নওগাঁ আজ বৃহস্পতিবার শেষ ও জমজমাট হয়ে উঠছে পশুর হাট

দৈনিক তালাশ.কমঃউজ্জ্বল কুমার সরকার নওগাঁ: নওগাঁয় পশুর হাটগুলোতে কেনাবেচা জমজমাট গরু ও ছাগলের হাট । কোরবানিকে সামনে রেখেই উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা নওগাঁয় জমতে শুরু করেছে পশুর হাটগুলো। আর মাত্র এক দিন পরেই মুসলিম জাহানের দ্বিতীয় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজাহা। ঈদকে সামনে রেখে জেলার পশুর হাটগুলোতে চলছে পশু কেনাবেচার ধুম। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ক্রেতারা এই জেলায় আসছেন কোরবানির পশু ক্রয় করার জন্য। জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলার ১১টি উপজেলায় ৩৪ হাজারের বেশি ছোট-বড় খামারি ও কৃষক ৭ লাখ ২৮ হাজার ১১০টি বিভিন্ন জাতের গরু, মহিষ, ছাগল এবং ভেড়া পালন করেছেন। তার মধ্যে বলদ ২৯ হাজার ১১১টি, গাভী ৬৫ হাজার ৬৮টি, মহিষ ২ হাজার ৪০৩টি, ছাগল ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৯২৯টি ও ভেড়া ৭৫ হাজার ৫৫২টি।জেলায় কোরবানি পশুর চাহিদা ৩ লাখ ৭৮ হাজার ৭৫৯টি। এই চাহিদা মিটিয়ে ৩ লাখ ৪৯ হাজার ৭৫৯টি পশু বিভিন্ন জেলায় বিক্রির জন্য চলে যাবে। জেলায় এ বছর স্থায়ী ও অস্থায়ী অন্তত ৪০টি হাটে কোরবানির পশু বেচা কেনা হবে। সরেজমিনে উপজেলার আবাদপুকুর, আহসানগঞ্জ, গোবরচাঁপা, সতিহাট চৌবাড়িয়াহট আজ ১৬ জুন বৃহস্পতিবার চকগৌরীরহাট সহ কয়েকটি পশুহাট ঘুরে দেখা গেছে, প্রচন্ড গরম উপেক্ষা করে বাজারগুলোতে দূরদূরান্ত থেকে কোরবানি কেনার জন্য আসছেন ক্রেতারা। বাজারে এসে তাদের সাধ্যের মধ্যে পছন্দ অনুযায়ী কিনছেন কোরবানি। কেউবা আবার পশু পছন্দ না হওয়ায় ফিরে যাচ্ছেন।কোরবানি কিনতে আসা মোজাম্মেল হোসেনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সন্তুষ্টি লাভের জন্য আমি পশুর হাটে কোরবানি পশু কেনার জন্য এসেছি। হাটে প্রচুর গরু আমদানি হয়েছে। পছন্দ হলে গরু ক্রয় করে আজকেই বাড়িতে নিয়ে যাব ইনশাল্লাহ।

আরও এক কোরবানি ক্রেতা শামসুল আলমের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, তারা সাত ভাগে গরু কোরবানি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সাত ভাগে যে পরিমাণ টাকা উঠেছেন তাই দিয়ে পশু কেনার জন্য বাজারে এসেছি। তিনি আরও বলেন, বিগত বছরের তুলনায় এবছর পশুর দাম বেশি মনে হচ্ছে। তবে আল্লাহ তালার সন্তুষ্টি লাভের জন্য সুন্দর একটি পশু ক্রয় করব ইনশাআল্লাহ। ঢাকা থেকে আসা পশু ব্যবসায়ী মনসুর আলী বলেন, আমি ঢাকা থেকে প্রতিবছর এই জেলায় কোরবানির পশু কেনার জন্য আসি। তারই ধারাবাহিকতায় এই বছরও গরু-ছাগল কেনার জন্য এসেছি। তিনটি গরু কেনা হয়েছে। আরো কিছু কিনতে হবে। স্থানীয় মানুষ সহযোগিতায় এসব গরু কিনে থাকি। এখান থেকে গরু ক্রয় করে ঢাকায় নিয়ে গিয়ে বিক্রয় করি। পশু বিক্রেতা আব্দুল কুদ্দুস বলেন, হাটে তিনটি গরু নিয়ে আসেছি দুইটি ষাঁড় গরু, একটি বলদ গরু। ভালো দাম পেয়ে একটি ষাঁড় বিক্রয় করেছি। আর দুটা আছে দেখা যাক কি হয়। কেনার চায়তে দেখার মানুষ বেশি। এই জেলার বেশির ভাগ পশু সিলেট বিভাগে যেতো সেখানে বন্যার কারণে এবার পশুর চাহিদা কমেছে। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবু তালেব বলেন, এবার নওগাঁয় ৭ লাখ ২৮ হাজারের বেশি পশু প্রস্তত করা হয়েছে। চাহিদা রয়েছে ৩ লাখ ৭৮ হাজার ৭৫৯টি। উদ্বৃত্ত পশু বিভিন্ন জেলায় বিক্রি হয়ে থাকবে। এবার অন্তত ২ হাজার ১১ কোটি ১৫ লাখ টাকার বেশি পশু বিক্রির আশা করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এসব পশুগুলো প্রাকৃতিক খাবারে মোটাতাজাকরণ করা হচ্ছে। এই জন্য আমরা খামারিদের সব ধরনের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। এছাড়াও সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে গরু প্রবেশ ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *