দৈনিক তালাশ.কমঃ উজ্জ্বল কুমার সরকার নওগাঁ: নওগাঁর বদলগাছী সরকারি মডেল পাইলট হাইস্কুল। উপজেলার প্রাচীনতম বিদ্যালয়গুলোর একটি। যমুনা নদীর কোল ঘেষে ১৯৪০ সালে নির্মিত হয়েছে এই বিদ্যালয়টি। সুনাম এবং শিক্ষার মান ভালো হওয়ায় দূর-দুরান্ত থেকে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি হয় এই বিদ্যালয়ে। বর্তমানে প্রায় ৬৫০ জন ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে এই বিদ্যালয়ে। কিন্তু বর্তমানে শিক্ষার মান এবং শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অবিভাবকরা। অভিযোগ উঠেছে ঐ বিদ্যালয়ে নিয়মিত ক্লাস হয় না। যে সকল কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রী বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়। শিক্ষক সল্পতা আর ক্লাস না হওয়ার কারনে স্কুল ফাঁকি দিয়ে পাশেই বাজার কিংবা কফি হাউজে আড্ডা দিচ্ছে। আবার কেউ কেউ মারামারির মতো অপরাধে জড়িয়ে পড়ছেন। আবার খণ্ডকালীন শিক্ষক দিয়ে নবম দশম শ্রেণির উচ্চতর গনিতের প্রশ্নপত্র তৈরী করে, হয়েছে পরীক্ষা। ষষ্ট, সপ্তম এবং নবম,দশম শ্রেণির বিজ্ঞান ক্লাস নিচ্ছেন মানবিক শাখার খন্ডকালীন শিক্ষক অবিভাবকরা প্রশ্ন তুলছেন শিক্ষার মান নিয়ে। এ যেন দেখার কেউ নেই। ঐ বিদ্যালয় সুত্রে জানা যায়, প্রধান শিক্ষকের অতি ঘনিষ্ঠ হওয়ায় আর শিক্ষক সল্পতার কারনে গত বছর পহেলা অক্টোবর থেকে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতকত্তোর করা মো মারুফ হোসেন ফুয়াদ নামে একজন কে খন্ডকালীন শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ দেয় প্রধান শিক্ষক। এরপর থেকে ঐ শিক্ষক ষষ্ঠ, সপ্তম এবং নবম শ্রেণীর বিজ্ঞান ক্লাস নেয়। এবং দশম শ্রেনীর উচ্চতর গণিত ক্লাস নেয়। শুধু ক্লাসই নেয় না। উচ্চতর গণিত বিষয়ের প্রশ্নপত্র তৈরী করে পরীক্ষাও নেয়। প্রশ্ন উঠেছে বিজ্ঞান এবং উচ্চতর গণিতের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কি শিখবে ঐ খন্ডকালীন শিক্ষকের কাছ থেকে। তাছাড়া ঐ বিদ্যালয়ের উচ্চতর গণিত শিক্ষকের কাজই বা কি?
তবে ঐ বিদ্যালয়ের গণিত শিক্ষক মো মোজাহারুল ইসলাম ক্ষোভ নিয়ে বলেন, ফুয়াদ নামে খন্ডকালীন শিক্ষক গত এক বছর গণিত ক্লাস নিচ্ছেন এবং প্রশ্নপত্র তৈরী করে পরীক্ষা নিয়েছেন। আমি অন্যান্য ক্লাস নেয়। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক কে কিছু বলতে গেলে তিনি আমার কথা শোনেন না। এ কারনে ১৬ জন ছাত্র-ছাত্রী ফেলও করেছেন। খন্ডকালীন শিক্ষক মো মারুফ হোসেন ফুয়াদের সাথে মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তা সম্ভব হয়নি। তবে এ বিষয়ে (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষক মো মোজাফফর হোসেন (উকিল) অস্বীকার করে বলেন, ফুয়াদ বিজ্ঞান বিষয়ে ক্লাস নেয় নি। ক্লাস রুটিনে ফুয়াদের নাম আছে, সে নবম শ্রেণীর প্রশ্নপত্র তৈরী করে পরীক্ষা নিয়েছে। এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রশ্নপত্র আমি তৈরী করেছি। সে শুধু প্রশ্নপত্র লিখেছে। ছাত্র ছাত্রী ক্লাস বাদ দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরাঘুরি করে,অনেকে মারামারি করছে। শৃঙ্খলা নেই কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই সমস্যা নিয়ে কাজ করছি। দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ঐ বিদ্যালয়ের সভাপতি (চ.দা) মো কামরুল হাসান সোহাগ বলেন, আপনার মাধমেই বিষয়টি জানতে পারলাম। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।