খেলাধুলা ডেস্ক : প্রথম ইনিংসে চমৎকার পারফরম্যান্স উপহার দেওয়া আয়ারল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা দ্বিতীয়ভাগে নিজেদের হারিয়ে খুঁজলেন। একপ্রান্ত আগলে রেখে একাই লড়াই করলেন হ্যারি টেক্টর। কিন্তু পারলেন না ইনিংস ব্যবধানে হার এড়াতে। তাদেরকে গুঁড়িয়ে টেস্ট ক্রিকেটে নিজেদের শততম জয় তুলে নিল শ্রীলঙ্কা। গলে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে শুক্রবার শ্রীলঙ্কা জয় ইনিংস ও ১০ রানে। প্রথম ম্যাচেও ইনিংস ব্যবধানে জিতেছিল স্বাগতিকরা। বড় দৈর্ঘ্েযর ক্রিকেটে ৩১১ ম্যাচে এসে জয়ের সেঞ্চুরি করল লঙ্কানরা। তারা হেরেছে ১১৯ ম্যাচ, ড্র ৯২টি। আয়ারল্যান্ডের ৪৯২ রানের জবাবে শ্রীলঙ্কা ৩ উইকেটে ৭০৪ রান করে নিজেদের ইনিংস ঘোষণা করে।
দ্বিতীয়ভাগে খেলতে নেমে স্রফে ২০২ রানে গুটিয়ে যায় সফরকারীরা। টেস্টে এক ইনিংসে ৪৫০ রানের বেশি করেও চতুর্থ দল হিসেবে ইনিংস ব্যবধানে ম্যাচ হারল আয়ারল্যান্ড। অন্য তিন দল- ইংল্যান্ড, ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়া প্রবাথ জয়াসুরিয়া দ্বিতীয়ভাগে নেন আরও দুটি। গত বছর এই সংস্করণে পা রাখা বাঁহাতি স্পিনার ৭ টেস্টেই নিলেন ৫০ উইকেট। টেস্ট ইতিহাসে স্পিনারদের মধ্যে যা দ্রুততম পঞ্চাশ উইকেট নেওয়ার রেকর্ড। ১৯৫১ সালে ক্যারিয়ারের অষ্টম টেস্টে ৫০ উইকেট পূরণ করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক বাঁহাতি স্পিনার আলফ ভ্যালেন্টাইন। লঙ্কানদের এই জয়ে অবদান কম নয় রমেশ মেন্ডিসের। এই অফ স্পিনার দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৪ রান দিয়ে ধরেন ৫ শিকার। এনিয়ে তৃতীয়বার ইনিংসে পাঁচ উইকেট পেলেন তিনি। ২ উইকেটে ৫৪ রান নিয়ে পঞ্চম ও শেষ দিন শুরু করে আয়ারল্যান্ড। সুযোগ ছিল তাদের ম্যাচটি ড্র করার। কিন্তু টেক্টর ছাড়া সেভাবে লড়াই করতে পারলেন না কেউই। চারে নেমে ৩ ছক্কা ও ৮ চারে ৮৫ রান করেন তিনি। দিনের তৃতীয় ওভারে ধাক্কা খায় আয়ারল্যান্ড। আসিথা ফার্নান্দোর বাউন্সার হেলমেটের গ্রিলে লাগলে মাঠ ছেড়ে যান অ্যান্ডি বালবার্নি। পরের ওভারে প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান পল স্টার্লিংকে ফিরিয়ে যৌথভাবে দ্বিতীয় দ্রুততম ৫০ উইকেট পূর্ণ করেন জয়াসুরিয়া। কিছুক্ষণ পর আসিথার শর্ট বল গায়ে লেগে বোল্ড হয়ে যান লর্কান টাকার। রমেশকে সুইপ করে ক্যাচ তুলে দেন আগের ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান কার্টিস ক্যাম্পার। ১০৩ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা দলের হাল ধরতে মাঠে ফেরেন বালবার্নি। টেক্টরকে নিয়ে দলের রান বাড়াতে থাকেন তিনি। তাদের দুই দফার জুটিতে রান আসে মোট ৬২। ৫ চারে ৪৬ রান করা বালবার্নিকে ফিরিয়ে এই জুটির প্রতিরোধ ভাঙেন রমেশ। পরপর দুই ওভারে অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন ও গ্রাহাম হিউমকে ফিরিয়ে পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন রমেশ। ম্যাথু হামফ্রেজকে নিয়ে ইনিংস হার এড়ানোর লড়াই চালান এক প্রান্ত আগলে রাখা টেক্টর। পরপর দুই বলে তার ও বেন হোয়াইটের স্টাম্প ভেঙে দলকে জয়ের উল্লাসে ভাসান আসিথা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আয়ারল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৪৯২
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৭০৪/৩ ডিক্লে.
আয়ারল্যান্ড ২য় ইনিংস: ৭৭.৩ ওভারে ২০২ (আগের দিন ৫৪/২) (বালবার্নি ৪৬, টেক্টর ৮৫*, স্টার্লিং ১, টাকার ১৩, ক্যাম্পার ১২, ম্যাকব্রাইন ১০, হিউম ০, হ্যামফ্রেজ ৪*, হোয়াইট ০; বিশ্ব ৬-১-১৫-০, জয়াসুরিয়া ৩২-৯-৮৮-২, রমেশ ২৭-৬-৬৪-৫, আসিথা ১১.৩-২-৩০-৩, ধনাঞ্জয়া ১-০-৩-০)
ফল: শ্রীলঙ্কা ইনিংস ও ১০ রানে জয়ী
সিরিজ: ২ ম্যাচের সিরিজে ২-০তে জয়ী শ্রীলঙ্কা
ম্যান অব দা ম্যাচ: প্রবাথ জয়াসুরিয়া
ম্যান অব দা সিরিজ: কুসাল মেন্ডিস