মির্জাপুরে ডাকাতি মামলার রহস্য উদ্ঘাটনসহ টাকা ও গুলি উদ্ধার

দৈনিক তালাশ ডটকমঃ টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি সৈয়দ মহসীন হাবীব সবুজ: মির্জাপুর উপজেলা একটি ক্রাইমজোন হিসেবে পরিচিত লাভ করছে। গত ১৯ এপ্রিল রাত আনুমানিক সাড়ে দশ ঘটিকায় টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার অফিস শেষে পাকুল‍্যা নিজ বাড়িতে ফেরার পথে মির্জাপুরের কুরণী থেকে সুভল্লার মাঝামাঝি আসা মাত্রই রানিং অবস্থায় আরেকটি বাইক থেকে তাকে ছুড়ি দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত করে মোটরবাইক, মানিব্যাগ ও মোবাইল ডাকাতি করে । মির্জাপুর থানার মামলা নং ২১ তারিখ ২০ এপ্রিল। যা এখনও উদ্ধার হয়নি।

উদ্ধারকৃত নিউজ:
টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুরে গুলি করে ৭৮ লক্ষ টাকা ডাকাতি মামলার রহস্য উদ্ঘাটন, হায়েস গাড়িসহ লুন্ঠিত ৩ লক্ষ ১২ হাজার টাকা ও ১০ রাউন্ড পিস্তলের গুলি উদ্ধার।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) রাত দশটা ছয় মিনিটে এসপি টাঙ্গাইল এর মেইলে প্রেরিত প্রেস রিলিজ অনুযায়ী এই তথ্য জানা যায়। প্রেস রিলিজের বর্ণনা অনুযায়ী,
গত ইং ২২/০৩/২০২৫ তারিখ সন্ধ্যা অনুমান ০৬.১৫ ঘটিকায় মির্জাপুর থানাধীন বাঁশতৈল ইউনিয়নের পাঁচগাঁও সাকিনস্থ হুমায়ুন ব্রিকস এর দক্ষিণ পার্শ্বে জনৈক ফরিদ পাটওয়ারীর জমির প্রাচীর সংলগ্ন উত্তর পার্শ্বের গেটের পার্শ্বে সখিপুর-গোড়াই আঞ্চলিক সড়কের গোড়াইগামী পাকা রাস্তার উপর ১টি দুর্ধর্ষ ডাকাতি সংঘটিত হয়। অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন ডাকাত হায়েস মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেল দিয়ে মহিষ ব্যবসায়ীদের বহনকারী প্রাইভেটকারকে চাপ দিয়ে বর্ণিত ঘটনাস্থলে থামায়। ডাকাতরা প্রথমে প্রাইভেটকারের সামনের গ্লাসে আঘত করে ভেঙ্গে ফেলে এবং মহিষ ব্যবসায়ীদের বহনকারী প্রাইভেটকারে মহিষ বিক্রির ৭৮,০০,০০০/- (আটাত্তর লক্ষ) টাকার ২টি ব্যাগ দিয়ে দিতে বলে। মহিষ ব্যবসায়ীগণ টাকা দিতে না চাইলে  অজ্ঞাতনামা ২ ডাকাত তাদের কাছে থাকা পিস্তল দিয়ে  ফাঁকা গুলি করে। মহিষ ব্যবসায়ীগণ প্রাণের ভয়ে তাদের কাছে থাকা ২টি টাকা ভর্তি ব্যাগ ডাকাতদের কে দিয়ে দেয়। এতদ সংক্রান্তে টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর থানায় ১টি ডাকাতি মামলা রুজু হয় যার নং- ৪২, তারিখ-২৩/০৩/২৫ খ্রিঃ। গুলি করে টাকা ডাকাতির মামলা তদন্তে টাঙ্গাইল জেলার পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ডিবি, টাঙ্গাইল ও মির্জাপুর থানা পুলিশের একাধিক আভিযানিক দল তদন্তে নামে।

 তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ও গুপ্তচর হতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে টাঙ্গাইল জেলার ডিবি পুলিশ এবং মির্জাপুর থানা পুলিশের সমন্বয়ে গঠিত ১টি চৌকস টিম বরিশাল, ডিএমপি ঢাকাসহ বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে।  গত ইং১১/০৪/২০২৫ তারিখ  আভিযানিক দলটি ডিএমপি ঢাকা‘র হাজারীবাগ থানা এলাকা হতে হায়েস মাইক্রোবাস চালক ডাকাত মিলন কে গ্রেফতার করেন এবং তার হেফাজত হতে অত্র মামলার ঘটনায় ব্যবহৃত হায়েস মাইক্রোবাস ও লুন্ঠিত নগদ ১২,০০০/- (বারো হাজার) টাকা উদ্ধার পূর্বক জব্দ করেন। উক্ত মিলন ডাকাত নিজেকে জড়িয়ে বিজ্ঞ আদালতে দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।

অত্র মামলার ঘটনার সেকেন্ড ইন কমান্ড ইসমাইল হোসেন ওরফে মামুনকে আভিযানিক দলটি ডিএমপি, ঢাকার যাত্রাবাড়ি থানা এলাকা হতে গত ইং ১৮/০৪/২০২৫ তারিখ গ্রেফতার করে। উক্ত ইসমাইল হোসেন ওরফে মামুনকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে ব্যপক জিজ্ঞাসাবাদ করাকালে সে জানায় তার নিকট অত্র মামলার ঘটনায় লুন্ঠিত ৩,০০,০০০/- (তিন লক্ষ) টাকা তার ভাড়া বাসায় আছে। অভিযানিক দলটি রিমান্ডের আসামী ইসমাইল হোসেন ওরফে মামুনকে নিয়ে ডিএমপি, ঢাকার ডেমরা থানাধীন কোনাপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে উক্ত  আসামীর দেখানো মতে অত্র মামলার লুন্ঠিত নগদ ৩,০০,০০০/- (তিন লক্ষ) টাকা উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয়।

পরবর্তীতে উক্ত আসামীকে আরো নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদ করাকালে সে জানায় অত্র মামলার ঘটনায় ব্যবহৃত পিস্তলের বেশ কিছু গুলি তারা পালিয়ে যাওয়ার সময় এক মোড়ে ফেলে দিয়েছিল। উক্ত আসামীর দেখানো মতে মির্জাপুর থানাধীন আজগনা ইউনিয়নের বেলতৈল সিরামিকস্ মোড় হতে ৫০ গজ পূর্ব দিকে খাটিয়ার বাজারগামী পাকা রাস্তার উত্তর পার্শ্বের জঙ্গল হতে ১০ (দশ) রাউন্ড তাজা পিস্তলের গুলি উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয়। গুলি উদ্ধার সংক্রান্তে মির্জাপুর থানায় অস্ত্র আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। গ্রেফতাকৃত ডাকাতরা আন্তঃজেলা ডাকত দলের সক্রিয় সদস্য। তাদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় অস্ত্র, ডাকাতি, দস্যুতাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত অপরাপর ডাকাতদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

গ্রেফতারকৃত ডাকাতদের নাম ও ঠিকানাঃ ১। মোঃ মিলন (৪৬), পিতা- মোঃ আজিমুদ্দিন, স্থায়ী : গ্রাম- দুধল মৌ (সাং- দুধল মৌ) , উপজেলা/থানা- বাকেরগঞ্জ, জেলা –বরিশাল।

২। মোঃ ইসমাইল হোসেন, মামুন (৫০), পিতা-মৃত সিদ্দিকুর রহমান, মাতা-মাফিয়া বেগম স্থায়ী: গ্রাম- খানখানাপুর (পোস্ট -খানখানাপুর) , উপজেলা/থানা- রাজবাড়ী সদর, জেলা -রাজবাড়ী,

উল্লেখ্য টাঙ্গাইল জেলায় বিভিন্ন সময় সংঘটিত ডাকাতির ঘটনায় জানুয়ারী- ২০২৫ থেকে অদ্য পর্যন্ত ৪৭ জন আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্যকে গ্রেফতার পূর্বক বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *