মাসিকুলের বিরুদ্ধে বাইতুল হাফেজ জামে মসজিদের জমি দখলের অভিযোগ

দৈনিক তালাশ ডটকমঃ স্টাফ রিপোর্টার: নারায়ণগঞ্জের চানমারি বাইতুল হাফেজ জামে মসজিদের নামে সড়ক জনপথ (সওজের) ৩৪ শতাংশের পুকুর মসজিদের নিজস্ব অর্থায়নে ভরাট করে সেখানে সরকারি মডেল মসজিদ স্থানান্তরের কথা থাকলে অবৈধভাবে মসজিদের জমি ভোগদখল করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক নামধারী নেতা মাসিকুলের বিরুদ্ধে।গত ৫ই আগস্টের পর থেকে তিনি ওই জমির বেশ কিছু অংশ ভোগ দখল করে আসছেন বলে এ বিষয়ে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী ও মসজিদ কমিটি।জমির ভোগদখল ছেড়ে দিতে একাধিকবার মৌখিকভাবে তাকে বলার পরেও জমির দখল ছাড়ছেন না অভিযুক্ত নামধারী এ নেতা। মাসিকুল সদর উপজেলার চানমারি মাউরা পট্টি এলাকার সোলেমান মিয়ার পুত্র। জানা যায়, স্থানীয় এক কাউন্সিলরের আত্মীয় পরিচয়ের প্রভাব খাটিয়ে তিনি এখন এলাকায় বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে।

সরেজমিনে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার চানমারি বাইতুল হাফেজ জামে মসজিদটি রাস্তার মাঝখানে অবস্থিত থাকায় পুরো রোডই প্রায় ব্লক হয়ে যেত। এদিকে রাস্তা প্রশস্ত ১২৯ ফুট রাখার লক্ষে মসজিদ স্থানান্তরে উদ্যোগ নেয় প্রশাসন। দেশের উন্নয়নের স্বার্থে, নারায়ণগঞ্জের মানুষকে যানজট থেকে মুক্তি দিতে শামসুজ্জোহা সড়কটি প্রশস্ত করা হচ্ছে। এর জন্য বাইতুল হাফেজ জামে মসজিদটি স্থানান্তর করে এখানে সরকারীভাবে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল মসজিদ নির্মিত হবার কথা রয়েছে। যা অত্যন্ত আধুনিক এবং সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা সংবলিত থাকবে বলে জানা গেছে।

তবে সরকারি মডেল মসজিদ নির্মাণের কথা থাকলে ও তা আর করা হয়নি। আর মসজিদ স্থানান্তর করতে বললেও সেখানে ছোট একটি মসজিদ বানানো হয়, যার ধারন ক্ষমতা প্রায় ১০০ জন কিন্তু শুক্রবারে জুম্মা পড়তে আগে এ মসজিদে মুসুল্লি আসতো প্রায় ৫-৬ শত জনের মতো। তাছাড়া সরকারি বরাদ্দের ৩৪ শতাংশ জায়গা পুরোটা মসজিদের দখলে নেই বলে দাবি করেছেন মসজিদ কমিটির সদস্য সহ এলাকাবাসী।

এ ব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কাছে একটি অভিযোগ করেছেন বাইতুল হাফেজ জামে মসজিদের পরিচালনা কমিটি।

এলাকাবাসী জানায়, গত ৫ই আগষ্টের পট পরিবর্তনের পর মাসেকুল মসজিদের প্রায় ২০ শতাংশ জমিতে গোডাউন, গ্যারেজ, দোকান ও খামার তৈরি করে এবং সেখান থেকে মাসিক বিপুল অংকের টাকা ভাড়া খাচ্ছে। প্রতি মাসেই (সওজ) এর কার্যালয় থেকে মসজিদ স্থানান্তর করার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়। এছাড়াও কমিটির পক্ষ থেকে একাধিকবার মসজিদের জমি বেদখলের উদ্যোগ নেয়া হলেও নামধারী ঐ নেতা মাসিকুলের নিকট কোনো সুফল পায়নি এলাকাবাসী ও মসজিদ কমিটি। জমির দখল বুঝে নিতে গেলেই নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় মসজিদ কমিটি ও এলাকাবাসীকে। বিভিন্ন তালবাহানাসহ মামলার হুমকি, অশালীন আচরণ ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

স্থানীয় এলাকাবাসী আরও জানায়, ৫ই আগষ্টের পট পরিবর্তনের পর সরকারিভাবে মসজিদের নামে দেওয়া সরকারি জায়গা ভোগ করতে মসজিদের নতুন কমিটি গঠন হয়। সেই সুবাধে মসজিদ কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাসেকুল নামের একজন মসজিদের বেশকিছু জমি অবৈধভাবে দখল করে গোডাউন ভাড়া দিয়ে ভোগদখল করে রেখেছেন। স্থানীয় এক কাউন্সিলরের আত্মীয় পরিচয়ের প্রভাব খাটিয়ে তিনি এ দখলবাজী করছেন বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে মসজিদ কমিটির বর্তমান সভাপতি মোঃ মজিবুর রহমান বলেন, চানমারি বাইতুল হাফেজ জামে মসজিদ স্থানান্তরের জন্য সড়ক ও জনপথ (সওজের) দেয়া ৩৪ শতাংশের পুকুর মসজিদের নিজস্ব অর্থায়নে ভরাট করে সেখানে সরকারি মডেল মসজিদ নির্মাণের কথা থাকলে মসজিদের বেশ কিছু জমিতে গোডাউন করে অবৈধভাবে ভোগদখল করছে মাসিকুল নামের এক নামধারী নেতা। মূলত নিজের ক্ষমতাবলে মসজিদের জমি জোরদখল করে আছেন তিনি। এরআগে এলাকাবাসী এ জমি দখলে বাধাঁ দিলে মাসিকুল ও তার সহযোগীরা তাদের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে ও খুন জখমের হুমকি দেয়।

এব্যাপারে অভিযুক্ত নামধারী নেতা মাসিকুলের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি এই প্রতিবেদকের ফোন রিসিভ করেনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *