নওগাঁয় আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলায় সাংবাদিকের ছোট স্ত্রী গ্রেপ্তার

দৈনিক তালাশ.কমঃউজ্জ্বল কুমার সরকার নওগাঁ: নওগাঁর মান্দায় বড় স্ত্রী সূচনা আক্তারকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করার অভিযোগ এনে সাংবাদিক স্বামী ও সতিনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। নিহত সূচনা আক্তারের ভাই আরিফ হোসেন বাদি হয়ে রোববার রাতে মান্দা থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় পর রাতেই অভিযান চালিয়ে সাংবাদিক এমএ রাজ্জাকের ছোট স্ত্রী ফারজানা আক্তারকে (৩০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (১ জুলাই) আদালতের মাধ্যমে তাকে নওগাঁর কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত সাংবাদিক এমএ রাজ্জাক নওগাঁর মান্দা উপজেলার পরানপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ পরানপুর গ্রামের রিয়াজ উদ্দিন সরদারের ছেলে। তিনি ঢাকা থেকে প্রকাশিত একটি দৈনিকের নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি। প্রায় ১৫ বছর আগে রাজধানী ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট এলাকার বাসিন্দা সূচনা আক্তারকে বিয়ে করেন সাংবাদিক এমএ রাজ্জাক। এ স্ত্রীর সঙ্গে চার বছর সংসার করেন। এ পক্ষের একটি মেয়ে ও একটি ছেলে সন্তান আছে।

নিহত সূচনা আক্তারের বড়বোন রেহেনা আক্তার বলেন, চার বছর সংসার করার পর বনিবনা না হওয়ায় বোন সূচনা আক্তারকে রেখে ছেলে-মেয়েকে নিয়ে অভিযুক্ত রাজ্জাক নিজ গ্রামে চলে আসেন। পরবর্তীতে ফারজানা আক্তার নামে আরেক নারীকে বিয়ে করে রাজ্জাক। রেহেনা আক্তার আরও বলেন, গর্ভের সন্তানদের দেখার জন্য বোন সূচনা আক্তার মাঝে মধ্যে রাজ্জাকের বাড়ি আসত। ঈদ উপলক্ষে গত ২২ জুন সূচনা আবারও রাজ্জাকের বাড়ি আসে। এখানে অবস্থানকালে ২৬ জুন কেনাকাটার জন্য সূচনা স্বামী রাজ্জাককে সঙ্গে নিয়ে স্থানীয় গোপালপুর বাজারে যায়। এনিয়ে সতিন ফারজানার সঙ্গে সূচনার হাতাহাতি হয়। পরবর্তীতে সতিন ফারজানা ও স্বামী রাজ্জাকের নির্যাতন সইতে না পেরে বোন সূচনা আত্মহত্যা করে। এ প্রসঙ্গে মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক কাজী বলেন, নিহত সূচনা আক্তারের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় স্বামী রাজ্জাক ও সতিন ফারজানার বিরুদ্ধে মামলা করেন নিহতের ভাই আরিফ হোসেন। মামলার পর সতিন ফারাজানাকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। উল্লেখ্য, সাংবাদিক স্বামী ও সতিনের নির্যাতন সইতে না পেরে গত বৃহস্পতিবার রাতে এক সঙ্গে ৪০টি প্যারাসিটামল ট্যাবলেট সেবন করেন সূচনা আক্তার। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ওই রাতেই মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার সকালে তিনি মারা যান। এর পর স্ত্রী সূচনা আক্তারের লাশ হাসপাতালে ফেলে রেখেই আত্মগোপনে চলে যান সাংবাদিক এমএ রাজ্জাক।
নওগাঁ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *