নওগাঁ ১৬ মাস পেরিয়ে গেলেও মডেল মসজিদের নির্মাণ কাজ থুমকে আছে দেখার কেউ নেই

দৈনিক তালাশ.কমঃউজ্জ্বল কুমার সরকার নওগাঁঃথমকে আছে মান্দা মডেল মসজিদের নির্মাণকাজ (পলাশ চন্দ্র সরকার)

চুক্তি ছিল কাজ শুরুর ১৮ মাসের মধ্যে শেষ হবে নওগাঁর মান্দা উপজেলার মডেল মসজিদ ও ইসলামি সংস্কৃতি কেন্দ্রের নির্মাণকাজ। এরই মধ্যে ১৬ মাস পেরিয়ে গেছে। কিন্তু নির্মাণকাজ কেবল মাটি ভেদ করে অস্তিত্ব জানান দিতে পেরেছে। এই অবস্থায় রেখে নির্মাণকাজ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সরে দাঁড়িয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কবে নাগাদ এর নির্মাণকাজ শেষ হবে তা নিয়েও সংকট সৃষ্টি হয়েছে। গণপূর্ত বিভাগ নওগাঁর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমানের কাছে নির্মাণকাজের অচলাবস্তা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘১১ কোটি ৮৮ লাখ ৩৯ হাজার টাকায় ব্যয় ধরে মান্দা মডেল মসজিদ ও ইসলামি সংস্কৃতি কেন্দ্রের নির্মাণকাজটি পায় ঝালকাঠির ‘খান বিল্ডার্স-পলি ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন’ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কার্যাদেশ পেয়ে গত বছরের জুন মাসে নির্মাণকাজের উদ্বোধন করা হয়। কিছু দিন আগে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, নির্মাণসাগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রাক্কলিত ব্যয়ে তারা কাজটি করতে পারছে না। একপর্যায়ে তারা নির্মাণকাজ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সরে দাঁড়ায়। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে নতুন ঠিকাদার নিয়োগ করে কাজটি সম্পন্ন করার চেষ্টা চলছে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার কামারকুড়ি এলাকায় ফেরিঘাট-প্রসাদপুর সড়ক সংলগ্ন একটি স্থানে ৪৩ শতাংশ জমির ওপর গত বছরের জুন মাসে কাজ শুরু হয় মান্দা মডেল মসজিদ ও ইসলামি সংস্কৃতি কেন্দ্রের। শুরু থেকেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খান বিল্ডার্স-পলি ইঞ্জিয়ারিং কর্পোরেশন মাঠপর্যায়ে থাকেনি। উপঠিকাদার হিসেবে নওগাঁ পৌর শহরের উকিলপাড়ার মামুন নামের এক ব্যক্তি কাজটি বাস্তবায়ন করছিলেন। কিছুদিন পর তিনিও অনেকটা অদৃশ্য হয়ে পড়েন। কাজ শুরুর কিছু দিন পরই নির্মাণ সামগ্রির দাম বেড়ে যাওয়ার অজুহাতে নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রায় এক বছর ধরে মসজিদ নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। এক মাস আগে গণপূর্ত বিভাগকে চিঠি দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্মাণকাজ থেকে সরে দাঁড়ায় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি। সরজমিনে এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মাটির নিচের ফাউন্ডেশনের কাজ শেষে কিছু পিলার ঢালাই হয়েছে। কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রডে মরিচা পড়েছে। মাটিতে চাষ করা হয়েছে মাসকলাইয়ের।
কামারকুড়ি গ্রামের বাসিন্দা আব্দুস সবুর বলেন, মসজিদটির নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার পর মসজিদটি ঘিরে এলাকাবাসীর মধ্যে এক ধরনের আগ্রহ ও উদ্দীপনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্থানীয় মানুষের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লায়লা আঞ্জুমান বানু বলেন, ‘আমি এই উপজেলায় ইউএনও হিসেবে যোগদানের পর থেকেই দেখছি মান্দা মডেল মসজিদের নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমি একাধিকবার জেলা সমন্বয় সভায় কথা বলেছি। নির্মাণকাজ এগিয়ে নিতে আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছি।
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের পক্ষে উপঠিকাদার মামুন বলেন, ‘আমি ওই প্রকল্পের ঠিকাদার নই। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি আমাকে কাজটি দেখভাল করার দ্বায়িত্ব দিয়েছিলেন। কাজ শুরুর কিছু দিন পরেই প্রতিষ্ঠানটির লোকজন আমার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। এখন কাজটি কি অবস্থায় আছে আমি তার কিছু জানি না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *