দৈনিক তালাশ.কমঃ নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ও আওয়ামীলীগ নেত্রী ডা. সেলিনা হায়াত আইভিকে ধুয়ে দিলেন ১০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর আওয়ামীলীগের সহ-প্রচার সম্পাদক ইফতেখার আলম খোকন। মেয়র আইভীর কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, উনি (আইভী) কিছু হলেই বলে থাকেন শামীম ওসমান চাঁদাবাজি করে।
তাহলে আমার প্রশ্ন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের এতো উন্নয়নের টাকা কই যায়। আর উন্নয়ন করলে লাভ হবে না, এই লাভ কই যায়? আজ আমরা টাকা পাই না, খাইতে পারি না সরকারি দলে থেকেও। আর এখানে ঠিকাদাররা যারা একসময় ভাত খাইতে ভাত পায় নাই তারা এখন হ্যারিয়ার গাড়িতে ঘুরে। উনি (আইভী) যে মানুষের চাঁদাবাজি নিয়ে কথা বলে তাহলে সিটি করপোরেশনের এতো অর্থ কই যায়। একটি অনলাইনকে দেয়া সাক্ষাতকারে কাউন্সিলর খোকন এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, তার (আইভী) সঙ্গে আমার কোনো দ্ব›দ্ব নেই। নাসিকের ৩৬ জন কাউন্সিলর করোনার সময় অনেক কাজ করেছিল। বর্তমানে ডেঙ্গু মহামারীতেও কাউন্সিলররা এলাকায় গিয়ে গিয়ে কাজ করছেন। এটার বাহবা মেয়র পাবেন। আমরা এতো পরিশ্রম করার কারণেই তিনি এতো সম্মানিত। উনি (আইভী) টাকা আনে সরকারের কাছ থেকে, নিজে থেকে তো আনে না। জনগণ ট্যাক্স দেয়। উনি শুধু পরিচালনা করেন। উনি একটা বাজেট অধিবেশন করবে কবে করবে তা আমাদের কিছুই জানায় নাই। আগের বাজেটে গিয়ে দেখলাম উনার কিছু নিজস্ব মানুষ আছে তাদের দিয়ে প্রশ্ন করায়। ফুটপাত নিয়ে প্রশ্ন তোলে। তারপর সংসদ সদস্য শামীম ওসমানকে বকাঝকা করে বাজেট অনুষ্ঠান শেষ। বছরের একটা বাজেট। এটা অত্যন্ত আনন্দের একটা বিষয়। সে কখনো বলতে পারবে না আমাদের সঙ্গে বাজেটের তারিখ ঠিক করেছে।
খোকন আরও বলেন, উনি (আইভী) সম্মানিত ব্যক্তি। আমরা তাকে সম্মান করবো। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন মানে আমার করপোরেশন। আজ উনার সম্পর্কে আমার বলতে হয়। এবারের বাজেট সম্পর্কে কাউকে জানানো হয়নি। উনি মনে করে সিটি করপোরেশন তার। এটার মধ্যে কাউন্সিলর বলতে কোনো শব্দ নাই। তাই আমি কিছুদিন আগে ফেসবুকে লিখেছিলাম, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট জোরালো অনুরোধ একমাত্র নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনকে কাউন্সিলরবিহীন করতে। মানে কোনো কাউন্সিলরের দরকার নাই। কারণ আমি জানি উনি দক্ষ প্রশাসক। আমাদের কাউন্সিলর পদ বিলুপ্ত করে দেক। আমার আর কোনো ভয় নাই কথা বলতে। আমি যতদিন বেঁচে আছি সত্য কথা বলে যাবো। উনি আমাদের সঙ্গে যা আচরণ করে তা অত্যন্ত দু:খজনক।
কাউন্সিলর খোকন বলেনন, আমি তো একজন কাউন্সিলর, উনার কর্মী নই। একটা কথা বললেই উনি ধমক দিয়ে বসেন। তাই আমি নগর ভবনে যাই-ই না। আর তাতে সেও অনেক খুশি। ৩৬ জন কাউন্সিলর না গেলে সে একা মনের মতো সিটি করপোরেশন চালাবে। উনি শুধু আমার সঙ্গেই নয়, আরও অনেক কাউন্সিলর রয়েছেন তাদের সঙ্গেও ধমক দিয়ে কথা বলেন। এ নিয়ে আমাদের মধ্যে অনেক আলোচনা হয়।
তিনি বলেন, ‘মেয়র কয়, এসপি-ডিসি তার কথা শোনে না। শুনব কেন? আপনারে পাশ করাইলে কী লাভ হয় দেশের? আজকে এসপি জানে এই সরকার না থাকলে আমার চাকরি থাকব না, ডিসি মনে মনে জানে এই সরকার না থাকলে আমারে ট্রান্সফার কইরা দিব, কোন জায়গায় কোন শাস্তি দিব।” এই সরকার না থাকলেও আপনার (আইভী) মধ্যে তো কোনো ভয় নাই।”
৩৬টা কাউন্সিলরের সঙ্গে আপনার ভালো সম্পর্ক থাকলে আমরা শামীম ওসমানের রাজনীতি করতাম না, আপনার নেতৃত্বে রাজনীতি করতাম।জানতে চাইলে কাউন্সিলর ইফতেখার আলম খোকন বলেন, কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর ওয়ার্ডের উন্নয়নের স্বার্থে মেয়রকে সবসময় সহযোগিতা করেছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি শামীম ওসমানের রাজনীতি করলেও শামীম ভাই নিজেই বলেছে, খোকন তুমি যেহেতু কাউন্সিলর হয়েছো, এবং ওয়ার্ডের মানুষ তোমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। তাদের কাছে তোমার দায়বধ্যতা আছে। তুমি মেয়রকে সহযোগিতা করে এলাকার উন্নয়নে কাজ বাগিয়ে নাও। মেয়রের সাথে মিলে মিশে মানুষের জন্য কাজ করো। অথচ মেয়র আমাদের কাউন্সিলরই মনে করে না। কিছু বললেই দমক দেয়। অনেক কাউন্সিলর মাসিক মিটিংয়ে কথাও বলে না। কারণ তারা মনে করে ধমক খাওয়ার চেয়ে চুপ থাকা ভালো।