দৈনিক তালাশ ডটকম : বৃহস্পতিবার (২৫ মে) অভিযান পরিচালনা করে রাজধানীর পল্লবী এলাকায় শতাব্দী আনন্দধারা হাউজের একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত মামলার প্রধান আসামী স্ত্রীর নাম সুমাইয়া আক্তার রোজি ওরফে রোজিনা (৩৫)। সে বরিশাল উজিরপুর উপজেলার শিখারপুর গ্রামের লিয়াকত হোসেনের মেয়ে ও নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার বাবুরাইল ব্যাপারী পাড়া এলাকার নিহত মোহাম্মদ রানার স্ত্রী।
র্যাব জানায়, গত বছরের ৮ডিসেম্বর নগরীর ১নং বাবুরাইল এলাকায় পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীর ছুরিকাঘাতে স্বামীকে হত্যারঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় নিহতের বাবা আহম্মদ আলী বাদী হয়ে নারায়য়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর থেকে নিহতের স্ত্রী, আসামী রোজিনা আত্মগোপনে চলে যায়। আত্মগোপনে গিয়ে আসামী রোজিনা বিভিন্ন ছদ্মবেশ ধারন করে নিজেকে আড়াল করে রেখেছিল। সে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভিন্ন ভিন্ন পরিচয় দিয়ে কাজে নিযুক্ত হয়। উল্লেখিত বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি সংগ্রহসহ চাঞ্চল্যকর ও নৃশংস এই হত্যা মামলার আসামীকে গ্রেফতারের জন্য র্যাব-১১ গোয়েন্দা দল ছায়া তদন্ত শুরু করে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় আসামী রোজিনা পল্লবী এলাকায় শতাব্দী আনন্দধারা হাউজের একটি বাসায় নিজের পরিচয় গোপন করে কাজের বুয়ার পেশায় নিযুক্ত আছে। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-১১বৃহস্পতিবার আসামীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
র্যাব-১১ উপ-পরিচালক (স্কোয়াড্রন লীডার) এ কে এম মুনিরুল আলম এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ভিকটিম মোহাম্মদ রানা ১নং বাবুরাইল মোবারক শাহ রোড’র রাজন মিয়ার বাড়ীর ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করত এবং স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার রোজি ওরফে রোজিনা ময়মনসিংহ ভালুকার সিস্টোর নামক এলাকায় বসবাস করত। ভিকটিম মোহাম্মদ রানা একটি ঔষধ কোম্পানীতে এবং স্ত্রী রোজিনা একটি এনজিওতে চাকুরী করত। স্বামী ও স্ত্রী দুজন দুটি আলাদা স্থানে চাকুরী করার কারণে আলাদা ভাবে বসবাস করত। মাঝে মধ্যে স্ত্রী রোজিনা তার স্বামীর বাসায় এসে দেখা স্বাক্ষাৎ করে চলে যেত। দুজন ভিন্ন স্থানে বসবাস করার কারণে দুজনের সম্পর্কের মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি হয় এবং পারিবারিক কলহের রূপ নেয়। এই কলহের জেরে দুজনের মধ্যে প্রায় সময় ঝগড়া-বিবাদ ও তর্ক-বির্তক লেগে থাকত।গত ৭ ডিসেম্বর রোজিনা তার স্বামীর বাসায় আসলে ভিকটিম তার বাবাকে স্ত্রীর বাসায় আসার বিষয়ে ফোন করে জানায় এবং ভিকটিমের বাবা ফোন পেয়ে বাসায় এসে তাদের সাথে দেখা করে চলে যায়।
তিনি আরও জানায়, ঘটনার দিন রাতে ভিকটিমের স্ত্রী রোজিনা ধারালো ছুরি দিয়ে ভিকটিমকে এ্যালোপাথারি কুপিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে রাখে। ভিকটিমের চিৎকার শুনে পাশের রুমের ভাড়াটিয়া রেশমা বেগম এসে দেখতে পায় ভিকটিম গুরুত্বর আহত অবস্থায় পড়ে আছে এবং ভিকটিম রেশমা বেগমকে জানায় তার স্ত্রী তাকে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে আহত করে পালিয়েছে। পরবর্তীতে বাসার মালিক ও আশেপাশের লোকজন ভিকটিমকে গুরুত্বর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপালে নিয়ে যায়। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিম রানাকে মৃত ঘোষণা করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।