়েছে। এই বিষয়ে আমি সরকার উচ্চ মহলের দৃষ্টি আকর্ষন করছি। একইসাথে আইনীভাবেই আমি এই মামলা ও ওয়ারেন্টের মোকাবিলা করবো।
এর আগে, মামলার এজাহারে নিজেকে সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত সচিব পরিচয় দিয়ে বাদী হাফিজুর রহমান উল্লেখ করেন, সাংবাদিক আবু সাউদ মাসুদ তার পত্রিকার প্রথম পাতায় ‘ইবলিশের খপ্পরে সোজাসাপটা’ শিরোনামে ‘ইচ্ছাকৃতভাবে’ সংবাদ প্রকাশ করে সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের ছবি বিকৃত করে রাজনৈতিকভাবে তাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য তার বিরুদ্ধে ‘বিকৃত’ তথ্য প্রকাশ করে।
প্রকাশিত তথ্যের সঙ্গে বাস্তবতার কোনও মিল নেই বলে মামলায় অভিযোগ করেন হাফিজুর রহমান। এজাহারে আরও বলা হয়, ওই শিরোনামের প্রতিবেদনটি পত্রিকার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রকাশ করা হয়।
এই প্রতিবেদনের কারণে পারিবারিক, সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে শামীম ওসমানের মানহানি হয়েছে। এ অবস্থায় তিনি সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের সঙ্গে আলোচনা করে থানায় মামলা করেছেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *