আজ থেকে ঢাকায় টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু

দৈনিক তালাশ.কমঃমো:জাহিদ হাসান বিশেষ প্রতিনিধি: বাজারের জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ার পেছনের বৈশ্বিক অবস্থা ও ডলারের দাম বৃদ্ধিকে দায়ী করেছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। তিনি দাবি করেছেন, বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকার সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে। এরই আলোকে আজ থেকে টিসিবি মাধ্যমে সুলভ মূল্যে ঢাকায় ট্রাক সেলের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ট্রাকে মূলত পেঁয়াজ, তেল, আলু ও ডাল বিক্রি করা হবে। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন কথা বলেন তিনি।

তিনি জানান, ফ্যামিলি কার্ড ছাড়াও আজ মঙ্গলবার থেকে ঢাকায় টিসিবির খোলা ট্রাক থেকে চারটি নিত্যপণ্য কেনা যাবে। ঢাকা শহরে যেহেতু অনেক মানুষের চাপ, দ্রব্যমূল্য একটু বেশিই থাকে। বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পণ্য আসে, পরিবহন ব্যয়টা যোগ হয়, সব মিলিয়ে দামটা একটু বেশিই থাকে। সেজন্য খোলা ট্রাক থেকে কম দামে পণ্য বিক্রি করা হবে। যে কেউ এসব পণ্য কিনতে পারবেন।
বাণিজ্যসচিব জানান, খোলা ট্রাক থেকে ৬০ টাকা কেজিতে ডাল, ৩০ টাকায় আলু, ৫০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ এবং ১০০ টাকা লিটার দামে সয়াবিন তেল বিক্রি করা হবে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় ২৫ থেকে ৩০টি ট্রাকে করে এসব পণ্য বিক্রি শুরু হবে। শুক্র ও শনিবার ঢাকায় খোলা ট্রাক থেকে পণ্য বিক্রি বন্ধ থাকবে, অন্য সবদিনই এ কর্মসূচি চলবে। একেক দিন ঢাকার একেক স্পটে এসব পণ্য বিক্রি করা হবে। প্রত্যেক ট্রাকে ৩০০ জনকে দেয়ার মতো পণ্য থাকবে। সে হিসাবে প্রতি মাসে ঢাকায় ৯ হাজার পরিবারের কাছে খোলা ট্রাকে পণ্য বিক্রি করা হবে। পণ্যের সংগ্রহ বাড়াতে পারলে বিক্রির আওতাও বাড়ানো হবে।
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৩ লাখ মানুষের টিসিবি কার্ড আছে জানিয়ে তিনি বলেন, সারা দেশে টিসিবি কার্ডধারী এক কোটি পরিবার গত বছরের মার্চ মাস থেকে তিনটি পণ্য পাচ্ছে। গত জুলাই থেকে পাঁচ কেজি করে চালও দেয়া হচ্ছে।বৈশ্বিক অবস্থা ও ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে- জানিয়ে বাণিজ্যসচিব বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারের দাম বাড়া-কমার ওপর তেল ও চিনির দাম সমন্বয় করা হয়। আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন ও পামওয়েলের দাম অনেক বেড়ে যাওয়ায় গত বছরে সয়াবিন তেলের দাম এক পর্যায়ে প্রতি লিটার ২০৫ টাকা হয়ে যায়। সেটা ধাপে ধাপে কমিয়ে সর্বশেষ এক লিটারের বোতল ১৭৯ টাকা নির্ধারণ করা দামে বিক্রি করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, সবসময় আলু রফতানি করা হতো। আর ডিম আমদানি বন্ধ ছিল। কিন্তু আমরা জানি, মুক্তবাজার অর্থনীতিতে দাম নির্ধারিত হয়, চাহিদা ও জোগানের ভিত্তিতে। সেই জোগানটা হলো দেশের উৎপাদন ও আমদানি। যেহেতু আমদানি বন্ধ ছিল, আমরা দেখলাম দাম অনেক বেড়ে গেছে, যে কারণে প্রথমে আমরা নির্ধারণ করে বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করেছি, কিন্তু কোনো কোনো ক্ষেত্রে সফল হইনি। তখন আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সাথে আলাপ করে আলু ও ডিম আমদানি উন্মুক্ত করে দিয়েছি।
বাণিজ্যসচিব বলেন, আমরা ডিম ও আলু আমদানি উন্মুক্ত করার পরে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন সরকার নির্ধারিত দাম বাস্তবায়নের চেষ্টা করায় এ দু’টি পণ্যের দাম উল্লেখযোগ্য কমেছে। তবে আলু ও ডিম আমদানি আমাদের উদ্দেশ্য নয়, আমাদের উদ্দেশ্য দাম কমানো। দাম কমে গেলে আমদানি কম হলেও অসুবিধা নেই। তবে বাজার স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত আলু ও ডিম আমদানি হবে। তেল, চিনি, ডাল, আলু- এসব পণ্য আমদানিতে যেন ডলারের সমস্যা না হয় সরকারের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্টদের সে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *