আত্রাই নদীর ওপর দীর্ঘসেতুটি নির্মাণ কাজ শেষ হলেও চলাচলের অযোগ্য

দৈনিক তালাশ.কমঃউজ্জ্বল কুমার সরকার নওগাঁঃনওগাঁর আত্রাই নদীর ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে ২১৭ দশমিক ৩০ মিটার দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণ কাজ শেষ হলেও চলাচলের অযোগ্য দেখার কেউ নেই,এতে এর পেছনে ব্যয় বরাদ্দের পরিমাণ প্রায় ১৮ কোটি ৮১ লাখ ২৫ হাজার টাকা

রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। দুপাশে সাদা আর লাল রঙে রাঙানো হয়েছে পুরো অংশ। সংযোগ সড়ক না থাকায় খেয়াঘাটের মাঝিরা সেতুতে ওঠানামার জন্য কিছু অংশে মাটি ভরাট করে অস্থায়ী এক বাঁশের সাঁকো তৈরি করেছেন। এটি দেখতে খুব ভয়ংকর এবং ঝুঁকিপূর্ণ। কোনো রকম ঝুঁকি নিয়ে বাইসাইকেল, মোটরসাইকেল ও ভ্যান চলাচল করতে দেখা যায়। এ ছাড়া পারাপারের সময় নেওয়া হচ্ছে টাকা। হঠাৎ দুই যুবককে সাঁকো দিয়ে খুব সাবধানে মোটরসাইকেল নিয়ে সেতুর থেকে নামতে দেখা গেল। একজন মোটরসাইকেলের চালকের আসনে বসে চালাচ্ছেন, আরেকজন পেছন থেকে মোটরসাইকেলটি ধরে নামাচ্ছেন। যাতে সাঁকো থেকে পড়ে না যায়।পাঁজরভাঙ্গা গ্রামের মো. সুমন বলেন, আমরা সাধারণ জনগণ। সেতুটি পেলেও রাস্তার জন্য মাটি কাটা না হওয়ায় আমাদের দুর্ভোগ এখনো কাটেনি। তাড়াছা এই বাঁশের চটা বেয়ে সেতুতে উঠতে ১০ টাকার টোল দিতে হচ্ছে। যদি সেতুটিতে সংযোগ রাস্তার ব্যবস্থা করা হয় তাহলে আমাদের যাতায়াতের অনেক সুবিধা হবে।ভুক্তভোগী অটোরিকশাচালক মো. লিটন বলেন, আমি সাবই-হাট থেকে যাত্রী ভাড়া করে পাঁজভাঙ্গা এলাকায় সেতু বেয়ে যাওয়ার জন্য এসেছিলাম। কিন্তু এসে দেখি ব্রিজ নির্মাণ হলেও পারাপারের জন্য বাঁশের চটা দিয়ে সাঁকো তৈরি করা হয়েছে। এতে অটোরিকশা নিয়ে পার হওয়া খুবই বিপজ্জনক। বিধায় আমাকে এখন অন্য রাস্তা দিয়ে ঘুরে প্রায় ১০ কিলোমিটার পথ যেতে হবে।এ বিষয়ে এলাকার স্থানীয় শিক্ষক মো. আতাউর রহমান বলেন, বাঁশের চটা বেয়ে সেতুতে ওঠার জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লোকজন যাতায়াত করছেন। যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আগামী ১৫ তারিখ থেকে এসএসসি পরীক্ষা এবং বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে শত শত শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ঝুঁকি নিয়ে এ বাঁশের সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করবে। ফলে তাদের সুবিধার জন্য হলেও ১৫ তারিখের আগে যেন রাস্তাটির ব্যবস্থা করা হয়।এ বিষয়ে বাইবোল্লা গ্রামের সচেতন ব্যক্তি মো. মকবুল হোসেন বলেন, সেতুটি এ এলাকার স্বপ্নের। মাটির অভাবে নাকি পূরণ করতে পারছে না। কিন্তু এভাবে ফেলে রাখলে তো হবে না, জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষা রয়েছে। তারা এ বাঁশের সাঁকো তৈরি করে যে রাস্তা বানিয়েছে সেটি ঝুঁকিপূর্ণ। কখন কোন মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটবে তা বলার অবকাশ রাখে না।এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মান্দা উপজেলার প্রকৌশলী শাইদুর রহমান মিঞা বলেন, তারা বাঁশের চটা দিয়ে যে রাস্তা তৈরি করেছে, সেটা আমরা বাঁশ দিয়ে বন্ধ করে আটকে দিয়েছি। যদি তারা চালু করে থাকে তাহলে এর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, সেতুটির সংযোগ সড়কের জন্য জেলার কন্ট্রাক্ট ছিল, সেটা বাতিল হয়েছে। এটা হয়তো টেন্ডার হয়ে জুনের মধ্যে কাজটা হয়ে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *