স্ত্রীরর ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ ছড়িয়ে দিয়ে ব্ল্যাকমেইল স্বামীকে আটক র‌্যাব-৭

দৈনিক তালাশ.কমঃ বাংলাদেশ আমার অহংকার এই স্লোগান নিয়ে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোরালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র‌্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

ভুক্তভোগী ভিকটিম পেশায় একজন গৃহিনী। বিগত ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮ইং তারিখ মোঃ নাছের উদ্দিন এর সাথে ইসলামি শরিয়াত মোতাবেক পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়। বিবাহের ০১ মাস পর ভিকটিম জানতে পারেন যে, তার স্বামী মোঃ নাছের উদ্দিনের আরো একজন স্ত্রী রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিতন্ডা হলে ভিকটিম তার বাবার বাড়ী চলে আসে। পরবর্তীতে মোঃ নাছের উদ্দিন ২০১৯ সালে ওমান চলে যায় ভিকটিমর সাথে ইমুতে যোগাযোগ অব্যহত রাখে এবং ২০২১ সালে দেশে ফিরে ভিকটিমের সহিত সংসার শুরু করে। সাংসারিক জীবন যাপনের মাধ্যমে মোঃ নাছের উদ্দিন কৌসলে স্বামী-স্ত্রী শারিরীক সম্পর্ক স্থাপনের নগ্ন ছবি এবং ভিডিও’স তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে ধারণ করে রাখে।

পরবর্তীতে ভিকটিম সাংসারিক অমিল এবং শারিরীক নির্যাতনের জন্য বাধ্য হয়ে ২০২১ সালে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে স্বামী মোঃ নাছের উদ্দিন’কে তালাক প্রধান করে এবং মোঃ নাছের উদ্দিন পুনরায় ওমান চলে য়ায়। ভিকটিম স্বামী নাছের উদ্দিন’কে ডিভোর্স দেয়ায় সে ভিকটিমের ছবি ব্যবহার করে একটি ভুয়া ফেসবুক একাউন্ট খুলে এবং উক্ত ফেসবুক একাউন্ট হতে ভিকটিমের বিভিন্ন ব্যক্তিগত মুহুর্তের ছবি ও ভিডিও পোস্ট করে যা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। এছাড়াও মোঃ নাছের উদ্দিন ভিকটিমের ব্যবহৃত ইমু নম্বরে নগ্ন ছবি ও ভিডিও প্রেরণ করে বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি এবং টাকা দাবী করে। পরবর্তীতে ভিকটিম বাদ্য হয়ে গত ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ ইং তারিখ চট্টগ্রাম মহানগরীর পাঁচলাইশ মডেল থানায় একটি জিডি করেন যাহার জিডি নং-১৮১৭/২০২১। এ অবস্থায় ভুক্তভোগী শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে এবং উক্ত ঘটনার বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম বরাবর একটি অভিযোগ দাখিল করেন।

এরই প্রেক্ষিতে গত ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ইং তারিখ আসামি মোঃ নাছের উদ্দিন ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে জানায় সে বর্তমানে চট্টগ্রাম মহানগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন মুরাদপুরস্থ মির্জাপুল সড়কের হোটেল জামান এর সামনে অবস্থান করেছে। নগ্ন ছবি ও ভিডিও ডিলিট করার জন্য ভিকটিমকে ২০,০০০ টাকা নিয়ে বর্ণিত স্থানে আসার জন্য বলে। ভিকটিম তাৎক্ষনিক বিষয়টি র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম’কে অবগত করলে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল গত ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩ আনুমানিক ১৬০০ ঘটিকায় বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামি মোঃ নাছের উদ্দিন (৪০), পিতা- মৃত হাফিজুর রহমান, সাং- উখারা, থানা- ফটিকছড়ি, জেলা-চট্টগ্রাম‘কে আটক করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত স্বাক্ষীদের সম্মুখে জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত আসামী স্বীকার করে যে, সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য ভিকটিমের ছবি ব্যবহার করে ভুয়া ফেসবুক একাউন্ট খুলে ব্যক্তিগত মুহুর্তের ছবি ও ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। উল্লেখ্য, গ্রেফতারকৃত আসামির মোবাইল তল্লাশী করে ভিকটিমের ০৮ কপি ব্যক্তিগত মুহুর্তের ছবি এবং অশ্লীল ভিডিও পাওয়া যায়।

গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে চট্টগ্রাম মাহানগরীর পাঁচলাইশ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *