নারায়নগঞ্জে বাংলাদেশ নৌ-পরিবহনে নানা অনিয়মের কারণে শ্রমিক ফেডারেশন এর মানব বন্ধন

দৈনিক তালাশ.কমঃনদীপথ রক্ষায় নিয়োজিত বাল্কহেড নৌপরিবহন লোড ও আনলোড ড্রেজার শ্রমিকসহ অন্যান্য নৌশ্রমিক এবং নৌ সেক্টরকে অনিয়ম অব্যবস্থাপনা হয়রানী ও বিড়ম্বনা থেকে রক্ষা এবং শ্রমিকদের হামলা মামলা জেল-জুলুম থেকে পরিত্রানের দাবীতে নগরীতে মানব বন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রবিবার (১১ জৃন) বিকাল ৪ টায় বাংলাদেশ নৌ-পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন এর আয়োজনে নগরীর চাষাড়া নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলনায়তনের সামনে অনুষ্ঠিত হয় এ মানববন্ধন।

উক্ত মানববন্ধনে এ সময় বক্তারা বলেন,
নদীমাতৃক বাংলাদেশ সেই বাংলাদেশের নদনদীর পানির গতিধারা স্রোতদ্বারা কেড়ে নেওয়ায় বা চলে যাওয়ায় পানির উচ্চতা কমে আসছে, অর্থাৎ পানির স্তর দিনদিন
নিচে নেমে যাওয়ায় ইতিমধ্যে অনেক নদী শুকিয়ে গেছে এবং অন্যান্য নদীগুলি শুকিয়ে যাওয়ার পথে। এই অবস্থায় নদীমাতৃক বাংলাদেশ নদী বাংলার মা, এই মাকে কৃত্রিম উপায়ে হলেও বাঁচিয়ে রাখতে
হবে। কারণ নদী বাঙ্গালী জাতির ঐতিহ্য তাছাড়া সহজ উপায়ে মালামাল পরিবহন করা হয়। তাছাড়া সুপ্রীয় পানি, গাছপালা, ফসলাদী অর্থাৎ জমি উর্বরতার জন্য নদী ও পানি প্রয়োজন। সেই বাংলার গর্বকে আমাদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে এবং নদীকে ঘিরে হাজার হাজার নৌযান লক্ষ লক্ষ শ্রমিক মালিক জীবিকা অর্জন করে চলেছে। সেই শুকিয়ে যাওয়া নদী কৃত্রিম উপায়ে হলেও বাঁচানো বা টিকিয়ে রাখার
সহজ মাধ্যম নদীর তলদেশের বালুমাটি উত্তোলন করে নদী গভীর করে নদী সৃষ্টি করা এবং ঐ নদীর মাধ্যমে নদী মাতৃক বাংলাদেশ ধরে রাখা। নৌ মন্ত্রনালয়ের বিআইডব্লিউটিএ এর মাধ্যমে বালুমহল
ইজারা প্রদান করতে হবে, কারণ তাদের লোকবল নদী দিয়া জাহাজ চালায়, কোথায় নদী শুকিয়ে গেছে বা নদী গভীর আছে, তারা জানে। তাদের পাইলট বিভাগ এর পাইলটরা কোন নদীর কোন স্পডে কতটুকু গভীরতা তাহা জানে। তাছাড়া সমস্ত কর্মকর্তা কর্মচারী নদীর কার্যক্রম তথা বয়া বাতি মার্কা ও নদী খনন নিয়ে ব্যস্ত থাকে। কাজেই তাদের দায়িত্বে বালু মহলের ইজারা দেওয়া উচিত। তাহলে বালু উত্তোলন খনন সঠিক হবে, নদী পুনরায় ভরাট হবে না এবং এভাবে খনন করিলে সরকারের কোন
টাকা পয়সা খরচ হবে না, উপরোক্ত বালু উত্তোলন থেকে সরকারের আয় হবে, রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে এবং ঐ বালু মাটি পরিবহন করে নিয়ে বাল্কহেড নৌযান এর মালিক ও শ্রমিক এর জীবিকা অর্জিত হবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় বালু মহল ইজারা ডি.সি সাহেব দেওয়ার কারণে সঠিক ভাবে সঠিক সময় সঠিক জায়গায় বালু মহল ইজারা হচ্ছে না। কারণ ঐ মন্ত্রনালয় কোথায় নদীর গভীরতা কোথায় নদী শুকিয়ে গেছে, নদীর অবস্থান জানার মত অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ লোকজন কখনো দেখি নাই। তাছাড়া ডি.সি সাহেব
কে বিআইডব্লিউটিএ এর বালু মাটি উত্তোলন এর স্থানের প্রতিবেদন দেওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে ঐ বিআইডব্লিউটিএ এর প্রতিবেদন নিয়ে বা দিয়ে বালু মহল ইজারা দেওয়ার নজির কমই দেখছি। বালু
মহল নিয়ে একটা অচলবস্থা দীর্ঘদিন থেকে। এইটার একটা বিহীত হওয়া উচিত সুরহা হওয়া দরকার । যেখানে লোডিং ড্রেজার এর মাধ্যমে বালু উত্তোলন হয় সেখানে অবৈধ বালুর নামে বা ব্যাপারে কোন
ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না অথচ পরিবহন করে নিয়ে যাওয়া বাল্কহেড নৌ পরিবহন শ্রমিকদের বিরুদ্ধে মামলা, হামলা, জেল-জুলুম, নৌযান আটকে রাখা সহ সীমাহীন বিড়ম্বনা ও অনিয়ম থেকে মুক্তি চায় বাল্কহেড নৌ শ্রমিকরা।

বাংলাদেশ নৌ-পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারন সম্পাদক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বেপারীর সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে এ সময় বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মাহমুদ হোসেন, মিজানুর রহমান সুকানী, আনিসুর রহমান মাষ্টার, আবুল বাশার মাষ্টার, আলী আকবর, লাদেন মাষ্টার, জুয়েল রানা, হাবিবুর রহমান, কবির বকুল সহ প্রমূখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *