দৈনিক তালাশ.কমঃ সোনারগাঁ পৌরসভার দরপদ ঠোটা লিয়া এলাকায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে একই পরিবারের ৬ জনকে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় সন্ত্রাসী শামীম, হাসকিল, জোবায়ের, জাহাঙ্গীর ও মাসুদ গং’দের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী রমজান আলী বাদী হয়ে সোনারগাঁ মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং- ২৩(৪)২৪।
মামলার আসামীরা হলেন, ১। শামিম (৫০), পিতা- মৃতঃ রমিজ উদ্দিন মুন্সি, ২। মোঃ হাসকিল (২৭), ৩। মোঃ জুবায়ের (২০), উভয় পিতা-মোঃ শামিম, ৪। মোঃ জাহাঙ্গীর (৩০), পিতা-মৃতঃ রমিজ উদ্দিন মুন্সি, ৫। মোঃ মাসুদ (৩৫), পিতা-অজ্ঞাত, ৬। মোঃ ছানু (৪৫), পিতা- মৃতা রমিজ উদ্দিন মুন্সি, ‘৭। ভান্ডার (৩৫), পিতা-মৃতঃ দারোগ আলী, ৮। মোঃ ইকবাল (৩০), পিতা-অজ্ঞাত, ৯। মোসাঃ রোশনা বেগম (৩৫) সহ অজ্ঞাত আরো ৫/৬ জন।
এ ঘটনায় নাম উল্লেখ্য ৯ জন আসামীর ৪ জন আসামী উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিলেও বাকী ৫ জন আসামী শামীম, হাসকিল, জোবায়ের, জাহাঙ্গীর ও মাসুদ এখনো পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানা যায়।
মামলা ও স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ পৌরসভার দরপদ ঠোটালিয়া এলাকায় মোঃ রমজান আলীর বাড়িতে গত ১৬/০৪/২০২৪ তারিখ বেলা আনুমানিক ২ ঘটিকার দিকে একই এলাকার সন্ত্রাসী শামীম, হাসকিল, মোঃ জোবায়ের, জাহাঙ্গীর ও মাসুদ এর নেতৃত্বে অজ্ঞাতনামা আরো ৫/৬ জন দূর্বৃত্তরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তাদের হাতে থাকা ধারালো চাপাতি, রামদা, চাইনিজ কুড়াল, শাবল, লাঠিসোঠা ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বসত বাড়ীর সীমানায় অনধিকার প্রবেশ করে রমজান আলীর মেয়ে মোসাঃ তিপ্তি, রমজান আলীর ছোট ভাই হান্নান, ভাই এর স্ত্রী রহিমা, রমজান আলীর মা মোসাঃ ফিরোজা বেগম, ভাতিজী মোসাঃ ইতি ও তার ছেলে মোঃ আয়নালদের এলোপাতারী কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এসময় তাদের হাতে, পায়ে, পিঠে, মাথায় ও মুখমন্ডল সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফুলা ও রক্তাক্ত জখম করে।
পরে ১নং বিবাদী শামীম তার হাতে থাকা চাপাতি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে রমজান আলীর ভাতিজা হানিফ কে কোপ মারলে তার মাথায় কাটা রক্তাক্ত জখম হয়। ৭নং বিবাদী ভান্ডার ও ৮ নং বিবাদী ইকবাল রমজান আলীর ভাই মোঃ হান্নানের স্ত্রীর পরিহিত জামা কাপড় টানা হেচড়া করে শ্লীলতাহানি করে। ২নং বিবাদী হাসকিল তার হাতে থাকা রামদা দিয়ে কোপ মেরে মোঃ হান্নান এর স্ত্রী মোসাঃ রহিমা বেগম (৪০) এর মাথার ডান পাশে কাটা রক্তাক্ত জখম করে। ৬ নং বিবাদী ছানু রমজান আলীর মেয়ে তিপ্তির গলায় ব্যবহৃত ৮ আনা ওজনের একটি স্বর্ণের চেইন নিয়ে যায়। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৪৫ হাজার টাকা। ৩নং বিবাদী জুবায়ের তার হাতে ছেন দিয়ে কোপ মেরে তৃপ্তির মাথায় কাটা রক্তাক্ত জখম করে, ৪নং বিবাদী জাহাঙ্গীর তার হাতে থাকা চাপাতি দিয়ে রহিমা বেগমের মাথার বাম পাশে কাটা রক্তাক্ত জখম করে। ৫নং বিবাদী মাসুদ তার হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে আঘাত করে রমজান আলীর বোন মোসাঃ সুফিয়া বেগম এর বাম হাত ভাঙ্গাসহ গুরুতর জখম করে। এসময় ১, ২ ও ৩ নং বিবাদী রমজান আলীর ছোট ভাইয়ের ঘরের শোকেসের ভিতর হইতে নগদ ২ লক্ষ টাকা নিয়ে যায়। এমতাবস্থায় ভুক্তভোগীদের ডাক চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে বিবাদীরা তাদের প্রাননাশের হুমকী প্রদান করে চলে যায়।
পরে স্থানীয় লোকজন আহতদেরকে উদ্ধার করে দ্রুত সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য রমজান আলীর বোন সুফিয়া, মেয়ে তৃপ্তি, ভাতিজা হানিফ ও ভাইয়ের স্ত্রীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
এ ঘটনায় স্থানীয় এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যারা অসহায় এ পরিবারের সদস্যদের হত্যার চেষ্টা করছে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়া উচিত। তারা প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তার সু-দৃষ্টি কামনা করে দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।