দৈনিক তালাশ ডটকম : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে মোশারফ বাহিনীর বিরুদ্ধে রংধনু গ্রুপের পরিচালক কে গুলি করে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। মোশারফ বাহিনীর প্রধান মোশারফ হোসেনকে গ্রেফতার করা হলেও আইনশৃংখলা বাহিনীর উপর হামলা চালিয়ে তাকে ছিনিয়ে নেয়া হয়। এসময় হামলায় পুলিশ,পথচারী, এলাকার নিরীহ মানুষসহ আহত হয়েছে অন্তত ১৫ জন। এতে করে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় নারীসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৫ মে) সকাল ১১টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নাওড়া এলাকায় ঘটে এ ঘটনা।প্রত্যক্ষদর্শী,পুলিশ ও স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, রংধনু গ্রুপের পরিচালক ও জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মিজানুর রহমান মিজানসহ ১০ থেকে ১৫ জন মিলে নাওড়া এলাকার চিনখলা এলাকার নিজেদের জমি দেখতে যান। এসময় হঠাৎ করে মোশারফ হোসেন, তার ছেলে নিরব ও স্বাধীনসহ তাদের সহযোগী আব্বাস, নাজমুল, আনার হোসেন, সাখাওয়াত উল্লাহ, জয়নাল, লিটন, তাজাল, রায়হান, রিফাত, রাজু, রোবেলসহ অন্তত ৭০ থেকে ৮০ জন সন্ত্রাসী পিস্তল, রামদা, চাপাতি, জুইত্তা, সর্টগানসহ বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রংধনু গ্রুপের পরিচালক মিজানুর রহমান মিজানসহ তার লোকজনের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় মিজানুর রহমান মিজানকে হত্যার উদ্দেশ্যে কয়েক রাউন্ড গুলি বর্ষণ করা হয়। পরে এলাকাবাসী এগিয়ে এসে মিজানুর রহমান মিজানসহ তার লোকজনকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়ার পথে হামলা চালানো হয়। এতে করে বেশ কয়েকজন আহত হন।খবর পেয়ে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ, জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ডিবি ও র্যাব-১১ এর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌছে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারসহ হামলাকারীদের গ্রেফতার করতে অভিযানে নামেন। অভিযানকালে আইনশৃংখলা বাহিনীকে লক্ষ্য করে এলোপাথারীভাবে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে । এক পর্যায়ে মোশারফ হোসেনকে গ্রেফতার করে ফেলে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা। এরপর মোশারফ হোসেনের অনুসারীরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপর হামলা চালিয়ে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এসময় রূপগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর (ওসি/তদন্ত) আতাউর রহমান, এএসআই সহিদুল হকসহ ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করেন। এক পর্যায়ে আনোয়ার হোসেন আনু নামের এক হামলাকারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে নারায়ণগঞ্জ জেলা সহকারী পুলিশ সুপার (বি-সার্কেল) আবির হোসেন ও রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম সায়েদের নেতৃত্বে আরো বেশি সংখ্যক আইনশৃখংলা বাহিনীর সদস্য নিয়ে আবারো অভিযান পরিচালনা শুরু করেন। অভিযানকালে পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় আলো আক্তার, জায়েদা খাতুন, মারুফা নামে ৩ নারীকে গ্রেফতার করে।
এ বিষয়ে রংধনু গ্রুপের পরিচালক মিজানুর রহমান মিজান বলেন, আজকে আমাকে গুলি করে হত্যার উদ্দেশ্যে এ হামলা চালানো হয়েছে। আমার ভাই রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান আলহাজ রফিকুল ইসলামসহ আমার পরিবারের সদস্যরা সাধারন মানুষকে আপদে-বিপদে পাশে থেকে কাজ করায় এবং সন্ত্রাসী কর্মকান্ডসহ অপরাধ করতে না দেয়ায় আমাদের পরিবারের সদস্যদের বার বার হত্যার চেষ্টা চালানো হয়।
এ বিষয়ে মোশারফ হোসেনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমাদের একটি ৫ বিঘা পুকুর রয়েছে। ওই পুকুরটি রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও তার ভাই মিজানুর রহমান জোরপুর্বক ভরাট করে ফেলছে। এতে বাঁধা দেয়ায় আমাদের উপর হামলা চালালে এ ঘটনা ঘটে। তবে গুলির ঘটনা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম সায়েদ বলেন, ইতিমধ্যে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরো গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।