নারায়ণগঞ্জে চাঁদাবাজি করার সময় গ্রেপ্তার ২৫ জন

দৈনিক তালাশ.কমঃনারায়ণগঞ্জের ৫টি স্থানে সবজি ও পণ্যবাহী ট্রাক থামিয়ে চাঁদাবাজির সময় ২৫ জনকে আটক করে র‍্যাব। তার মধ্যে ১৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও ১২ জনকে আর্থিক জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। তাঁদের কাছ থেকে চাঁদাবাজির ১৪টি রশিদ বই ও ৩টি খাতা উদ্ধার করা হয়েছে। আজ সোমবার সকালে র‌্যাব-১১–এর সহকারী পুলিশ সুপার সনদ বড়ুয়া আমার নারায়ণগঞ্জকে এই তথ্য জানান।

র‍্যাব জানায়, গতকাল রোববার রাতে নারায়ণগঞ্জের প্রবেশমুখ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মদনপুর, শিমরাইল, কাঁচপুর, সাইনবোর্ড ও বন্দর উপজেলার নবীগঞ্জ এলাকায় সড়কে সবজি ও অন্যান্য পণ্যবাহী ট্রাক থামিয়ে অবৈধভাবে চাঁদা আদায়কালে অভিযান চালানো হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাত নোমান বিভিন্ন মেয়াদে ১৩ চাঁদাবাজকে কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠান এবং ১২ জনকে আর্থিক জরিমানা করে ছেড়ে দেন।

বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন—জুয়েল আহমেদ (৩০), শফিকুল ইসলাম (২৭), আবদুর রহমান (৩০), আশরাফ উদ্দিন (৪০), খলিল মিয়া (৪০), ওমর ফারুক (২৮), মোহাম্মদ ওমর ফারুক (৪০), হাসান মাসুম (৪০), বিপ্লব খান (২৯), ফরহাদ হোসেন (২৮), মো. আসিফ (২১), আতিকুর রহমান (৪৫) ও মারুফ হোসেন (২৮)।

অর্থদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন—কবির হোসেন (২৮), রানা (৩০), মো. রাজীব (৩০), দিপু (১৯), সাদ্দাম হোসেন (১৮), সুমন খান লাল (৩২), আবদুর রহমান (৪০), মো. সোহেল (৩৫), আল আমিন (৩৫), মো. ইকবাল (৪৫), রকিবুল হাসান (২৬) ও মো. রাসেল (২৫)। কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডপ্রাপ্ত সবার বাড়ি নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায়।

র‌্যাব-১১ সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি পণ্যবাহী যানবাহনে চাঁদাবাজির কারণে অযৌক্তিক ও অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। সড়ক ও মহাসড়কে এসব বাড়তি খরচের খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ ক্রেতাদের। ফলে সবজির মৌসুমেও কমছে না সবজির দাম। পণ্য পরিবহনে চাঁদাবাজির ঘটনা গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হওয়ায় এই সমস্যা সমাধানে চাঁদাবাজদের গ্রেপ্তারে নজরদারি শুরু করে র‌্যাব। দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নারায়ণগঞ্জের প্রবেশমুখে বিভিন্ন সড়ক ও মহাসড়কে পণ্যবাহী গাড়িতে নিয়মিত চাঁদাবাজির বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তথাকথিত ইজারাদারদের নির্দেশে কয়েকটি গ্রুপে ভাগ হয়ে প্রতি রাতে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় রাস্তার ওপর অবস্থান নেন তাঁরা। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাঁরা চাঁদা আদায়ের রশিদও দেন। ট্রাকচালকেরা চাঁদা দিতে না চাইলে তাঁদের গাড়ি ভাঙচুর, চালক ও তাঁর সহকারীকে মারধর এবং প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়। চাঁদাবাজ চক্রের কাছে দূরপাল্লার পণ্যবাহী ট্রাকচালক ও ব্যবসায়ীরাও জিম্মি। বাড়তি খরচের ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমানো যাচ্ছে না বলে জানিয়ে আসছেন ব্যবসায়ীরা। সড়কে সবজি ও অন্যান্য পণ্যবাহী ট্রাক থেকে অবৈধভাবে চাঁদা আদায়কারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে র‌্যাব-১১–এর অভিযান চলমান।

জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাত নোমান প্রথম আলোকে বলেন, চাঁদাবাজ চক্রটি সবজি ও পণ্যবাহী ট্রাক থেকে ১০০ থেকে ২০০ টাকা চাঁদা আদায় করত। ৫টি স্থানে অভিযান চালিয়ে হাতেনাতে ১৩ চাঁদাবাজকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আর বাকি ১২ চাঁদাবাজের কাছ থেকে ১৩ হাজার ৬৫৬ টাকা উদ্ধার করা হয়। পরে একই পরিমাণ টাকা জরিমানা করে ওই ১২ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *