না.গঞ্জে ত্বকী হত্যা মামলায় তদন্তের দাবি: শামীম ওসমানের

দৈনিক তালাশ.কমঃ নারায়ণগঞ্জের মেধাবী কিশোর তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যাকাণ্ডে ওসমান পরিবারের কোন সদস্যের সম্পৃক্ততা নেই দাবি করে এই মামলার বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান। যদিও, এই হত্যাকাণ্ডের সাথে শামীম ওসমান, তার ছেলে অয়ন ওসমান ও ভাতিজা আজমেরী ওসমানের সম্পৃক্ততার অভিযোগ নিহতের পরিবারের।

২০১৩ সালের ৬ মার্চ বিকেলে শহরের শায়েস্তা খাঁ সড়কের বাসা থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয় মেধাবী কিশোর তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। ৮ মার্চ সকালে শহরের পাঁচ নম্বর ঘাট এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীর শাখা খাল (কুমুদিনী খাল) থেকে তার মরদেহ উদ্ধার হয়। শুরুতে এই হত্যা মামলা নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা তদন্ত করলেও উচ্চ আদালতের নির্দেশে তদন্তের দায়িত্ব পায় র‌্যাব-১১। তবে দীর্ঘ ১১ বছরেও তদন্ত শেষ করে অভিযোগপত্র দাখিল করতে পারেনি র‌্যাব।

ত্বকী হত্যা মামলা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেন, ত্বকী হত্যাকান্ডের সাথে তিনি কিংবা তার পরিবারের কোন সদস্য সম্পৃক্ত নন। রাজনৈতিকভাবে তার পরিবারকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য এই হত্যাকান্ডের সাথে তাদের নাম যুক্ত করা হয়েছে। তিনি এই হত্যা মামলাটির বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি জানান।

সংসদ সদস্য বলেন, ব্যক্তিগতভাবে একজন পিতা হিসেবে এই ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি জানাই। যেভাবে তার (ত্বকী) পরিবার সন্তুষ্ট হয় সেইভাবেই তদন্ত হোক। যদি সরকার বিচারবিভাগীয় তদন্তের ব্যবস্থা করে এবং আমি সেই তদন্ত কার্যক্রমকে প্রভাবিত করবো বলে সন্দেহ করা হয়, তাহলে প্রয়োজনে তদন্ত চলাকালীন আমার সংসদ সদস্য পদও স্থগিত রাখা হোক।

তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জের (আলোচিত) সাত খুন মামলার মতো ত্বকী হত্যাকান্ডটিকেও রাজনীতিকরণ করা হয়েছে। ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হলো- ত্বকী হত্যাকান্ডের তদন্ত এই মেজর আরিফরাই (সাতখুন মামলায় দন্ডিত র‌্যাবের সাবেক কর্মকর্তা) করেছিল, যে মেজর আরিফরা অর্থের বিনিময়ে একজন মানুষকে মারতে গিয়ে বিনা অপরাধে সাতজন মানুষকে মেরে ফেলেছিল। যারা এই ধরনের মেন্টালিটি রাখে তাদের তদন্ত কতটুকু সত্য সেটাও দেখার বিষয়। তাছাড়া ওনারা খসড়া চার্জশিটের কথা বলেন, কিন্তু আইনে খসড়া চার্জশিট বলতে কিছু নাই। যদিও ওই খসড়া চার্জশিটেও এই ঘটনার সাথে আমাদের সম্পৃক্ততা আছে বলে প্রমাণিত হয় না।

ওনারা (ত্বকীর পরিবার) কিন্তু এজাহারে আমাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করেন নাই। পরে তারা একটি অবগতিপত্র দেন। আমি একজন আইনের ছাত্র হিসেবে বলছি, আইনের ধারায় অবগতিপত্র বলতে কোন পত্র নাই। ওই অবগতিপত্রে উনি (বাদী) লিখেছেন, শামীম ওসমানের উপস্থিতিতে আমার ছেলে এবং অন্যরা এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত। কিন্তু আমি পরবর্তীতে প্রেস কনফারেন্স করে পাসপোর্ট দেখিয়ে জানাই যে, আমি তখন দুবাইতে আর আমার ছেলে দিল্লিতে ছিল। তখন আমার ভাইয়ের ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেন। আমার ভাতিজার অফিসে র‌্যাব অভিযান চালিয়ে লাঠি ও রক্তমাখা প্যান্ট উদ্ধার করা হয়। তখন ওই রক্তমাখা প্যান্ট ত্বকীর বলে দাবি করা হয়। কিন্তু ত্বকীর লাশ যখন উদ্ধার হয় তখন তার পরনে প্যান্ট, শার্ট এবং পকেটে টেলিফোন ছিল।শামীম ওসমান বলেন, আমরা আমাদের মতো করে জানার চেষ্টা করেছি, বিভিন্ন সংস্থাও করেছে। এইটা সত্যও হতে পারে আবার নাও হতে পারে। কিন্তু সেখানে একটি মেয়ে এবং একটি ছেলে ছিল। একটি বেসরকারি টেলিভিশনে এই ব্যাপারটি দুইজনের সাক্ষ্যসহ প্রচারিতও হয়েছিল। উনি (ত্বকীর পিতা) রাজনৈতিকভাবে কোনভাবে মিসগাইডেড হয়েছেন বলে আমি বিশ্বাস করি। সাতখুন মামলাকেও এভাবে রাজনীতিকরণ করা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে প্রকৃত সত্য প্রকাশিত হয়েছিল। সত্য একদিন না একদিন প্রকাশ হবেই। একটা বাচ্চা ছেলে মারা গেছে সেই ঘটনার বিচার হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *