RAB পরিচয়ে ডাকাতি র্কেরানীগঞ্জের ডাকাতি মামলার সকল আসামি গ্রেফতার করেছে পুলিশ

দৈনিক তালাশ.কমঃRAB পরিচয়ে সংঘবদ্ধ ডাকাতদল কর্তৃক কেরানীগঞ্জের জৈনপুরে স্বর্ণ ডাকাতি মামলার রহস্য উদঘাটন, সকল আসামি গ্রেফতার ও লুন্টিত মালামাল উদ্ধার।

ঘটনার বিবরণঃ গত ০৪/০৯/২০২৩ খ্রিঃ তারিখ রাত অনুমান ০৮.৫৫ ঘটিকার সময় কেরাণীগঞ্জ মডেল থানাধীন জৈনপুর বাজারস্থ সুনীল মন্ডল তার পায়েল জুয়েলার্স নামক জুয়েলারী দোকান বন্ধ করে স্বর্ণের ব্যাগ নিয়ে অনুমান ১০০ মিটার উত্তরে তার বসতবাড়ীর গেইটের সামনে পৌছালে কলাতিয়াগামী রাস্তা হতে সিলভার রংয়ের একটি মাইক্রোবাস হেডলাইট বন্ধ করে তার দিকে আসতে থাকে। তার কাছাকাছি আসলে মাইক্রোবাসের হেডলাইট জ্বলে ওঠে।

মাইক্রোবাস হতে অজ্ঞাতনামা ০২ জন ডাকাত তাকে কিল-ঘুষি, লাথি মেরে তার হাতে থাকা ব্যাগটি ছিনিয়ে নেয় এবং তাকে গুরুতরভাবে আঘাতের ভয় দেখিয়ে মাইক্রোবাসে উঠানোর জন্য টানা-হেচড়া করতে থাকে। তার ডাক-চিৎকারে স্ত্রী ও শালী সুবর্ণা সরকারসহ আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে ডাকাতরা তাকে ছেড়ে দেয় এবং মাইক্রোবাসটি নিয়ে দ্রুতগতিতে রামেরকান্দার দিকে চলে যায়। তার ব্যাগে থাকা সর্বমোট ৩৪ ভরি বিভিন্ন ধরণের স্বর্ণালংকার মূল্য অনুমান ৩৪,০০,০০০/- (চৌত্রিশ লক্ষ) টাকা ও ২২ ভরি রুপা মূল্য অনুমান ২৮,৬০০/- (আটাশ হাজার ছয়শত) টাকা ও নগদ ৮০,০০০/- (আশি হাজার) টাকা, চেক বই ও বিভিন্ন হিসাবের রেজিষ্টারপত্রসহ সর্বমোট মূল্য- ৩৫,০৮,৬০০/- (পয়ঁত্রিশ লক্ষ আট হাজার ছয়শত) টাকা ডাকাতি করে নিয়ে যায়। এ বিষয়ে পরবর্তীতে সুনীণ মন্ডল বাদী হয়ে কেরাণীগঞ্জ মডেল থানায় মামলা নং-১৭, তাং- ০৫/০৯/২০২৩ খ্রিঃ, ধারা- ১৭০/১৭১/৩৯৫ পেনাল কোডের একটি ডাকাতি মামলা দায়ের করেন।
তদন্তঃ মামলা রুজুর সাথে সাথে জনাব আসাদুজ্জামান, পিপিএম (বার), পুলিশ সুপার, ঢাকা মহোদয় র্যা বের পরিচয় ব্যবহার করে ডাকাতি করা সংঘবদ্ধ এই ডাকাত চক্রকে দ্রুত গ্রেফতারের জন্য বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন। জনাব আমিনুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) এর নির্দেশনায় জনাব শাহাবু্দ্দিন কবীর, বিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, কেরাণীগঞ্জ সার্কেল এর নেতৃত্বে কেরাণীগঞ্জ মডেল থানার একটি চৌকস তদন্তদল ঘটনাস্থলের বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা এবং প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণের মাধ্যমে ডাকাতির ঘটনায় জড়িত সংঘবদ্ধ এই ডাকাতচক্রকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়। অতঃপর জনাব মোঃ শাহাবুদ্দিন কবীর, বিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, কেরাণীগঞ্জ সার্কেল এর সরাসরি তত্ত্বাবধানে মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই (নিঃ) অলক কুমার দে এর নেতৃত্বে কেরাণীগঞ্জ মডেল থানার একটি চৌকস আভিযানিক দল খিলগাও, কোতয়ালীসহ ডিএমপির বিভিন্ন এলাকায় ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে গত ২৪ ঘন্টায় ঘটনায় জড়িত আন্তঃজেলা ডাকাত চক্রের ০৯ সদস্যকে ১। বাদল মুন্সি ৥ সার্জেন্ট বাদল (৪৫), ২। শহিদুল শেখ ৥ র্যা ব শহিদ (৪০), ৩। অলিউর রহমান ৥ ক্যাপ্টেন ওলি (৪২), ৪। সাইদ মনির আল মাহমুদ ৥ সোর্স মনির (৩৭), ৫। সবুজ খাঁন (৫২), ৬। ড্রাইভার ইব্রাহিম ৥ ডাক্তার (৩৬), ৭। লাবু শরীফ ৥ বাবুল শরীফ ৥ বাবলু (৪৮), ৮। রুবেল (২৭), ৯। ড্রাইভার মোশারফ হোসেন (৩৯), – দেরকে গেফতার করতে সক্ষম হয়। অভিযানকালে ডাকাত ড্রাইভার মোশারফ এর নিকট হতে একটি পার্ল রংয়ের এলিয়ন প্রাইভেটকার (ঢাকা মেট্রো গ-২২-২৪৬৭) জব্দ করা হয় ও ড্রাইভার ইব্রাহিম ৥ ডাক্তার এর হেফজত হতে একটি সিলভার রংয়ের নোয়া মাইক্রোবাস (ঢাকা মেট্রো-চ-৫৩-৫১৯৭) ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত আলামত হিসেবে উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়। গ্রেফতারকৃত ডাকাতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় তারা আন্তঃজেলা ডাকাতদলের সক্রিয় সদস্য। অত্র ডাকাতির ঘটনায় তারা ১২-১৪ জন অংশগ্রহন করেছিল। মূলত নোয়া মাইক্রোবাসটি দিয়ে তারা সরাসরি ভিকটিমের সামনে গিয়ে উপস্থিত হয় এবং গাড়ি থেকে বাদল মুন্সির নেতৃত্বে আরও ০৩ জন ডাকাত ভিকটিমকে টেনে-হিচড়েঁ উঠিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলেও ভিকটিমের সাথে থাকা ব্যাগটি ছিনিয়ে নেয়। তারপর নোয়া গাড়িটি রুহিতপুর বাজারের দিকে গেলে অপেক্ষারত এলিয়ন গাড়িতে থাকা অলিউর রহমানের কাছে টাকা ও স্বর্ণালংকারের ব্যাগটি দিয়ে তারা পালিয়ে যায়। গ্রেফতারকৃত ডাকাতদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাৎক্ষণিকভাবে জনাব মামুন-অর রশিদ, পিপিএম, অফিসার ইনচার্জ এর নেতৃত্বে একটি আভিযানিক দল অভিযান পরিচালনা করে ডিএমপি ঢাকার কোতয়ালী থানাধীন তাঁতিবাজারস্থ সাগর কর্পোরশনের মালিক স্বর্ণ ব্যবসায়ী শচীন্দ্র সরকার এর দোকানের ভিতর স্বর্ণ ও রুপা বিক্রয়ের জন্য অপেক্ষারত ডাকাত সাইদ মনির ৥ সোর্স মনির ও অলিউর রহমানদ্বয়কে ১২/০৯/২০২৩ খ্রিঃ তারিখ ১৮.১৫ ঘটিকার সময় গ্রেফতার করে। ধৃত আসামী সাইদ মনিরের হেফাজত হতে ২১ ভরি চান্দি রুপা মূল্য অনুমান ২১,০০০/- (একুশ হাজার) টাকা, এছাড়াও ডাকাতির মাধ্যমে অর্জিত চোরাই নগদ ২০,০০০/- (বিশ হাজার) টাকা এবং অলিউর রহমান এর নিকট হতে গলানো স্বর্ণের পাত যাহার ওজন ২৯ ভরি ১৪ আনা মূল্য অনুমান ২৯,১৪,০০০/- (উনত্রিশ লক্ষ চৌদ্দ হাজার) টাকা উদ্ধার করা হয়। ধৃত আসামী সাইদ মনির ৥ সোর্স মনির এর দেওয়া তথ্যমতে অভিযান পরিচালনা করে ডিএমপি ঢাকার খিলগাও থানাধীন সিপাহীবাগ হতে মামলার তদন্তে প্রাপ্ত অপর ডাকাত বাদল মুন্সি, লাবু শরীফ ও মোঃ সবুজ খান দেরকে ১২/০৯/২০২৩ খ্রিঃ রাত্র ২২.৪৫ ঘটিকার সময় গ্রেফতার করা হয়। ধৃত আসামী লাবু শরীফ এর দেহ তল্লাশীকালে ডাকাতির মাধ্যমে অর্জিত চোরাই নগদ ৮,০০০/- টাকা ও সবুজ খানের নিকট হতে চোরাই নগদ ৭,০০০/- টাকা এবং ধৃত আসামী বাদল মুন্সির দেখানো মতে তার শয়নকক্ষের খাটের নিচ হতে শপিং ব্যাগের মধ্যে ০৩ টি কালো রংয়ের র্যা ব লেখা কোটি অত্র মামলার আলামত হিসেবে জব্দ করা হয় এবং বাদীর দোকানের রেজিষ্টার খাতা সময় জব্দ করা হয়। গ্রেফতারকৃত ডাকাতদের নামে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক ডাকাতির মামলা আছে। সংঘবদ্ধ এই ডাকাতচক্র ইতিপূর্বে র্যা বের পরিচয় ব্যবহার করে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক ডাকাতি করেছে মর্মে তদন্তে জানা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *