দৈনিক তালাশ.কমঃউজ্জ্বল কুমার সরকার নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি: নওগাঁর বাজারে কমতে শুরু করেছে সবজির দাম। তবে এখনো চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মাছ ও মুরগি। এ ছাড়া ডিমের দাম কমলেও বেড়েছে পেঁয়াজের। নওগাঁর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা যায়। কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে বেশিরভাগ সবজির দাম কমেছে ১০-৩০ টাকা পর্যন্ত। বাজারে মান ভেদে প্রতি কেজি আলুর ৬০-৭০ টাকা বেগুন ৭০-৮০টাকা, করলা ৭০-৮০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, লতি ৮০ টাকা, কপি ৭০ টাকা, ধুন্দুল ৫০ টাকা, পটোল ৫০-৬০ টাকা, পেঁপে ২০-৩০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা, গাজর ১৫০ টাকা, কচুরমুখী ৮০ টাকা, লাউ ৫০-৭০ টাকা, শসা ৫০-৬০ টাকা ও চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়। এদিকে বাজারে উঠতে শুরু করেছে শীতকালীন শাক-সবজি। এর মধ্যে টমেটো ১৮০ টাকা, শিম ৮০-১০০ টাকা, ধনেপাতা ১২০-১৪০ টাকা, মানভেদে প্রতি পিস ফুলকপি ৫০-৬০ টাকা, বাঁধাকপি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া লালশাকের আঁটি ২০-৩০ টাকা, পাটশাক ১৫ টাকা, পুঁইশাক ৪০ টাকা, লাউশাক ৫০ টাকা, মুলাশাক ২০ টাকা, ডাঁটাশাক ২৫ টাকা, কলমিশাক ১৫-২০ টাকা ও পালংশাক বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়।
এ সপ্তাহে কমেছে কাঁচা মরিচের দাম। যা খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকায়, আর পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৫০-১৬০ টাকা দরে। এদিকে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা। বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ১২০-১২৫ টাকা, আর ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০-১১০ টাকায়। বাজারে ভোজ্যতেল ও চিনির দাম কমাতে শুল্ক ছাড় দেওয়ার পরও কমেনি পণ্য দুটির দাম, উল্টো বাড়ছে। চলতি মাসের মাঝামাঝি ভোজ্যতেল আমদানিতে শুল্ক ও স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে মূসকে ছাড় দিয়েছে সরকার। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) মনে করে, এর ফলে বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দাম বাড়লেও দেশের বাজারে সহনীয় পর্যায়ে থাকবে। কিন্তু বাজারে দেখা যাচ্ছে উল্টো চিত্র। দাম বাড়ছেই। পাইকারি পর্যায়ে প্রতি ড্রাম (২০৪ লিটার) পাম অয়েলের দাম বেড়ে হয়েছে ২৯ হাজার ৯০০ টাকা। খুচরা ব্যবসায়ীরা প্রতি লিটার পাম অয়েল বিক্রি করছেন ১৫০ টাকা দরে। সপ্তাহ দুয়েক আগে প্রতি লিটার পাম অয়েলের দর ছিল ১৪০ টাকার আশপাশে। সে হিসাবে লিটারে পণ্যটির দাম বেড়েছে ১০ টাকা।
পৌর বাজারের মুদি ব্যবসায়ী করিম ও জব্বার জানান, খোলা সয়াবিনের দরও লিটারে ৫ টাকা বেড়েছে। প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১৫৩-১৫৬ টাকা দরে। ডিম ব্যবসায়ী আশুপাল জানান, প্রতি ডজন লাল ডিম খুচরা পর্যায়ে ১৪৫-১৫০ টাকা ও সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ টাকায়। আর প্রতি ডজন হাঁসের ডিম ২৪০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ২৪০-২৫০ টাকায়। পৌর বাজারের মুরগি ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০-২১০ টাকায় এবং সোনালি মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে হয়েছে ৩৩০ টাকা। আর সাদা লেয়ার ২৬০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩০০ টাকায়। এ ছাড়া জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৬০০ টাকায়। তবে বাজারে অপরিবর্তিত আছে গরু ও খাসির মাংসের দাম। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকায়। এছাড়া, প্রতি কেজি খাসির মাংস ১ হাজার ৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা এবং ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকায়। এদিকে, বাজারে মাছ বিক্রি হচ্ছে আগের বাড়তি দামেই। প্রতি কেজি রুই ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, কাতল ৪০০ থেকে ৪৮০ টাকা, চাষের শিং ৫৫০ টাকা, চাষের মাগুর ৫০০ টাকা, চাষের কৈ ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, কোরাল ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, টেংরা ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা, চাষের পাঙাশ ১৮০ থেকে ২৩০ টাকা ও তেলাপিয়া ১৭০ থেকে ২২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি বোয়াল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, আইড় ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা, দেশি কৈ ১ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা, শিং ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, শোল ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা এবং নদীর পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়। নওগাঁ কাঁচা বাজারের এক সবজি ব্যবসায়ী রহিম মিয়া বলেন, “সরবরাহ বাড়ায় কয়েকটি সবজির দাম সামান্য কমেছে। ঘূর্ণিঝড়ের কোনো প্রভাব না পড়লে, সামনে দাম বাড়ার সম্ভাবনা নেই, বরং আরও কমবে।”নওগাঁ কাঁচা বাজারে আসা দুই ক্রেতা ফাতেমা ও সাহিদা জানান, অনেকটাই কমে এসেছে শাক- সবজির দাম। ডিমের দামও কমেছে। সরকার মনিটরিং বজায় রাখলে বাজার নাগালে রাখা সম্ভব।
নওগাঁ#