দৈনিক তালাশ.কমঃজেলা ও মহানগর বিএনপির পাশা পাশি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মতো।
শুধু তাই নয়, সমাবেশ থেকে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানকে হুমকি দিতেও শোনা গেছে।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ব্যানারে বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টায় সাইনবোর্ড এলাকায় পাসপোর্ট অফিস সংলগ্ন সড়কে সমাবেশটির আয়োজন করা হয়।
সমাবেশে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মইন খান।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকনের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ টিটু, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, সহ-অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মনিরুজ্জামান মনির, মোস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়া দিপু, আজহারুল ইসলাম মান্নান, নুর জাহান মাহবুব।
আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি প্রমুখ।
সমাবেশে প্রধান অতিথি ড. আব্দুল মইন খান বলেন, ‘স্পষ্ট করে বলতে চাই, আওয়ামী লীগ যদি মানুষের ইচ্ছার প্রতি শ্রদ্ধা করে তাহলে আমরা এরই মধ্যে দেখিয়ে দিয়েছি মানুষ আওয়ামী লীগকে ঘৃণা করে। আওয়ামী লীগ চলে যাক। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হোক। আওয়ামী লীগ সে নির্বাচনে বিজয়ী হলে আমিও তাদের অভিনন্দন জানাব। কিন্তু ওরা জানে ওরা কত অপকর্ম করেছে। তাই ওরা সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে ভয় পায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আন্দোলন করছি ক্ষমতার জন্য নয়। আমরা আন্দোলন করছি মানুষের ভোটের অধিকার গণতান্ত্রিক অধিকারের জন্য। আমরা একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করছি। আওয়ামী লীগ ভালো কাজ করে থাকলে মানুষ তো তাদের ভোট দেবেই। এ সরকার উন্নয়নের নামে মেগা দুর্নীতি করেছে। এ সরকার গণতন্ত্রকে হরণ করেছে। এ গণতন্ত্রকে আমাদের ফিরিয়ে আনতে হবে। তাই আজ নারায়ণগঞ্জের মানুষ রুখে দাঁড়িয়েছে।’
অতিথির বক্তব্যে ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের অনেক কুখ্যাত রাজনীতিবিদেরা ভয়ভীতি দেখানোর চেষ্টা করে। ২০০১ সালে যেমন বোরকা পরে পালায় গেছিলো, এবার বোরকা পরে পালানোর সুযোগ পাবে না। সেই সুযোগ জনগন দিবে না। বিচারের কাঠগড়ায় অবশ্যই দাড়াতে হবে।’
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সিঙ্গাপুর গিয়েছিল চিকিৎসা করাতে। এসে বিএনপিকে ৩৬ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন। কাদের সাহেব ৩৬ ঘন্টা সময় দিলাম। পুলিশ আর র্যাব ছাড়া আসেন, যেখানে খেলতে চান খেলবো। আমরা খেলতে চাই।’
সভাপতির বক্তব্যে মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বলেন, ‘সরকারের মধ্যে থাকা নারায়ণগঞ্জের নেতাকর্মীরা বলেছেন, ২৪ ঘন্টার মধ্যে বিএনপিকে শেষ করে দিবে। নারায়ণগঞ্জে থাকতে দিবে না। আমি তাদের মতো বক্তব্য দিতে চাই না। আমি প্রমান দিয়ে গেলাম, তার বক্তব্যের প্রমান হলো আজকের এই জনসভা। বিএনপির নেতাকর্মীরা নারায়ণগঞ্জের সর্বস্তরের মানুষের হৃদয় জয় করে আন্দোলন সংগ্রাম করছে। তারই ফলশ্রুতি হচ্ছে আজকের এই জনসভা।’
সমাবেশটি বিকেল ৪টা বাজে শুরু হলেও সকাল থেকেই খন্ডখন্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশে আসতে শুরু করে।
সরেজমিনে দেখা যায়, অনেকে দুপুরের আগে এসে সমাবেশস্থলের আশেপাশে অবস্থান নিয়েছেন। এ ছাড়া সমাবেশে বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা নেতাকর্মীদের উপস্থিত হয়ে স্লোগান দিতে দেখা গেছে। বাস, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনে করেও নেতাকর্মীরা আসছেন সমাবেশে অংশ নিতে। দুপুর সোয়া ১টা পর্যন্ত সমাবেশ স্থলের আশেপাশে প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নেতাকর্মীদের অবস্থান করতে দেখা গেছে।
এদিকে সমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের সাইনবোর্ড এলাকা ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ডের আশপাশের এলাকা সাজানো হয়েছে বিভিন্ন ব্যানারে। আশপাশের ভবনেও সাটানো হয় ব্যানার।