দৈনিক তালাশ.কমঃউজ্জ্বল কুমার সরকার নওগাঁঃদ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একজন প্রার্থীর মৃত্যুতে স্থগিত হওয়া নওগাঁ-২ (পত্নীতলা-ধামইরহাট) আসনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিরতিহীনভাবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত এ ভোটগ্রহণ চলবে।
এর আগে ৮ জানুয়ারি এ আসনের নির্বাচনি তফসিল ঘোষণা করেছে ইসি। সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৯টি আসনের ভোটগ্রহণ করা হয় ৭ জানুয়ারি।একজন প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে নওগাঁ-২ আসনের ভোটগ্রহণ আগেই বাতিল করা হয়েছিল।
প্রতিটি ভোটার ভোট কেন্দ্রে গিয়ে তাদের নিজ নিজ পছন্দের প্রার্থীর প্রতীকে ভোট প্রদান করছেন। অনেক দিন পর ভোট পেয়ে ভোটাররা উৎসবমুখর ও আনন্দে ভোট প্রদান করছেন। ভোটের পরিবেশ সুন্দর রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের টহল চোখে পড়ার মতো। অপরদিকে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ শেষ করতে গ্রহণ করা হয়েছে ৪ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
এদিন সকালে পত্নীতলা উপজেলার ৫৬ নম্বর পুইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটাররা তাদের ভোট প্রদান করেন। সবার আগে ভোট দিয়ে শহিদুল আলম বেন্টু বলেন, খুব ভালো লাগছে। পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পেরেছি।তার মতো ৮০ বছরের ছলিম উদ্দীন ভোট দিতে এসে বলেন, ভোট দিতে আসতে পেরে খুব ভালো লাগছে। কারণ জাতীয় ভোট ৫ বছর পর আসে। তাই ভোট দেওয়া মিস করবো না। কারণ আগামীতে ভোট দেওয়ার সৌভাগ্য নাও হতে পারে।এই কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসার মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এই কেন্দ্রে মোট ভোটার দুই হাজার ৮৮০ জন। আমরা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি শেষ করে ভোটগ্রহণ শুরু করেছি। আশা রাখি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সহযোগিতায় আমরা সুষ্ঠু, সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশের মধ্যদিয়ে ভোটগ্রহণ শেষে ফলাফল প্রদান করতে পারবো।জেলার পত্নীতলা ও ধামইরহাট উপজেলাকে নিয়ে নওগাঁ-২ আসন। আসনে মোট ১৯টি ইউনিয়ন এবং দুটি পৌরসভা রয়েছে। এতে ভোটার সংখ্যা তিন লাখ ৫৩ হাজার ১৩২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৭৭ হাজার ৫৭২ জন, মহিলা ভোটার এক লাখ ৭৮ হাজার ৫৫৯ জন এবং হিজড়া ভোটার একজন।
নওগাঁ জেলা পুলিশের মিডিয়া মুখপাত্র গাজিউর রহমান পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত জানান, নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৬ জন ও সাধারণ কেন্দ্রে ১৫ জন করে পুলিশ ও আনসার সদস্য রয়েছে। এছাড়াও গড়ে প্রতি চারটি কেন্দ্রের জন্যএকটি করে পুলিশের মোবাইল টিম রয়েছে। রয়েছে স্ট্রাইকিং টিম ও রিজার্ভ টিম। পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে সকল সিনিয়র অফিসারও রয়েছেন নির্বাচনি দায়িত্বে। এর বাইরেও রয়েছে সাদা পোশাকের পুলিশ। র্যাব, বিজিবি, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটগণ রয়েছেন নির্বাচনি দায়িত্বে। এক কথায় পুরো এলাকাকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে যাতে ভোটাররা নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে এসে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট প্রদান করে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যেতে পারেন। কেউ ন্যূনতম কোনো প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এবার নওগাঁ-২ (পত্নীতলা-ধামইরহাট) আসনে ভোটযুদ্ধে লড়ছেন চারজন প্রার্থী। ভোটের মাঠে নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী সাবেক এমপি শহীদুজ্জামান সরকার বাবলু। তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন ট্রাক প্রতীকের আখতারুল আলম, ঈগল প্রতীকের মেহেদী মাহমুদ রেজা ও লাঙ্গল প্রতীকের তোফাজ্জল হোসেন। স্থানীয়রা বলছেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চারজনথাকলেও মূল লড়াই হবে নৌকার প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ট্রাক প্রতীকের প্রার্থীর মধ্যে।