নওগাঁয় মোবাইল ও সাইকেল চুরির অপবাদে ইটভাটার এক শ্রমিককে মাথা ন্যাড়াকরে নির্যাতন

দৈনিক তালাশ ডটকমঃ উজ্জ্বল কুমার সরকার নওগাঁ: নওগাঁর রাণীনগরে মোবাইল ফোন ও সাইলেন্স চুরির অপবাদ দিয়ে ইটভাটার এক শ্রমিককে মাথা ন্যাড়া করে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বণিক সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের নগর ব্রিজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগীর নাম সজীব হোসেন (২৫), তিনি উপজেলার কাশিমপুর চারাপাড়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে।জানা গেছে, গত এক মাসের ব্যবধানে উপজেলার নগর ব্রিজ এলাকার শহিদুল ইসলামের ইটভাটার কয়েকজন শ্রমিকের আটটি মোবাইল ফোন ও দুটি সাইলেন্স চুরি হয়। এ ঘটনায় ভাটার ম্যানেজার রয়েল হোসেনসহ অন্য শ্রমিকেরা সজীবকে সন্দেহ করেন। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে রয়েলসহ চার-পাঁচজন মিলে সজীবকে মারধর করে চুরি যাওয়া মোবাইল ফোন ও সাইলেন্স উদ্ধারের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এরপর চুরি যাওয়া মোবাইল ফোন উদ্ধারসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় নগর ব্রিজ বাজার বণিক সমিতির সভাপতি আব্দুল জলিলের হাতে সজীবকে তুলে দেওয়া হয়। পরে সেখানেও মারধর করে ফোনগুলো উদ্ধারের চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে পরে একটি সেলুনে নিয়ে সজীবের মাথা ন্যাড়া করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। জানতে চাইলে ইটভাটার ম্যানেজার রয়েল হোসেন বলেন, ‘গত এক মাসের ব্যবধানে আমার ইটভাটার শ্রমিকদের আটটির মতো মোবাইল ফোন চুরি হয়েছে। বুধবার রাতেও দুটি সাইলেন্স চুরি হয়েছে। মোবাইল ফোন ও সাইলেন্স চুরির ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে স্বীকার করেনি সজীব।একপর্যায়ে মারধর করার পরেও স্বীকার না করায় মোবাইল ফোন উদ্ধার এবং সুষ্ঠু বিচারের জন্য বাজার বণিক সমিতির সভাপতি জলিলের হাতে তুলে দিয়েছি। তিনি মোবাইল ফোন উদ্ধার করতে না পেরে নাপিত দিয়ে সজীবের মাথা ন্যাড়া করে দিয়েছেন।’ তিনি বলেন, ‘এর আগে গত বছর আমাদের ভেকু মেশিনের ব্যাটারি চুরি করে ধরা পড়েছিল সজীব। তবে মাথার চুল কেটে ন্যাড়া না করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া উচিত হয়নি।’নগর ব্রিজ বাজার বণিক সমিতির সভাপতি আব্দুল জলিল বলেন, ‘মোবাইল ফোন চুরির অপবাদে সজীবকে ইটভাটার ম্যানেজার -শ্রমিকেরা মারধর করে রক্তাক্ত করেও ফোন উদ্ধার করতে পারেনি। আমিও তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি, কিন্তু চুরির কথা স্বীকার করেনি। পরে মাথায় লম্বা চুল দেখে চুল কেটে ন্যাড়া করে স্থানীয় ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা দিয়ে সজীবের অভিভাবকের হাতে তুলে দিয়েছি।’ তবে মাথার চুল কেটে দেওয়া ভুল হয়েছে বলে জানান তিনি।আহত সজীব হোসেন বলেন, ‘আমি ওই ভাটায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করি। আমাকে মোবাইল ও সাইলেন্স চুরির অপবাদ দিয়ে ম্যানেজার রয়েল আমাকে বেদম মারধর করেছে। পরে বণিক সমিতির সভাপতি জলিলের হাতে দিলে সেখানেও আমাকে মারধর করে আমার মাথা ন্যাড়া করে দিয়েছে। আমি চুরি করিনি বারবার বলার পরেও তারা আমাকে অমানুষিক নির্যাতন করেছে। আমি এই নির্যাতনের সুষ্ঠু বিচার চাই।’ এ নিষয়ে রাণীনগর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মোসলেম উদ্দিন বলেন, মারধর করে মাথার চুল কেটে ন্যাড়া করে নির্যাতনের ঘটনায় কেউ জানায়নি বা অভিযোগ করেনি। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নওগাঁ #

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *