দৈনিক তালাশ ডটকমঃ টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি সৈয়দ মহসীন হাবীব সবুজ:
আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেছেন— “কুল্লু নাফসিন জাইকাতুল মউত” (প্রত্যেক প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে)।
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন— “বেশি বেশি মৃত্যু স্মরণ করো, কেননা তা পাপ থেকে বিরত রাখে এবং দুনিয়ার প্রতি অনুরাগ কমিয়ে দেয়।” (তিরমিজি)
অন্য হাদিসে তিনি আরো বলেছেন— “চতুর সেই ব্যক্তি, যে নিজেকে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত রাখে।” (ইবনে মাজাহ)
এই শিক্ষা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী এবং এর জন্য প্রস্তুত থাকাই সর্বোত্তম কাজ।
ইন্তেকাল ও দাফন
টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতী উপজেলাধীন বাংড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সাবেক ইমাম, প্রখ্যাত ক্বারী ও আলেম সৈয়দ মফিজুর রহমান (রাজা ক্বারী) বার্ধক্যজনিত কারণে সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১ টায় নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল ফরমাইছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল প্রায় একশত বছর।
বাদ মাগরিব বাংড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ঈদগাহ মাঠে কানায় কানায় পরিপূর্ণ মুসল্লি, এলাকাবাসী ও আত্মীয়-স্বজনের উপস্থিতিতে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। নামাজ শেষে মসজিদ সংলগ্ন মরহুম সাধু মিয়া গণদের পারিবারিক গোরস্থানে মরহুমকে দাফন করা হয়।
ব্যক্তিত্ব, অভিজ্ঞতা ও গুণাবলী
সাবেক ইমাম রাজা ক্বারী ছিলেন এলাকার অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় ও প্রিয় ব্যক্তিত্ব। তাঁর কণ্ঠে কুরআন তিলাওয়াত ছিল হৃদয়গ্রাহী, যা শুনে অসংখ্য মানুষ মুগ্ধ হতেন।
জীবনের অধিকাংশ সময় তিনি বিভিন্ন মসজিদে ইমামতি করেছেন— প্রায় ৬৫ বছরের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা ছিল তাঁর। এই দীর্ঘ সময়ে তিনি অসংখ্য মানুষকে নামাজে নেতৃত্ব দিয়েছেন, অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রীকে আরবী শিক্ষা ও কুরআন পাঠদান করেছেন।
তিনি ছিলেন সৎ, পরহেজগার ও নীতিবান আলেম। সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা, দ্বীনের প্রচার এবং তরুণ প্রজন্মকে ধর্মীয় শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ করতে রাজা ক্বারীর অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
পরিবার ও গুনগ্রাহী
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, তিন পুত্র, এক কন্যা, নাতি-নাতনী, অসংখ্য গুনগ্রাহী এবং ছাত্র-ছাত্রী রেখে গিয়েছেন। তাঁর ইন্তেকালে এলাকাজুড়ে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া।
মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে সর্বস্তরের মানুষ দোয়া করেছেন।