দৈনিক তালাশ.কমঃউজ্জ্বল কুমার সরকার: আজ ০৯ নভেম্বর কবিগুরু’র স্নেহধন্য প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী (কত্থক শৈলী) ও অভিনেত্রী ও সংগীতশিল্পী সিতারা দেবী’র শুভ জন্মদিন।
সিতারা দেবী ভারত ও ভারতের বাইরে, লন্ডনের রয়াল আলবার্ট হলে (১৯৬৭) ও নিউইয়র্কের কার্নেগি হলের (১৯৭৬) মতো বিখ্যাত মঞ্চে নৃত্য পরিবেশনা করে বিদেশের জ্ঞানী গুণী মহলে প্রচুর প্রশংসা কুড়িয়েছেন। সিতারা দেবী ১৯২০ সালের ৮ নভেম্বর কলকাতায় (তদানিন্তন ক্যালকাটা) জন্মগ্রহণ করেন। সে বছর ঐদিনই ভারতীয় উৎসব দীপাবলির প্রাক্কালে “ধনতেরা” অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
তাই সৌভাগ্যের প্রতীক হিন্দু দেবীর নামানুসারে তার নাম রাখা হয় “ধনলক্ষ্মী”। ধনলক্ষ্মীর পিতার পরিবার ছিলেন ব্রাহ্মণ, তাদের আদি নিবাস ছিল বারানসিতে, তবে অনেক বছর আগেই তারা কলকাতাতে স্থায়ী হন। তার বাবা সুখদেব মহারাজ একজন বৈষ্ণবী ব্রাহ্মণ ও সংস্কৃত ভাষার পণ্ডিত ছিলেন, তবে কত্থক নাচ শিখিয়ে ও পরিবেশন করেই তিনি জীবিকা নির্বাহ করতেন। তার মা মৎস্যকুমারীর পরিবারও স্থানীয় শিল্পগোষ্ঠীর সদস্য ছিলেন, যারা নেপালের রাজপরিবারের তাদের যোগসূত্র আছে বলে দাবি করতেন। সুখরাজ মহারাজ নেপালের রাজসভায় চাকরি করাবস্থায় ক্লাসিক্যাল ড্যান্সের প্রতি আগ্রহী হন।
সিতারা দেবী পিতার নিকট কত্থক নাচের তালিম নেন শৈশব কৈশোর কাল থেকেই। একটা সময় তার নাচের প্রশংসা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে সিতারা দেবী ভরতনাট্যম ও নাট্যশাস্ত্র নিয়ে অত্যন্ত গভীর দক্ষতার সাথে নিরলসভাবে নিবিড় চর্চা ও অধ্যয়ন সম্পন্ন করেন। কত্থক নাচ অনুশীলন করে তিনি নাচ পরিবেশনাতেও অত্যন্ত দক্ষ হয়ে ওঠেন।
পরবর্তীতে সিতারা দেবী কত্থক নাচ পরিবেশনই তার নেশা ও পেশাতে পরিণত হয় এবং সেই ধারাবাহিকতায় শিল্পী পরিবার থেকে উঠে আসেন। নাচের প্রতি তার এই তীব্র আবেগ তিনি তার তিন কন্যা- অলকানন্দ, তারা, ধন্য ও দুই পুত্র- চাউবি ও পাণ্ডের মাঝে ছড়িয়ে দেন।
সিতারা দেবী ০৯ নভেম্বর ১৯২০ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং ২৫ নভেম্বর ২০১৪ সালে মৃত্যুবরণ করেন। উল্লেখ্য যে ১৯৩৬ সালে শান্তিনিকেতনে তাঁর নৃত্য পরিবেশন দেখে অভিভূত কবি, মাত্র ১৬ বছরের সিতারা কে “নৃত্য সম্রাজ্ঞী” বলে অভিহিত করেন।
আজ তাঁর জন্মদিনে জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা।
নওগাঁ #