দৈনিক তালাশ.কমঃ স্টাফ রিপোর্টার: আমরা খুব অসহায় অবস্থায় আছি। আমার বাবাকে আমি মাটি দিতে পারিনি। আমি তার বড় ছেলে। কি দোষ ছিলো আমার বাবার, কি দোষ ছিলো আমাদের। ওরা আমার বাবাকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে।আমাকে এবং আমার মেজো ভাইকে কুপিয়েছে। আমরা দীর্ঘদিন আইসিউতে ছিলাম। আমারা নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কাছে আমাদের পিতা হত্যার বিচার চাই।”
বৃহস্পতিবার দুপুরে এভাবেই কাঁদতে কাঁদতে জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষন করে সাংবাদিকদের কাছে পিতার হত্যাকারীদের গ্রেফাতার ও বিচার চেয়েছেন নিহত কাশিপুর আওয়ামী লীগ নেতা সুরুজ মাদবরের বড় ছেলে রাজু আহমেদ। এসময় তার মেঝো ভাই জনি আহমেদ ও তাদের মা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় কান্নাজড়িত কন্ঠে রাজু আহমেদ বলেন, আমার বাবা কি এমন অপরাধ করেছিল তাকে সন্ত্রাসী হীরা, সালু নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করলো। আমাকে এবং আমার ভাইকেও তার যেভাবে কুপিয়েছে আমরা দীর্ঘদিন আইসিউতে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে বেঁচে ফিরেছি। আমার বাবার হত্যাকারী হীরা সহ বেশ কয়েকজন আটক করা হলেও এখনো সালু ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে। গত ৫ আগস্ট ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সালু ও তার সহযোগী পাগলা সোহেল এবং লম্বা বাবু এলাকায় ফিরে এসে আমাদের গ্যারেজ ও মার্কেটে হামলা করে লুটপাট চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। তারা আমাদের হুমকি দিয়েছে এলাকা থেকে চলে যেতে না হলে আমার বাবার মতো আমাদেরকেও মেরে ফেলবে। এই এলাকায় আমাদের পৈত্রিক বসবাস। আমরা এখানে ব্যবসা করে খাই। যদি ব্যবসা করতে না পারি তাহলে আমাদের পরিবার সন্তান নিয়ে কিভাবে বাঁচবো। তারা নিজেদেরকে বিএনপির নেতা দাবী করে। কিন্তু আমরা জানি বিএনপির নেতা তাদের প্রশ্রয় দেয়না। তারা এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ি।
এসময় রাজু আহমেদ নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি জানি বর্তমানে গিয়াসউদ্দিন সাহেব নারায়ণগঞ্জ বিএনপির দায়িত্বে আছেন। তিনি একজন ভালো মানুষ। আমরা সন্ত্রাসী সালু, পাগলা সোহেল ও বাবুর বিরুদ্ধে তার দৃষ্টি আকর্ষন করছি। তারা বিএনপির নাম বিক্রী করে এলাকায় আবারো প্রভাব বিস্তার করে অপরাধমূলক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। কাশিপুর বাসী জানে সালু বাহিনীর কোন দল নেই, তারা নিজেদের অবৈধ কর্মকান্ড চালাতে যখন যে দল থাকে সেই দলের নাম বিক্রী করে। আমি গিয়াসউদ্দিন সাহেবের কাছে সালু বাহিনীর বিষয়ে খোঁজ নিন, তারা বিএনপির নাম বিক্রী করে আমাদের এলাকা থেকে বিতারিত করার হুমকী দিচ্ছে। আমাদের একটা ব্যাবস্থা করে দিন, আমারা অসহায়ভাবে দিন যাপন করছি।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের নিকট বর্তমানে যে যৌথ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে সেই অভিযানে অবিলম্বে সালু ও তার বাহিনীকে গ্রেফতারের জোড় দাবী জানান নিহত আওয়ামী লীগ নেতা সুরুজ মাদবরের দুই ছেলে।
প্রসঙ্গত, শুধুমাত্র ইট-বালু ব্যবসা ও একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারের রাজনীতির কারনে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে আওয়ামীলীগ নেতা সুরুজ মাদবরকে। তার হত্যাকান্ডের ঘটনাটি সিসি ক্যামেরার ভিডিও চিত্র দেখে শিউরে উঠে সকলেই। এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় মুল আসামী হীরা,আল আমিন,রাসেল,সানি,বাপ্পি ও জামালসহ ১৩জনকে গ্রেফতার করা হলেও অধরা থেকে যায় সালু, পাগলা সোহেল ও লম্বা বাবু সহ আরো কয়েকজন সন্ত্রাসী। বর্তমানে সরকার পতনের পর আবারো তারা এলকায় ফিরে দ্বিগুন হারে ত্রাসের রাজত্য কায়েম করতে শুরু করছে। তাই অবিলম্বে যৌথ বাহিনীর সাড়াশী অভিযানে দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী সালু বাহিনীর গ্রেফতার চায় কাশিপুর বাসী।