গোষ্ঠীর বয়োজ্যেষ্ঠ ভাইয়ের সাথে দীর্ঘদিন পর হৃদয়স্পর্শী সাক্ষাৎ পারিবারিক ঐক্যের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন

দৈনিক তালাশ ডটকমঃ সৈয়দ মহসীন হাবীব সবুজ, টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি:পারিবারিক সম্পর্কের বন্ধন যখন দুর্বল হয়ে পড়ে, তখন মানবতা ও ধর্ম দুটোই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু গাজীপুরে ঘটে গেল এক উজ্জ্বল ব্যতিক্রম। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর গোষ্ঠীর বয়োজ্যেষ্ঠ ভাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে পারিবারিক ঐক্যের এক অনন্য নজির স্থাপন করলেন সাংবাদিক সৈয়দ মহসীন হাবীব সবুজ, হাফেজ সৈয়দ নুরুন্নবী হোসেন রজত ও ডাক্তার জহিরুল ইসলাম তালুকদার।

শুক্রবার (২৫ জুলাই) গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ধীরাশ্রম বাগানবাড়িতে অনুষ্ঠিত হয় এই হৃদয়ছোঁয়া সাক্ষাৎ। স্থানটি ছিল অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন সিজারের নিজ বাসভবন। সিজার সাহেব বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের এমটি সেকশনের সাবেক ফরম্যান ছিলেন। তাঁর দেশের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বাংড়া গ্রামে।

বিষয়টি আরও তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে এই কারণে যে, সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন সিজার শুধু বড় চাচার পুত্রই নন, বরং তাঁর স্ত্রী সৈয়দা মলি, সাংবাদিক সৈয়দ মহসীন হাবীবের আপন ফুপুর কন্যা। এই দ্বৈত আত্মীয়তার বন্ধনকে নবউজ্জীবিত করে পারস্পরিক সম্পর্কের মাঝে নতুন জীবনসঞ্চার ঘটানো হলো।

পরিবারের অতীত ইতিহাসে দেখা যায়, সৈয়দ মহসীন হাবীবের পিতা মরহুম সৈয়দ রকিবল হোসেন এবং তাঁর দুই ভাই – মরহুম সৈয়দ ফেরদৌস হোসেন ও মরহুম সৈয়দ সিদ্দিক হোসেন চান মিয়া – ছিলেন এক অভিন্ন বন্ধনে আবদ্ধ। সময়ের দূরত্ব ও জীবনের ব্যস্ততায় যেথায় দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছিল, সেখানে এ সাক্ষাৎ যেন নবী করিম (সা.) এর সেই গুরুত্বপূর্ণ হাদীসের বাস্তব উদাহরণ হয়ে উঠেছে:

“লা-ইয়াতখুলুল জান্নাতা কাতিয়ার রাহিম”
অর্থাৎ: “রক্তের সম্পর্ক ছিন্নকারী ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না।” (সহীহ বুখারী)

এই সাক্ষাৎ কেবল স্মৃতিচারণে সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং ছিল আত্মার সংযোগ ও হৃদয়ের মেলবন্ধন। এমন সাক্ষাৎ আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যম হিসেবেও বিবেচিত। কোরআনেও স্পষ্ট বলা হয়েছে,

“তোমরা আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করো না।” (সূরা মুহাম্মদ: ২২-২৩)

পারিবারিক মূল্যবোধ যখন ভঙ্গুর হয়ে পড়ছে, তখন এই ধরনের উদ্যোগ নিঃসন্দেহে আমাদের সমাজে উদাহরণ সৃষ্টি করবে। এই সৌহার্দ্যপূর্ণ মিলন শুধু আত্মীয়তার স্মৃতিকে তাজা করেনি, বরং একটি প্রজন্মকে শিখিয়ে দিয়েছে—রক্তের সম্পর্ক কখনো অবহেলার বস্তু হতে পারে না।

এই মানবিক মিলনের মাধ্যমে গোষ্ঠীর সদস্যরা প্রমাণ করলেন, সম্পর্ক যত পুরনোই হোক না কেন, যত দূরেই থাকুক না কেন—ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও ধর্মীয় চেতনায় তা আবারও জেগে উঠতে পারে, যদি আমরা আন্তরিক হই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *