প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভাষার ওপর পড়াশোনা করলে অনেক মানুষ ও জাতি সম্পর্কে জানা যায়। যেহেতু আমরা মাতৃভাষা রক্ষায় রক্ত দিয়ে পথ দেখিয়েছি, তাই সারাবিশ্বের মাতৃভাষা সংরক্ষণ ও গবেষণায়ও জোর দিতে হবে। এক সময় বলা হতো অন্য ভাষা থেকে অনুবাদ করার দরকার নেই। আমি মনে করি এটা দরকার। বিভিন্ন দেশের সাহিত্য ও ইতিহাস অনুবাদ করে আমাদের ছেলে-মেয়েদের দেওয়া দরকার।
সারাবিশ্বের যুদ্ধ বন্ধ হোক, শান্তি আসুক: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল ডিভাইসে দেখি অনুবাদ করে। এই অনুবাদ করতে গিয়ে এমন উদ্ভট কিছু লেখে, ভাষার বিকৃতি হয়ে যায়। এটিতে নজর দেওয়া উচিত। অনুবাদ ডিভাইসে হয়ে যায় ঠিক, কিন্তু সেটা ঠিকমতো হলো কি না, ভুল হলে সংশোধন করে বাজারজাত করা উচিত।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘মাতৃভাষার ধ্বনি সারাবিশ্বে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। অনেকে এ নিয়ে লজ্জা পেয়ে যান, ভুল হলো কি না। আমি সেটা মনে করি না। লজ্জা পাই না। ভুল নিয়ে আমি চিন্তা করি না। আমি মনে করি, আমি আমার মতো করে আমার কথাটা বুঝাতে পারলাম কি না। ভুল হলো কি না- এই চিন্তায় আমরা অনেক সময় কথাই বলতে পারি না। এটা কিন্তু ঠিক না। আমি নিজেও শুধু বাংলাটাই ভালোভাবে পারি। আমি বাংলা সাহিত্যে পড়েছি। ইংরেজি ভালো করে পারতাম না।সরকারপ্রধান বলেন, ‘মাতৃভাষা ও সাহিত্য নিয়ে আমাদের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট এবং বাংলা একাডেমিকে একই সঙ্গে কাজ করতে হবে। একে অপরের পরিপূরক হিসেবে কাজ করতে হবে। আমরা সেটাই চাই।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য আমাদের ইতিহাস বিকৃতি করা হয়। ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করেছিল। কিন্তু এখন আর সেদিন নেই। এখন মানুষ সঠিক ইতিহাস জানতে পারছে। শুধু ইতিহাস নয়, ভাষারও বিকৃতি শুরু হয়েছিল। আরবি ভাষায় বাংলা লিখতে হবে, পরে আবার ল্যাটিন ভাষায় বাংলা লিখতে হবে, এমন সিদ্ধান্ত এসেছিল। আমাদের ছেলে-মেয়েরা সেটারও প্রতিবাদ করেছিল।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। এতে আরও বক্তব্য দেন- প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, ইউনেসকোর বাংলাদেশের দেশীয় পরিচালক কিনোট স্পিকার অধ্যাপক শিশির ভট্টাচার্য। স্বগত বক্তব্য দেন উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান।