দৈনিক তালাশ ডটকমঃ টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি সৈয়দ মহসীন হাবীব সবুজঃ টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার বাংড়া ইউনিয়নের শোলাকুড়া রিয়াজুল জান্নাহ ইসলামিয়া কওমি মাদ্রাসায় এক হৃদয়ছোঁয়া হেফজুল কুরআন সমাপন ও নবীন হেফজ শিক্ষার্থীবরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (৩১ মে) সকাল ৭টায় মাদ্রাসার সম্মেলনকক্ষে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন অত্র মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা ও মুহতামিম হেফজ বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক হাফেজ নুর আহমেদ জুয়েল। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মাদ্রাসার সম্মানিত শিক্ষক মাওলানা ইসমাইল হোসেন।
অনুষ্ঠানে পবিত্র কুরআন হেফজ সম্পন্ন করে হাফেজ হিসেবে স্বীকৃতি ও সম্মানী উপহার পান বাংড়া গ্রামের সৈয়দ সুবাস হোসেনের পুত্র সৈয়দ রাফিদুল ইসলাম রাফি। অপরদিকে, নতুন করে হেফজ বিভাগে ভর্তি হয়ে কুরআন হিফজ যাত্রা শুরু করেন বিলবর্ণী গ্রামের মো. লাল মিয়ার পুত্র মো. ওসামা।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন মসজিদ ও মাদ্রাসার আলেম, শিক্ষক, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে এক আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
উপস্থিত সম্মানিত ব্যক্তিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন—
• ইছাপুর মসজিদ-মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সাবেক প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম
• মুলিয়া জামে মসজিদের সভাপতি কাজী নজরুল ইসলাম
• মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হাফেজ মাওলানা মমিনুল ইসলাম
• মাদ্রাসার সভাপতি মো. আব্দুল লতিফ মেম্বার
• সাধারণ সম্পাদক ও সাকরা জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা মুফতি শেখ সাদী
• শোনোটিয়া জামে মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা রমজান আলী
• দোয়া পরিচালনা করেন বড় বাসালিয়া জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা আব্দুস সাত্তার
বক্তারা হিফজুল কুরআনের ফজিলত, তা সমাজে বাস্তবায়নের গুরুত্ব ও হাফেজদের মর্যাদা নিয়ে গুরুত্বারোপ করেন। তারা বলেন, একজন হাফেজ শুধু নিজেই নন, বরং তার পরিবার ও সমাজের জন্য গর্বের বিষয়।
হাদীস দ্বারা হাফেজ ও তার পিতার মর্যাদা
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
“যে ব্যক্তি কুরআন তেলাওয়াত করে এবং তা মুখস্থ করে, কেয়ামতের দিন তাকে বলা হবে, পড়ো এবং ওপরে উঠো এবং যেমন তুমি দুনিয়াতে সুন্দরভাবে তেলাওয়াত করতে, ঠিক তেমনই পড়ো। আর তোমার স্থান হবে যেখানে পৌঁছে যাবে তোমার সর্বশেষ আয়াত তেলাওয়াত।”
— (সুনান আবু দাউদ: ১৪৬৪, তিরমিজি: ২৯১৪)
অন্য হাদীসে এসেছে:
“যে ব্যক্তি কুরআন হেফজ করে এবং তা অনুযায়ী জীবনযাপন করে, কেয়ামতের দিন তার মাথায় এক تاج (মুকুট) পরানো হবে যার আলো সূর্যের আলো থেকেও উজ্জ্বলতর হবে। তার বাবা-মাকেও এমন পোশাক পরানো হবে, যা সারা দুনিয়ার চেয়ে উত্তম হবে। তখন তারা বলবে, আমাদের এই মর্যাদা কেন দেয়া হলো? বলা হবে, তোমাদের সন্তান কুরআন মুখস্থ করেছিল বলে।”
— (মুসনাদ আহমাদ, হাদীস: ২২৩২৭; হাকেম)
বক্তারা নতুন হাফেজ রাফিকে অভিনন্দন জানান এবং নবাগত শিক্ষার্থী ওসামার জন্য দোয়া করেন যেন সেও একদিন সফলভাবে হেফজ সম্পন্ন করে সমাজে আলো ছড়াতে পারে।
অনুষ্ঠান শেষে সবাইকে তবারক বিতরণ করা হয় এবং দোয়ার মাধ্যমে অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয়।