অবরোধের আগুনের চেয়ে পেটের আগুন ভয়াবহ:সাধারণ জনগণ আতঙ্কিত

দৈনিক তালাশ.কমঃ মো:জাহিদ হাসান বিশেষ প্রতিনিধি: মোহাম্মদ আমানত মোল্লা (৬০)। বাড়ি মাগুরায়। থাকেন ঢাকার মোহাম্মদপুর শেখেরটেকে এক আত্মীয়র বাসায়। স্ত্রী ও চার সন্তান গ্রামে থাকে। ভয় থাকলেও এই অবরোধেও তাকে রাস্তায় রিকশা নিয়ে বের হতে হয়েছে।

আমানত বলেন, ঢাকায় রিকশা চালিয়ে টাকা না পাঠালে কারও মুখে ভাত ওঠে না। হরতাল ও অবরোধের আগুনে পেটের আগুন নেভে না।সোমবার (৬ নভেম্বর) অবরোধ চলাকালে মোহাম্মদপুর বাস টার্মিনালে কথা হয় আমানত মোল্লার সঙ্গে।

আমানতের এক ছেলে ও এক মেয়ে লেখাপড়া করে। নিজের জমি বলতে একটু বসতভিটা। রিকশার চাকা না ঘুরলে সবাইকেই অভুক্ত থাকতে হবে বলে দাবি তার। নিত্যপণ্যের দাম বাড়তি। যে কারণে রিকশা চালিয়ে মাসে আট থেকে ১০ হাজার টাকা পাঠাতে হয়।আমানত মোল্লা বলেন, জমি-জায়গা নাই। রিকশা চালিয়ে টাকা না দিলে সংসার চলে না। স্ত্রীর অপারেশনে ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে তারপরও ঠিক হয়নি। হরতাল-অবরোধে ভয় করলে সংসার চলবে না। অবরোধের আগুনের চেয়ে পেটের আগুন ভয়াবহ।
সরকারের পদত্যাগ ও নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে টানা কর্মসূচির অংশ হিসেবে হরতাল-অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন অনেকটাই স্বাভাবিক পরিবেশ ধানমন্ডি ও মোহাম্মদপুর এলাকা।

দ্বিতীয় দিন সকাল থেকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে যানবাহন। পাশাপাশি সতর্ক অবস্থানে দেখা গেছে পুলিশকেও।ভোর থেকেই গাড়ি, রিকশা, অটোরিকশার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের উপস্থিতিও লক্ষ্য করা যায়। ফলে রিকশার ভাড়াও ভালো হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।ধানমন্ডি এলাকায় কথা হয় মোহাম্মদ আইনুল হকের সঙ্গে। তার গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রামের উলিপুর। গড়ে দৈনিক ১২ থেকে ১৫শ টাকা আয় হচ্ছে বলে জানান তিনি।তিনি বলেন, অবরোধে কোনো ভয় নাই। ভাড়া ভালো হচ্ছে। দৈনিক ১২ থেকে ১৫শ টাকা ভাড়া মারছি। গতকল ৮০০ টাকা বাড়িতে পাঠিয়েছি।

ধানমন্ডি স্টার কাবাবের কাছে বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন মিজানুর রহমান। তিনি পল্টনে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। বলেন, অবরোধ ও হরতালের সঙ্গে অফিসের সম্পর্ক নাই। অফিস বন্ধ নাই। একদিন যদি না যায় তবে বেতন কাটা পড়ে।এদিকে অবরোধের ফলে যেন সহিংসতা না হয়, সেজন্য সতর্ক অবস্থানে দেখা গেছে পুলিশকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *