নওগাঁয় ৯৭ বছরের অন্ধ হারেজ উদ্দিন নাতির ঘাড়েভর দিয়ে রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে দেখার কেউ নেই

দৈনিক তালাশ.কমঃ উজ্জ্বল কুমার সরকার নওগাঁ: নওগাঁর সাপাহারের ৯৭ বছরের প্যারালাইসিস আক্রান্ত অন্ধ বৃদ্ধ হারেজ উদ্দীন। এক মুঠ ভাত ও ওষুধের আশায় তার ১০ বছরের নাতনির ঘাড়ে ভর করে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে। অসহায় অবস্থায় অন্যের দ্বারস্থ হওয়া ছাড়া উপায় নেই এই অশীতিপর বৃদ্ধের।বুধবার (৪সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টায় কান্নাজড়িত কণ্ঠে শতাব্দী ছুঁই ছুঁই বৃদ্ধ হারেজ উদ্দীন কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তার দুঃখের কথা। তিনি বলেন, আমার এক ছেলের নাম আবু বক্কর। বয়স ৩৫ বছর। অন্ধ সেই ছেলে জন্ম থেকে বাড়িতেই থাকে। ছেলেকে বিয়ে দিয়েছিলাম। দেড় বছরের মাথায় ছেলের বউয়ের জমজ সন্তান হয়। এর মধ্যে ছেলে সন্তানটি মারা যায়। সন্তান জন্মের ৪ মাসের মাথায় বেঁচে থাকা মেয়ে সন্তানটিকে বাড়িতে রেখে অন্য কোথাও পালিয়ে যায় ছেলের বউ। আজ প্রায় ১০ বছর হলো কোনো খোঁজ নেই।

বৃদ্ধ হারেজ বলেন, আমার স্ত্রী রোকেয়া বেগমও (৬৫) ঠিকমতো চলাফেরা করতে পারে না। ৩ মাস পর পর বয়স্কভাতার ১৮৫০ টাকা পাই, তা দিয়ে চাল ডাল কেনাই কঠিন। মাছ-মাংসতো জোটেই না।চার বছর হলো চোখে দেখি না। আর ৮ মাস ধরে প্যারালাইসিস রোগে আক্রান্ত হয়ে হাটতেও পারিনা। দুমুঠো ভাতই জোটে না বলতে গেলে। ওষুধতো কিনব কীভাবে? শতবর্ষী হারেজের কণ্ঠভারী হয়ে আসে। তিনি বলেন, এর কাছে ওর কাছে হাত না পাতলে চার সদস্যের পরিবারে চুলাই জ্বলে না। ঝড় বৃষ্টির দিনে সবচেয়ে কষ্টে দিন কাটে। কোনো কোনো দিন না খেয়েও থাকতে হয়। আবার এক বেলা খেয়েও দিন পার করতে হয়। বাড়ির সবাই খুব কষ্টে আছি, এই তো মোর জীবন বাপ।তিনি আরও জানান, সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিরা যদি একটু আর্থিক সহযোগিতা করতো, তাহলে এই বৃদ্ধ বয়সে একমুঠো ভাতের জন্য রাস্তায় নামা লাগতো না। সমাজের সামর্থ্যবান মানুষদের মানবিক সহায়তার দিকে তাকিয়ে তিনি। বৃদ্ধ হারেজ উদ্দীন সাপাহারের আমডাঙ্গা গ্রামে বসবাস করেন। তার মোবাইল নং ০১৭৪৯ ৩০০ ৫১৩।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *