ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে ভূক্তভোগী কুলসুম বেগমের অভিযোগ

দৈনিক তালাশ ডটকমঃ নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রবাসী স্বামীর কষ্টার্জিত অর্থে ক্রয়কৃত সম্পত্তি বেদখল হওয়ার হাত থেকে রক্ষা, স্বামী সন্তানদের জীবনের নিরাপত্তা ও ন্যায় বিচার পেতে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়সহ বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে লিখিত আবেদন করেছেন বরগুনা জেলার পাথরঘাটা থানার মাদারতলী ৫নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা প্রবাসী নূর মোহাম্মদ মীর এর স্ত্রী মোসাঃ কুলসুম বেগম।
আবেদন সূত্রে জানা যায়, গত ২৩/০৬/২০২১ইং তারিখ একই গ্রামের বাসিন্দা মৃত: ওয়াজেদ আলী হাওলাদার এর ছেলে আবুল হাসেমের কাছ থেকে স্বামী নূর মোহাম্মদ মীর ৫২৭, ৫৪৪, ৫৪৫, ৫৩৯, ৫৪২, ৫৪৯, ৫৫৪ ও ৫৪৩নং মোট ০৮ (আট) দাগে ৭শতাংশ জমি ৫,০০,০০০/- (পাঁচ লক্ষ) টাকায় বিনিময়ে জমি ক্রয় করেন যার হেবা বিলওয়াজ নামা দলিল স্বত্ব সম্পত্তির চৌহদ্দির বিবরণ উত্তরে- মহাসড়ক, দক্ষিণে- দাতা নিজ, পূর্বে- দুলাল এর জমি, পশ্চিমে- রাস্তা। প্রকৃতপক্ষে এই চৌহদ্দিতে আবুল হাসেম এর কোন জমি নাই। পরবর্তীতে রায়হানপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের শালিশ মিমাংসার মাধ্যমে ৮টি দাগের মধ্যে ৫২৭ দাগে ৪.৫ (সাড়ে চার) শতাংশ জমি আবুল হাসেম বুঝিয়ে দিলেও বাকী ২.৫ (আড়াই) শতাংশ জমি পরবর্তীতে বুঝিয়ে দিবে বলে জানায় (উল্লেখ্য অদ্যবধি বাকী ২.৫ (আড়াই) শতাংশ জমি বুঝিয়ে দেয়নি)। ৪.৫ (সাড়ে চার) শতাংশ জমি আবুল হাসেম এর কাছ থেকে বুঝে পেয়ে প্রবাসী নূর মোহাম্মদ মীরের স্ত্রী মোসাঃ কুলসুম বেগম তিনতলা ফাউন্ডেশন দিয়ে ১ম তলার কাজ সম্পন্ন করে ২য় তলার কাজ ধরলে প্রতিবেশী মৃত. আবুল হাসেম পহলানের ছেলে মোঃ জাহাঙ্গীর কবির ও জাহাঙ্গীর কবিরের ছেলে মোঃ জুয়েল এসে মোসাঃ কুলসুম বেগমকে বাঁধা প্রদান করলে ২য় তলার কাজ বন্ধ রাখা হয়। এমতাবস্থায় গত ০৬/১১/২০২৩ইং তারিখে মোসাঃ কুলসুম বেগম তার ক্রয়কৃত সম্পত্তিস্থিত গাছ কাটলে মোঃ জাহাঙ্গীর কবির বিজ্ঞ সিনিয়র জুটিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালত-০৪, পাথরঘাটা, বরগুনা ধারা ৪২৭/৪৪৭/৩৮৫/৩৭৯/৫০৬ (রর)/১০৯ দন্ডবিধি মোতাবেক একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে।
এ বিষয়ে ভূক্তভোগী মোসাঃ কুলসুম বেগম জানায়, আবুল হাসেম, আবুল হাসেমের স্ত্রী মোসাঃ ডালিয়া বেগম, আবুল হাসেমের ২ ছেলে মোঃ আলাউদ্দিন ও মোঃ আরিফ, প্রতিবেশী মোঃ জাহাঙ্গীর কবির ও তার ছেলে মোঃ জুয়েল তারা পরস্পর যোগসাজসে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আমার প্রবাসী স্বামীর ক্রয়কৃত সম্পত্তি দীর্ঘদিন যাবত গ্রাস করার পরিকল্পনা করছে। আমার স্বামী প্রবাসে থাকায় সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মোঃ জুয়েল এবং মোঃ আলাউদ্দিন প্রায় সময় কুপ্রস্তাবসহ নানাভাবে আমাকে হেনস্থা করতো। গত ২০২৩ সালে জুয়েল ও আলাউদ্দিন আমাকে ধর্ষণের অপচেষ্টা করলে গত ২৮/০৮/২০২৩ইং তারিখ আমি নারী ও শিশু দমন ট্রাইবুনাল, বরগুনায় একটি মামলা দায়ের করি। উক্ত মামলায় মোঃ জুয়েল জেল হাজতে যায় এবং জামিনে বের হয়ে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে প্রতিনিয়ত কুপ্রস্তাব ও হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে।
তিনি আরো বলেন, তারা একটি সংঘবদ্ধ ভূমিদস্যু, জালিয়াতকারী, দখলবাজ, মাদক ব্যবসায়ী, নারীলোভী ও সন্ত্রাসী চক্র। মোঃ আলাউদ্দিন এর নামে বরগুনা জেলা ও পিরোজপুর জেলার বিভিন্ন থানায় একাধিক মাদক, ডাকাতিসহ মামলা রয়েছে। মোঃ জাহাঙ্গীর কবির নাটেরগুরু ও আওয়ামী সিন্ডিকেটের সদস্য। তার নেতৃত্বে আবুল হাসেম, মোসাঃ ডালিয়া বেগম, মোঃ আলাউদ্দিন, মোঃ আরিফ ও জুয়েল তারা জাল-জালিয়াতি করে আমার প্রবাসী স্বামীর কষ্টে উপার্জিত অর্থে ক্রয়কৃত জমি আত্মসাৎ করার পায়তারা চালাচ্ছে। তারা আমাকে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছে যে, আমি এবং আমার পরিবারের সদস্যদের গুম, খুন, অপহরণসহ আমাদের ফাঁসাতে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলের ভাত খাওয়াবে। তারা যেকোন সময় যেকোন দ্রবাদি দিয়ে মিথ্যা মামলাসহ গুম, খুন, অপহরণ করতে পারে। বর্তমানে আমি খুবই ভয় ও আতঙ্কে মানবেতর জীবন যাপন করছি। তিনি আরো বলেন যে, আমার স্বামী প্রবাসে থাকায় আমি কোন কাজকর্মে বাড়ির বাহিরে গেলে তারা আমার নামে কুৎসা রটনা করে আমার মানসম্মান ক্ষুন্ন করছে।  আমি গত ২১/০৪/২০২৫ইং তারিখে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে উল্লেখিত বিষয়ে তদন্তপূর্বক আমিসহ আমার স্বামী সন্তানদের নিরাপত্তা ও ক্রয়কৃত সম্পত্তি বেদখল হওয়ার হাত থেকে রক্ষা এবং বাকী সম্পত্তি উদ্ধারে ন্যায় বিচার পেতে আবেদন করেছি। এ বিষয়ে মোঃ জাহাঙ্গীর কবিরের মুঠোফোন একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *