দৈনিক তালাশ.কমঃদৌলতপুর প্রতিনিধিঃ আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর ১ আসন। আগামী ৭ ই জানুয়ারী ২০২৪ জাতীয় সংসদের দ্বাদশ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদীয় আসন ৭৫ কুষ্টিয়া-১ দৌলতপুর আসনে মোট প্রার্থীর সংখ্যা ৭ জন, এর ভিতর ৪ জন দলীয় প্রার্থী এবং সতন্ত্র প্রার্থী ৩ জন। নির্বাচন কে ঘিরে প্রতিদিনই কোন না কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়ে আলোচনায় আসছে সতন্ত্র প্রার্থীরা। অভিযোগ উঠেছে সতন্ত্র প্রার্থীরা অস্ত্র সহ নির্বাচনী প্রচারে যাচ্ছে এবং অনেক সময় প্রতিপক্ষকে অস্ত্রের মুখে হুমকি ধামকি দিচ্ছে। দৌলতপুর পুলিশ প্রশাসন সব জনেও নিরব ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। কুষ্টিয়া-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী নাজমুল হুদা পটল বিশ্বাস কে শর্টগান ও পিস্তল তাক করে হত্যার হুমকি দিয়েছেন টোকন চৌধুরী এমন অভিযোগের কারণে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটি। অভিযুক্ত বুলবুল আহমেদ টোকন চৌধুরী অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক এমপি রেজাউল হক চৌধুরীর ছোট ভাই। তাকে আগামী ১লা জানুয়ারি স্ব-শরীরে উপস্থিত হয়ে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালত পুলিশের পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম জানান, কুষ্টিয়া-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী নাজমুল হুদা শুক্রবার অভিযোগটি করেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক এমপি রেজাউল হক চৌধুরীর ভাই বুলবুল আহমেদ টোকন চৌধুরী লোকজনসহ গত ২৭ ডিসেম্বর দৌলতপুরের তারাগুনিয়া মোড়ে নাজমুল হুদা পটল বিশ্বাস কে দাড় করিয়ে অস্ত্রের হুমকি ও মহড়া দেন। শর্টগান ও পিস্তল তাক করে তাকে হত্যার হুমকি দেন। এ অভিযোগ গ্রহণ করেছেন কুষ্টিয়া-১ আসনের নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটি প্রধান যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতের বিচারক আসাফ উদ দৌলা। শুক্রবার বিকেলে তিনি এ ঘটনা আরপিও এর ৭৩(২বি) ধারায় আচরণবিধি লঙ্ঘন হিসেবে টোকন চৌধুরীকে আগামী ১লা জানুয়ারি সশরীরে উপস্থিত হয়ে লিখিত জবাব দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে টোকন চৌধুরী বলেন, নোটিশ এখনো পাইনি। সেদিনের ঘটনা সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরা দৌলতপুরের দিকে যাচ্ছিলাম নির্বাচনী প্রচারে। নাজমুল হুদা (পটল) এর মোটরসাইকেল বহর আমাদের সাইড না দিয়ে পথ আটকে রেখেছিল। অস্ত্র প্রশর্দন বা হুমকি দেওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। তারা মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে প্রশাসন তদন্তও করেছেন। তারা এমন কিছু পায়নি বলে দাবি করেন তিনি। নোটিশ পেলে জবাব দেব- বলেন টোকন চৌধুরী। এদিকে স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করেন নির্বাচনের সময় লাইসেন্স কৃত অস্ত্র থানায় জমা থাকার কথা থাকলেও রহস্যজনক কারণে টোকেন চৌধুরীর অস্ত্র জমা না নেওয়াই জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। দৌলতপুরের সাধারণ মানুষ আতংকিত হয়ে আছে যে কোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটতে পারে। এ বিষয়ে আরও জানা যায় বুলবুল আহমেদ টোকেন চৌধুরী নির্বাচনে ১০ টা মাইক্রো নিয়ে চিহ্নিত ক্রসফায়ারের আসামি ১.আইনুর ২. সম্রাট ৩. গোকুল ৪. ঢাকা থেকে আগত পিচ্চি হান্নান এর সেকেন্ড ইন কমান্ড কিলার বাদশা সহ একাধিক সন্ত্রাসীদের নিয়ে বৈধ-অবৈধ অস্ত্র সহ দৌলতপুর উপজেলার সর্বত্র দাপিয়ে বেড়াচ্ছে টোকেন চৌধুরী। তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে রফিকুল ইসলাম ভেড়ামারা থানায় থাকাতে টোকেন চৌধুরীর সাথে সখ্যতা গড়ে উঠার সুবাদে টোকেন চৌধুরীর সহায়তায় নির্বাচনের সামনে দৌলতপুর থানায় বদলি হয় এবং টাকার বিনিময়ে এই নির্বাচনে রেজাউল হক চৌধুরী কে জেতানোর মিশনে নেমেছে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্ত্তা রফিকুল ইসলাম। জানা যায় টোকেন চৌধুরী প্রকাশ্যে নির্বাচন বিরোধী কর্মকান্ড করে বেরালেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে পরিবার সহ টোকেন চৌধুরীর বাড়িতে একাধিক বার দাওয়াত খেতে দেখা গেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এলাকা বাসিরা আরও জানান রফিকুল ইসলাম দৌলতপুর থানায় যোগ দেওয়ার ৬ মাস পার হয়ে গেছে। নির্বাচন কমিশন এর নিয়মে বদলি হওয়ার কথা থাকলেও রহস্যময় কারণে সে দৌলতপুরে বহাল তবিয়তে আছে, সে দৌলতপুর থানায় যোগ দেওয়ার পর থেকেই অপরাধ বেড়ে গেছে মাদকের স্বর্গরাজ্যে পরিনত হয়েছে দৌলতপুর উপজেলা। এ বিষয়ে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন নির্বাচনে সহিংসতার অভিযোগ না পাওয়া পর্যন্ত কিছু করার নেই। এ বিষয়ে কথা বলতে পুলিশ সুপার মহোদয় এর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিয়ে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। দৌলতপুর উপজেলার সাধারণ মানুষের দাবি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হলে দ্রæত দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম কে বদলী করতে হবে অন্যথায় দৌলতপুরে সুষ্ঠ স্বাভাবিক নির্বাচন সম্ভব না বলে এলাকাবাসী জানান।