দৈনিক তালাশ.কমঃকুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের বাগোয়ান গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা কামাল হোসেনের ছেলে রেন্টু ইসলাম বাটুল কে বি এন পি নেতা ৯ টি মামলার আসামী ও সাবেক এমপি রেজাউল হক চৌধুরীর সক্রিয় কর্মী হাসিবুর রহমান হাসিব মেম্বারের নেতৃত্বে হত্যা করা হয়েছে বলে পরিবারের লোকজন দাবী করেন।
এ বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শী রেন্টু ইসলামের বড় ভায়ের ছেলে আপন আলী বলেন, আমি এবং আমার চাচা রেন্টু ডাংমড়কা বাজার নিজ কর্মস্থল থেকে বুধবার সন্ধ্যায় বাড়িতে আস ছিলাম। বাগোয়ান টেনশন মোড় পার হলে, আগে থেকে ওত পেতে থাকা , মোস্তাক, আনোয়ার, হাসিব মেম্বার, মিজান মাস্টার, শহিদুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম এর স্ত্রী সহ আরো অনেকে আমাদের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে এলোপাতাড়ি ভাবে কুপিয়ে পালিয়ে যায়।আমার ডাক চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে আসে। এবং আমার চাচাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
নিহত রেন্টুর স্ত্রী বন্যা আরা বলেন,গত ২৮ শে নভেম্বর ২০২১ ইংরেজি তারিখে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, সেই নির্বাচনে আমার স্বামী রেন্টু ইসলাম আওয়ামীলীগ থেকে তালা প্রতীক নিয়ে ভোট করেন, হাসিব মেম্বার বি এন পি দল করলেও তাকে চৌধুরীরা সমর্থন করে সে ফুটবল প্রতীক নিয়ে ভোট করেন। আমরা স্বামীকে ভোট করতে নিষেধ করেন হাসিব মেম্বার আমার স্বামী তার কথা না শুনলে নির্বাচন শেষে আমাদের উপর হামলা চালায়। সে সময় উভয় পক্ষের লোকজন জখম হয়। তার পরে থেকে আমার স্বামীকে তারা হত্যা করবে বলে বিভিন্ন সময় হুমকি দেয়। আজ তারা আমার স্বামীকে হত্যা করে তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করলো। আমি হত্যার বিচার চাই।
এ বিষয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, কিছু দিন আগে সাবেক এমপি রেজাউল হক চৌধুরীর ছোট ভাই বুলবুল আহমেদ টোকেন চৌধুরী মথুরাপুর হাইস্কুলে মাঠে শান্তি সমাবেশ করেন সেই সমাবেশে হাসিব মেম্বার উপস্থিত হয়ে ছিলেন তার লোক জন নিয়ে। একাধিক মামলার আসামী বিএনপির ক্যাডার হাসিব মেম্বার কে ভাবে দলে নেয় চৌধুরী পরিবার। তিনি আরও বলেন, হাসিব মেম্বার এর বড় ভাই মিজান মিষ্টার কে রেজাউল হক চৌধুরী এমপি থাকাকালীন সময়ে ১৪ লক্ষ টাকার বিনিময়ে আদাবাড়ীয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ দেন এবং মিজান মিষ্টারের বাড়ীতে খিচুড়ি ভোজ মাধ্যমে মিজান মিষ্টার ও ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাসিব মেম্বার কে আওয়ামী লীগে যোগদান করায় রেজাউল হক চৌধুরী।
এলাকাবাসীরা বলেন, হাসিব মেম্বার, আনোয়ার, এই এলাকার খারাপ মানুষ। আনোয়ার একটি মামলার ৩২ বছরের সাজা প্রাপ্ত আসামী। আজ ১০ থেকে ১৫ দিন আগে হাইকোর্ট থেকে আপিলে এসেছে আনোয়ার। এসেই সংঘবদ্ধ ভাবে তারা হামলা চালায়। আনোয়ারের নামে দৌলতপুর থানায় মাদক সহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে এবং হাসিব মেম্বারের নামে দৌলতপুর থানায় মারামারি, বিস্ফোরক সহ মোট ৯ টি মামলা রয়েছে । তাদের ভয়ে এলাকার মানুষ কেউ মুখ খুলতে চাইনা যে তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলে তাদের করা মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন। তাই কেউ মুখ খুলতে চাইনা। কিন্তু আর কত। আমরা চাই এই সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধ হোক।
এ বিষয়ে হাসিবুর রহমান হাসিব মেম্বারের সাথে যোগাযোগ কারার চেষ্টা করলে তাকে পাওয়া যায় নাই।
এ বিষয়ে দৌলতপুর থানা অফিসার ইনচার্জ মজিবুর রহমান ও দৌলতপুর ভেড়ামারা সার্কেলর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহসীন আল মুরাদ ঘটনা স্থান পরিদর্শন করেন এবং লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠান।
এ বিষয়ে দৌলতপুর থানা অফিসার ইনচার্জ মজিবুর রহমান বলেন, হাসিব মেম্বার ও রেন্টু ইসলামে মাঝে পূর্বে থেকে শত্রুতা চলে আসছে। গত বুধবার সন্ধ্যায় সে বাড়ি ফেরার পথে তার উপর অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। পরে দৌলতপুর হাসপাতালে নিলে তাকে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করে। ঘটনা স্থানে পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। ঘটনা স্থানে থেকে কয়েক জনকে আটক করা হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য।