দৈনিক তালাশ.কমঃঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণঃগত ইং ০৮/০২/২০২৪ তারিখ বিকাল অনুমান ০৪:৪৫ ঘটিকার সময় বাদীর মেঝ ভাই মহাসিন মণ্ডল (৪৭) বাড়ীতে অবস্থানকালীন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা মহাসিন মন্ডল এর ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর এ ফোন করে পাওনা টাকা দেওয়ার কথা বলিয়া বাজারে যাইতে বলিলে মহাসিন মন্ডল(৪৭) ক্যান্টনমেন্ট খয়েরতলা বাজারে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ী হইতে রওয়ানা দেয়। পরবর্তীতে বাদীর ভাই বাড়ীতে ফিরে আসিতে দেরি করিলে বাদীসহ তাহার পরিবারের লোকজন বাদীর ভাইকে খোঁজাখুজি করতে থাকে। খোঁজাখুজি করিয়া না পাইয়া গত ইং ০৯/০২/২০২৪ তারিখ সকাল অনুমান ১১.০০ ঘটিকার সময় যশোর জেলার কোতয়ালী মডেল থানাধীন ১২নং ফতেপুর ইউনিয়নের বালিয়াডাঙ্গা গ্রামস্থ মান্দিয়া জামে মসজিদের উত্তর পাশে মসজিদের অজুখানা সংলগ্ন বাওড় এর পশ্চিম-দক্ষিণ কোনায় একজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির মৃতদেহ পড়িয়া আছে সংবাদ পায়। ভিকটিমের পরিবারের লোকজন উক্ত স্থানে গিয়ে মৃতদেহ দেখিয়া ভিকটিম মহাসিন মন্ডল(৪৭) এর মৃতদেহ বলিয়া সনাক্ত করে। ভিকটিমের গলায় তার দিয়া প্যাচানো, হাত-পা তার দিয়া বাঁধা, থুথনীর নীচ হইতে নাভী পর্যন্ত পেট্রোল দিয়া পোড়ানো এবং উলঙ্গ অবস্থায় দেখিতে পায়। মহাসিন মন্ডল (৪৭) কে হত্যা করিয়া লাশ গোপন করার উদ্দেশ্যে হত্যাকারী বর্ণিত স্থানে ফেলে রেখে যায়। এই ঘটনা সংক্রান্তে ভিকটিম এর ভাই মোঃ কোরবান (৪১), পিতা-মোঃ মহিউদ্দীন মন্ডল, মাতা-মোছাঃ ফাতেমা, সাং-নুরপুর মধ্যপাড়া গোলদার পট্টি, ৬নং কাশিমপুর ইউনিয়ন, থানা-কোতয়ালী, জেলা-যশোর কোতয়ালী মডেল থানা, যশোরে হাজির হয়ে এজাহার দিলে যশোর, কোতয়ালী মডেল থানার মামলা নং-৫১, তারিখ- ১০/০২/২০২৪ খ্রিঃ, ধারা- ৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড রুজু হয়।
ঘটনাটি চাঞ্চল্যকর ও লোমহর্ষক হওয়ায় জেলা পুলিশ সুপার জনাব প্রলয় কুমার জোয়ারদার, বিপিএম (বার), পিপিএম (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত) মহোদয় ঘটনার রহস্য উদঘাটনসহ জড়িতদের গ্রেফতার করার জন্য মামলাটির তদন্তভার জেলা গোয়েন্দা শাখায় অর্পন করতঃ দিক নির্দেশ প্রদান করেন।
গ্রেফতার অভিযানঃ
পুলিশ সুপার জনাব প্রলয় কুমার জোয়ারদার, বিপিএম (বার), পিপিএম (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত) এঁর দিক-নির্দেশনায় জনাব রুপণ কুমার সরকার পিপিএম (বার), অফিসার ইন-চার্জ জেলা গোয়েন্দা শাখা, যশোর এর নেতৃত্বে জেলা গোয়েন্দা শাখায় কর্মরত এসআই/মোঃ শামীম হোসেন, এসআই/ খান মাইদুল ইসলাম রাজিব, এসআই/ শফি আহমেদ রিয়েল, এএসআই/ রঞ্জন কুমার বসু, কং/ আশরাফুল ইসলাম, কং/আঃ বাতেনদের সমন্বয়ে গঠিত একটি চৌকস টিম যশোর কোতয়ালী মডেল থানাধীন খয়েরতলা বাজারে অভিযান পরিচালনা করে হত্যা কান্ডের সহিত জড়িত একমাত্র আসামী মেহেদী হাসান লিখন (৩২), পিতা-মৃত আকবর হোসাইন, মাতা-লায়লা বেগম, স্থায়ী ঠিকানা-উজিরপুর, ডাকঘর-বকুলতলা, থানা-নড়াইল সদর, জেলা-নড়াইল, বর্তমান ঠিকানা-নুরপুর মধ্যপাড়া গোলদার পট্টি, ৬নং কাশিমপুর ইউনিয়ন, থানা-কোতয়ালী, জেলা-যশোরকে গ্রেফতার করেন। পরে গ্রেফাতরকৃত আসামীর স্বীকারোক্তি মোতাবেক ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার, আসামীর ব্যবহৃত জুতা, ভিকটিমের মৃত.দেহ গুমের কাজে ব্যবহৃত ট্রাঙ্ক, সিসি ক্যামেরা ফুটেজ জব্দ করা হয়। মামলার তদন্ত অব্যাহত আছে।
প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আসামী ঈগল হাই ফোর্স এন্ড লজিস্টিক সার্ভিস লিমিটেড নামে একটা সিকিউরিটি কোম্পানি পরিচালনা করে। তার জরুরি টাকার প্রয়োজন হলে অত্র মামলার ডিসিস্ট সুদের কারবারি মহাসিন মন্ডল এর নিকট হতে চড়া সুদে বিভিন্ন মেয়াদে টাকা সুদে নেয় এবং একপর্যায়ে ডিসিস্ট টাকা পরিশোধের জন্যে চাপ দিচ্ছিল। গত ০৮/০২/২৪ তারিখ সুদের টাকা নেয়ার জন্য ডিসিস্ট আসামীর অফিসে আসলে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে আসামী লেপটপের পাওয়ার ক্যাবল দিয়ে গলায় পেঁচিয়ে হত্যা করে। ডিসিস্ট মহাসিন মন্ডলকে হত্যা করে মৃতদেহ গোপন করার জন্যে ট্রাঙ্কে করে ঘটনাস্থলে নিয়ে যায় এবং ডিজেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীর নাম ঠিকানাঃ
১। মেহেদী হাসান লিখন (৩২), পিতা-মৃত আকবর হোসাইন, মাতা-লায়লা বেগম, স্থায়ী ঠিকানা-সাং-গোবিন্দপুর, পোঃ ফুলারপাড়, থানা-মুকসুদপুর, জেলা-গোপালগঞ্জ, বর্তমান ঠিকানা-নুরপুর মধ্যপাড়া গোলদার পট্টি, ৬নং কাশিমপুর ইউনিয়ন, থানা-কোতয়ালী, জেলা-যশোর।
উদ্ধারকৃত আলামতঃ
(ক) ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার
(খ) আসামীর ব্যবহৃত জুতা
(গ) ভিকটিমের মৃত.দেহ গুমের কাজে ব্যবহৃত ট্রাঙ্ক,
(ঘ) সিসি ক্যামেরা ফুটেজ