দৈনিক তালাশ.কমঃ নারায়নগঞ্জের ফতুল্লা স্টেডিয়াম সংলগ্ন বাউল গান এর ক্লাবের মালিক চান মিয়া ও সুমনের মধ্যে কথা কাটাকাটির জেরে দ্বন্দ্ব হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শনিবার রাতে সুমন সরকারের জামাতা সাইজউদ্দিন ও তার ভাই সহ ২০/২৫ জনের সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা চান মিয়াকে তুলে নিয়ে গিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত ও গুরুতর জখম করে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী চান মিয়া চিকিৎসা নিয়ে থানায় যেতে চাইলেও তাকে আটকে রাখে অভিযুক্ত সুমন সরকার, সাইজউদ্দিন, শেল্টার দাতা রনি ও হৃদয় গংরা।
জানা যায়, চান মিয়া ও সুমন সরকার দুজনে দীর্ঘদিন ধরে ফতুল্লায় খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়াম সংলগ্ন এলাকায় বাউল সমিতির নামে গান বাজনার আসর বসায়। গান পরিচালনা ও কর্তৃত্ব নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। দুজন মালিক একজন চান মিয়া অন্য জন সুমন সরকার।তারা দুজনে এই ক্লাবের ব্যবসা চালাচ্ছিল।তবে সুমনের মেয়ে সুমা সেখানে গান করে।সেই সুবাদে তার মেয়ের জামাই সাইজউদ্দিন এবং মেয়ে একটু বেশী মাতুব্বরী করতে যায়।যাহা তাদের ব্যবসার নীতিমালার বহিভূর্ত। সেই কারনে চান মিয়া কিছু অসন্তোষ প্রকাশ করেন তারই বহিঃপ্রকাশ এই ঝগড়াঝাটি। এক পর্যায় সেই ঝগড়াঝাটি এর সুচনা ধরে সুমনের মেয়ে জামাই তার শশুরের পক্ষ নিয়ে তার প্রায় বিশ/পচিশ জন ভারাটে সন্ত্রাসীদের নিয়ে চান মিয়াকে তার গানের ক্লাব থেকে তুলে নিয়ে যায় নির্জন স্থানে। সেখানে নিয়ে গিয়ে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত ও জখম করে। এরপর রড দিয়ে আমাকে পিটিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়া হয়। এসময় কে বা কারা চাঁন মিয়াকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
খানপুর ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তার শরীরের দুই স্থানে সাতটি সেলাই দেওয়া হয়। এছাড়া ও তাকে লোহার রড দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের কারনে কালোফুলা দেখা দেয়। তার নিরাপত্তার জন্য তাকে থানায় গিয়ে ও সি সাহেব কে অবিহিত করতে বলা হয়। কিন্তু সেখানে ও একটা চাল খেলে সেই সুমন সরকার। সেই রাত ১২ টার দিকে সুমন সরকারের লোক এসে তাকে থানায় না যাওয়ার পরামর্শ দেন। এবং যাহাতে সে কোন ভাবে থানায় যেতে না পাড়ে সেই ব্যবস্থা করে। তাকে বলা হয় পড়ের দিন বিকাল ৫ টায় সেই স্টেডিয়াম বসে মিমাংসা করে দিবে।কিন্তু সেখানেও একটা চাল খেলে সুমন সরকার। সেই সুমন সরকার তাদের ব্যবসার ক্লাবে না বসে চান মিয়াকে জোর করে সুমন সরকারে নির্ধারিত স্থানে বসার জোর করে। সেই স্থান টি হলো ডিস ব্যবসায়ী রনি এর অফিস। সেখানে বসতে চাপ সৃস্টি করে। সমাধানে না বসলে শিবু মার্কেট এলাকার রনি ও হৃদয় চান মিয়া সহ তার পরিবারের সদস্যদের ক্ষতি করার হুমকি দেয়।
ভুক্তভোগী চান মিয়া জানান, গত রাতে আমার পার্টনারের নির্দেশে তার মেয়ের জামাতা সাইজউদ্দিন ও তার ভাই সহ ২০/২৫ জন সন্ত্রাসী আমাকে আমার বাউল সমিতি থেকে জোর করে তুলে নিয়ে কড়াইতলা নির্জন স্থানে নিয়ে যায় এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কপালে ও কানে আঘাত করে। এবং আসামীরা রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে কে বা কারা আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। এবং চিকিৎসা নিয়ে থানায় যেতে চাইলে আমাকে বাসায় পাঠানো হয়। এখনো আমাকে হুমকি দেয়া হচ্ছে।
অভিযুক্ত সুমন সরকার জানায়, চান মিয়াকে কয়েকটি চরম থাপ্পড় দিয়ে বাসায় পাঠানো হয়েছে। তেমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। এই কথা তিনি আবারও গান বাজনা শুরু করে।
এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নূরে আযম জানান, বিষয় টি সম্পর্কে আমি অবগত আছি । এঘটনায় যদি থানায় অভিযোগ দায়ের করলে আমরা কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।