অনলাইন ডেস্ক : গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় গাছতলা থেকে আম কুড়ানোর অপরাধে অনিক জয়ধর (১৭) নামে এক কলেজ ছাত্রকে মারধর করেছে এক স্কুল শিক্ষক ও তার ভাই। মারধরে আহত ওই ছাত্র স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা শেষে বর্তমানে নিজ বাড়িতে শয্যাশায়ী। গত রোববার দুপুরে উপজেলার রামশীল ইউনিয়নে রাজাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মারধরের শিকার অনিক জয়ধর রাজাপুর গ্রামের অমল জয়ধরের ছেলে ও রামশীল কলেজের একাদশ শ্রেণির মেধাবী ছাত্র। মেধাবী এই ছাত্রকে মারধরের কারণে এলাকার সাধারণ মানুষদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানাগেছে, ঘটনার দিন দুপুরে কলেজ বন্ধ থাকায় কলেজ ছাত্র অনিক জয়ধর মাঠ থেকে ক্রিকেট খেলে বাড়ি ফিরছিল। এ সময় পথের ধারে একটি আম গাছের নিচে কয়েকটি আম পড়ে থাকতে দেখে অনিক জয়ধর আমগুলো কুড়িয়ে বাড়ির দিকে রওনা দেয়। এ সময় ওই আম গাছের মালিক নৈয়ারবাড়ি উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক উত্তম অধিকারী (৪০) ও তার ভাই লক্ষ্মণ অধিকারী (৩৫) তাকে মারধর করে। মারধরের খবর পেয়ে অনিক জয়ধরের পরিবারের লোকজন উত্তম অধিকারী ও তার ভাই লক্ষ্মণ অধিকারীর কবল থেকে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় ত্রিমুখী বাজারের পল্লী চিকিৎসক মাখন জয়ধরের কাছে নিয়ে যায়। এখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে অনিক জয়ধরের পরিবারের লোকজন তাকে বাড়ি নিয়ে আসে।
অনিক জয়ধরের মা লক্ষ্মী জয়ধর বলেন, রাস্তার পাশের গাছতলা থেকে দুটি আম কুড়ানোর অপরাধে একজন শিক্ষক হয়ে উত্তম অধিকারী ও তার ভাই লক্ষ¥ অধিকারী আমার ছেলেকে বেদম মারধর করেছে। অর্থের অভাবে আমরা এখন আমার ছেলেকে চিকিৎসা করাতে পারছিনা। তাদের ভয়ে থানায়ও যেতে পারছিনা। আমরা থানায় গেলে তারা আমাদের মারবে বলে হুমকি দিয়েছে। আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ বিষয়ে জানার জন্য শিক্ষক উত্তম অধিকারী ও তার ভাই লক্ষ্মণ অধিকারীর বাড়িতে গিয়ে তাদের পাওয়া যায়নি। উত্তম অধিকারীর ০১৯১৭০৭৭৮৫১ নম্বরের মুঠো ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়।
ত্রিমুখী বাজারের পল্লী চিকিৎসক মাখন জয়ধর বলেন, অনিক জয়ধরের গলা, পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে আমি প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র নিয়ে যেতে বলেছি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য অবনী রায় বলেন, শিক্ষক উত্তম অধিকারী ও তার ভাই লক্ষ্মণ অধিকারী যে কাজটি করেছে তাহা কোন ভাবেই ঠিক হয়নি। এ ব্যাপারে আমরা সামাজিক পর্যায়ে বসে একটি মিমাংসার চেষ্টা করতেছি।
ভাঙ্গারহাট নৌ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত আমরা কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।