দৈনিক তালাশ.কমঃউজ্জ্বল কুমার সরকার: আজ ২৮ জুন দেশবরেণ্য বহুমাত্রিক শিল্পী ফেরদৌসী রহমানের শুভ জন্মদিন । মহান এই ঋদ্ধ শিল্পীর শুভ জন্মতিথিতে অতল শ্রদ্ধা ভালবাসা. ও দীর্ঘায়ু জীবন কামনা করছি। উপমহাদেশের প্রথিতযশা সঙ্গীতশিল্পী ফেরদৌসী রহমানের জন্ম হয় ১৯৪১ সালের ২৮ জুন পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহারে।
প্রখ্যাত পল্লীগীতি সম্রাট আব্বাসউদ্দীনের সুযোগ্য কন্যা চিরসবুজ গানের পাখি ফেরদৌসী রহমান। বাবাই তার প্রথম সংগীতগুরু। পরবর্তীতে ওস্তাদ মোহাম্মদ হোসেন খসরু, ইউসুফ খান কোরেইশী, কাদের জামেরী, গুল মোহাম্মদ খান, নাজাকাত আলী খান ও সলামাত আলী খান প্রমুখ নামজাদা ওস্তাদদের কাছ থেকে গানের তালিম নেন তিনি। ১৯৪৮ সালে মাত্র ৮ বছর বয়সে রেডিওতে ‘খেলাঘর’ অনুষ্ঠানে গান করেন। পাঁচ দশকের বেশী সময় ধরে গানের ক্যারিয়ারে পল্লীগীতি, রবীন্দ্রসঙ্গীত, নজরুল সঙ্গীত, আধুনিক, উচ্চাঙ্গসংগীত, প্লে ব্যাক সব ধরনের গানই তিনি করেছেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনের সূচনালগ্ন থেকে সেখানে গাইছেন তিনি। একজন সংগীতশিল্পী এবং প্রজন্মের পর প্রজন্মের সংগীত শিক্ষক হিসেবে যিনি সবার কাছে এক মুগ্ধতার নাম। ফেরদৌসী রহমান বাংলাবাজার স্কুল থেকে এসএসসি, ইডেন কলেজ থেকে এইচএসসি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স এবং পরবর্তীতে তিনি ইউনেস্কো ফেলোশীপ পেয়ে লন্ডনের ট্রিনিটি কলেজ অব মিউজিক থেকে সঙ্গীতের ওপর স্টাফ নোটেশন কোর্স সম্পন্ন করেন। কয়েকটি লংপ্লে সহ প্রায় ৫০০টি ডিস্ক রেকর্ড এবং বেশ কিছু গানের ক্যাসেট বের হয়েছে তাঁর। এ পর্যন্ত প্রায় ৫ হাজার গানের রেকর্ড হয়েছে তাঁর। ফেরদৌসী রহমান বাংলা ছাড়াও উর্দু, ফারসি, আরবি, চীনা, জাপানি, রুশ, জার্মানসহ আরও বেশ কিছু ভাষায় গান গেয়েছেন। সংগীত পরিচালনাও করেছেন তিনি।
সংগীত জীবনের সাফল্যের সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সম্মাননা একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্রের আজীবন সম্মাননা পুরস্কার, সংগীত পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ দেশ-বিদেশের নানা পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন দেশের সংগীতাঙ্গনের এই গর্বিত ব্যক্তিত্ব।
বাংলা সংগীতাঙ্গনের সবার প্রিয়, বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী চিরসবুজ কণ্ঠশিল্পী ফেরদৌসী রহমানের জন্মদিনে জানাই গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাই।
নওগাঁ।