ডিস ব্যবসায়ী সোহেল হত্যা মামলার সাজা প্রাপ্ত আসামি র‍্যাব-১১ ও র‍্যাব-৭ এর যৌথ অভিযানে গ্রেফতার

দৈনিক তালাশ.কমঃ র‌্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধের উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতার, আইন-শৃঙ্খলার সামগ্রিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিভিন্ন অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য র‌্যাব ফোর্সেস নিয়মিত ভাবে অভিযান পরিচালনা করে থাকে। জঙ্গি, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, ডাকাত, হত্যাকারী, বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর মামলার আসামী সহ বিভিন্ন অপরাধীকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে র‌্যাব-১১, সিপিসি-৩ নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে।

এরই ধারাবাহিকতায়, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ইং তারিখ বিকেলে র‌্যাব-১১ ও র‍্যাব-৭ এর একটি যৌথ আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম হতে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী মো: জাবেদ হোসেন(২৮), পিতা: আনোয়ার, জেলা: মুন্সিগঞ্জ কে গ্রেফতার করে।

ভিকটিম সোহেল প্রধান (২৬) মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানাধীন টেংগারচর গ্রামের অসুস্থ পিতা নাছির উদ্দিন প্রধানের বড় ছেলে। গ্রাম্য দলাদলির রেশ ধরে পূর্ব শত্রুতার কারণে আসামিরা প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য পূর্ব পরিকল্পিতভাবে সোহেলকে খুন করার উদ্দেশে ঢাকার মিরপুর ১ নম্বর গোল চত্বর থেকে ২০১৭ সালের ৫ মে রাত ৯টার দিকে তাকে অপহরণ করেন। এসময় তারা সোহেলকে গামছা দিয়ে মুখ বেঁধে ১টি সাদা গাড়িতে করে টেংগারচর গ্রামের আসামি কামাল মোল্লার বাড়ির সামনে নিয়ে যান। এরপর তাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে পাশের ভুট্টা ক্ষেতের ভেতরে নিয়ে লোহার হাতুড়ি, লোহার চোকা রড ও লোহার পাইপসহ নানান অস্ত্রের মাধ্যমে উপর্যুপরি আঘাত করেন। সোহেল মারা গেছেন ভেবে টেংগারচর থেকে আসামিরা তাকে সিএনজিতে করে মেঘনা নদীতে ফেলে দেওয়ার উদ্দেশে নিয়ে যায়। এসময় পথিমধ্যে টহল পুলিশের গাড়ির আওয়াজ পেয়ে আসামিরা তড়িঘড়ি করে গুরুতর আহত সোহেলকে জামালদি ব্র্যাক অফিসের পাশে ফেলে দ্রুত পালিয়ে যান। পরে টহলরত পুলিশ আহত সোহেলকে উদ্ধার করে গজারিয়া (ভবেরচর) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানকার ডাক্তারের নির্দেশমতে সোহেলের উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ঢামেকের কর্তব্যরত ডাক্তার সোহেলকে পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। জানা গেছে, ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার পথে সোহেল তার ভাইসহ আত্মীয়স্বজনদের আসামিদের নাম ও ঘটনা বলে যান। এ ঘটনায় সোহেলের মা সুফিয়া বেগম বাদী হয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গজারিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। তাদের মধ্যে তিনজন আসামি আদালতে স্বেচ্ছায় দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। আদালত সাক্ষ্যগ্রহন শেষে ৩৬৪/৩০২/৩৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে আসামী জাবেদ (২৮)কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করে। র‍্যাব-১১ সিপিসি-৩ নোয়াখালী ক্যাম্প আসামীকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারি এবং ছায়াতদন্ত অব্যাহত রাখে। নজরদারীর এক পর্যায়ে *র‍্যাব-১১ সিপিসি-৩ নোয়াখালী ও র‌্যাব-৭, সিপিএসসির যৌথ আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ২৫ এপ্রিল ২০২৪ খ্রিঃ তারিখ রাতে ২১:০৫ ঘটিকার সময় চট্টগ্রাম মহানগরীর বাকলিয়া থানাধীন নতুন ব্রিজ বাস্তুহারা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী মো: জাবেদ হোসেন(২৮) কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।* পরবর্তীতে আটককৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, সে বর্ণিত হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজা ওয়ারেন্ট ভুক্ত পলাতক আসামী এবং ওয়ারেন্ট জারি হওয়ার পর হতেই আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট থেকে গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপন করে ছিল। আসামীকে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *