দৈনিক তালাশ.কমঃপবিত্র ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের (নাসিক) ১৮টি পশুর হাটের মধ্যে ১৭টি হাটের ইজারা সম্পন্ন হয়েছে। স্থগিত রয়েছে একটি হাটের ইজারা।মঙ্গলবার (২০ জুন) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে এ ইজারা সম্পন্ন হয়।
ইজারা সম্পন্ন হওয়া হাটগুলো হলো, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১নং ওয়ার্ডে সিআই খোলা বালুর মাঠ, ৩নং ওয়ার্ডে সানারপাড় লিথি গার্মেন্টস সংলগ্ন মৌলঅী মোঃ ফজলুর রহমান এর খালি জায়গা, একই ওয়ার্ডে মাদানী নগর ব্রীজ সংলগ্ন আল-আমিন গার্মেন্টস এর পশ্চিম পাশের বালুর মাঠ, ৪নং ওয়ার্ডের তাজ জুট বেকিং লিঃ এর পশ্চিম পাশের খালি মাঠ, টাইগার অয়্যার রি-রোলিং মিলস এর মাঠ, ৫নং ওয়ার্ডের ওমরপুর সিদ্ধিরগঞ্জ বাজার রোডের পাশে জালাল উদ্দিন সাহেবের বালুর মাঠ, ৭নং ওয়ার্ডে নাভানা সিটির বালুর মাঠ, ৮নং ওয়ার্ডে গোদনাইল ইব্রাহীম টেক্সটাইল মিলস এর খালি মাঠ (রেল-লাইনের পশ্চিম অংশ), ৯নং ওয়ার্ডে জালকুড়ি উত্তর পাড়া দশ পাইপ সংলগ্ন মোতালিব বেপারীর বালুর মাঠ, ওয়াপদা রোডের উত্তর পার্শ্বের হাসনাত খিরত আলী মসজিদ সংলগ্ন বালুর মাঠ, ১৯নং ওয়ার্ডের সামিট পাওয়ার প্ল্যান্টের পেছনে খালি জায়গায় অস্থায়ী পশুর হাট, ২০নং ওয়ার্ডে সোনারকান্দা মাঠের পশ্চিম পাশের খালি জায়গা, ২১নং ওয়ার্ডে স্কুল ঘাট সংলগ্ন বালুর মাঠ, ২৪নং ওয়ার্ডে কাইতাখালি গোলন্দাজ সাহেবের খালি জায়গা, নবীগঞ্জ গুদারাঘাট সংলগ্ন খালি জায়গা (খেলার মাঠ ব্যাতিত) ও ২৫নং ওয়ার্ডের উত্তর লক্ষণখোলা খেয়াঘাট সংলগ্ন খালি জায়গা।
গত ১৭ জুন থেকে শুরু হয় দরপত্র বিক্রয়। আজ ২০ জুন জমা নেওয়া হয় এবং এরপর বিকালে দরপত্র খোলা হয়।
এদিকে সবকটি হাটের ইজার সম্পন্ন হলেও ২৩নং ওয়ার্ডে পূর্বপাড়া লতিফ হাজীর মোড় সংলগ্ন ব্যক্তি মালিকানাধীন খালি জায়গা, কাবিলার মোড় সংলগ্ন কাশেম জামালের খালি জায়গার হাটটি হওয়ার কথা সেটা সম্পন্ন হয়নি। কারণ, সেই হাটের দুই ইজারাদার সাখাওয়াত হোসেন সুমন পে-অর্ডার করেন ৫ লক্ষ ৬ হাজার টাকা এবং জানম এন্টারপ্রাইজ পে-অর্ডার করেন ৫ লক্ষ টাকা। সে হিসেবে সাখাওয়াত সুমনের হাটটি পাওয়ার কথা থাকলেও পে-অর্ডারে ভুল থাকায় সেটা স্থগিত করা হয়। তবে জানম এন্টারপ্রাইজের দাবী সাখাওয়াত সুমনের ভুল হওয়ায় হাটটি তারা পাবেন।
এ বিষয়টি স্বীকার করে নাসিক টেন্ডার ওপেন কমিটির সদস্য আব্দুর রাজ্জাক গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, কাবিলার মোড় সংলগ্ন কাশেম জামালের খালি জায়গার হাটটি এখনও ইজারা সম্পন্ন হয়নি। এই হাটে দুজন ইজাদার তাদের পে-অর্ডার করলেও হাটটি আমরা কাউকে দিতে পারিনি। কারণ, একজন ইজাদার ৫ লক্ষ টাকা পে-অর্ডার করে, আর অপরজন তার থেকে মাত্র ৬ হাজার টাকা বেশি পে-অর্ডার করলেও তার পে-অর্ডারে ভুল থাকায় হাটটি আপাতত স্থগিত রয়েছে। আগামী এক-দু’দিনের মধ্যে টেন্ডার যাচাই-বাছাই কমিটির মিটিং শেষে এ বিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেয়া হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, দেখেন এ বিষয়ে আমি কোন মন্তব্য করতে পারিনা। তবে আপনাদের একটা উদাহরণ দিতে পারি। সেটা হলো, ধরেন একজন ইজাদার একটি হাটের জন্য ১০ লাখ টাকা পে-অর্ডার করেছে এবং তার পে-অর্ডারে ভুল আছে, অপর আরেকজন যদি ভুল ছাড়া ৫ লাখ টাকা পে-অর্ডার করে, তাহলে কিন্তু হাটটি নিয়ম অনুযায়ি ৫ লাখ টাকার ইজাদারই পাবে।
এদিকে জানম এন্টারপ্রাইজের পক্ষ থেকে জাহাঙ্গীর জানান, সাখাওয়াত সুমন আমাদের চাইতে ৬ হাজার টাকা বেশী দিলেও তাদের ভুলের জন্য টেন্ডারটি বাতিল হবে। কারণ, তারা ভ্যাট ও ট্যাক্স বাবদ ২৬ হাজার টাকা কম প্রদান করেছে। এছাড়াও সিডিউলে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে, শতকরা একশ ভাগ টাকা জমা দিতে হবে, কোন প্রকার কাটাছেড়া চলবেনা। তারা হিসেবের চাইতে ২৬ হাজার টাকা কম দিয়েছে সে হিসেবে তাদের এ দরপত্রটি বাতিল হবে। এছাড়াও ওই ২৬ হাজার টাকার পরিবর্তে তারা প্রায় ৮০ হাজার টাকার ও একটি পে-অর্ডার অবৈধভাবে দিতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ে। যার ভিডিও আমাদের কাছে রয়েছে। তবে এ সমস্যার সমাধান কখন করা হবে, সে ব্যাপারে আমাদের কিছু জানানো হয়নি।
তবে এ বিষয়টি সম্পূর্ণ এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন ইজাদার সাখাওয়াত সুমন। তিনি প্রথমে সাংবাদিকদের সামনে নিজেকে ইজাদার বলে পরিচয় দিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে তিনি বলেন, নাতো আমাদের পে-অর্ডারে কোন ভুল হয়নি। হয়তো কাগজপত্র জমা দেওয়ার সময় পে-অর্ডারের ওই কাগজটা ভুল বশত জমা দেওয়া হয়নি।